প্রতীকী ছবি।
স্বাস্থ্যে ‘আয়ুষ্মান ভারত’ বা কৃষকদের জন্য ‘পিএম কিসান সম্মান নিধি’র মতো কেন্দ্রীয় প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গ শরিক হবে কি না, তা নিয়ে টানাপড়েনে ছেদ পড়েনি। ব্যতিক্রম প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ) প্রকল্প। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের পরিসংখ্যান বলছে, সব রাজ্যকে হারিয়ে পশ্চিমবঙ্গই ‘ফার্স্ট বয়’।
এখন পর্যন্ত গ্রামাঞ্চলে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় দেশ জুড়ে তৈরি হয়েছে ৯০,৪৯,৫০৭টি বাড়ি। ১৩,৬৯,১০৬টি বাড়ি তৈরি করে পশ্চিমবঙ্গই প্রথম। সদ্য ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে যেখানে, সেই মধ্যপ্রদেশ দ্বিতীয়। তৃতীয় স্থানে যোগীর উত্তরপ্রদেশ। প্রথম দশেই নেই নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাত!
এক দিনেই অবশ্য প্রথম হয়নি পশ্চিমবঙ্গ। গ্রামাঞ্চলে ছাদ জোটানোর কাজে ধাপে ধাপে এগিয়েছে এই রাজ্য। গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী ২০১৭-১৮ সালে তৈরি হয়েছে ৪৪.৫৪ লক্ষ বাড়ি। সেখানেও প্রথম পাঁচে জায়গা করে নিয়েছিল বাংলা। ২,৮৭,৬০৫টি বাড়ি তৈরি করে উত্তরপ্রদেশ প্রথম। দ্বিতীয় মধ্যপ্রদেশ। ২,১৮,৯৪০টি বাড়ি তৈরি করে বাংলা তৃতীয় স্থানে। চতুর্থ আর পঞ্চম স্থানে ছিল যথাক্রমে ছত্তীসগঢ় আর ওড়িশা।
সকলের মাথায় ছাদ জোগানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। বেঁধে দিয়েছিলেন স্বপ্নপূরণের সময়সীমাও। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে গ্রামাঞ্চলে এক কোটি বাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তা পূরণ হয়নি। ৮০ লক্ষের কাছাকাছি আটকে যায় সংখ্যাটা। লোকসভা ভোটের আগে সেই ফিকে ছবি মোদীর মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল বলে জানান রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা। প্রকল্পের মন্থর গতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মোদী। মন্ত্রকের আমলারা ব্যর্থতার দায় চাপিয়ে দেন রাজ্যগুলির ঘাড়েই। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্যগুলি নিয়মিত প্রস্তাব পাঠায় না। তখনও সেই ফিকে ছবিতে মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়ের পাশাপাশি কিছুটা রং ঢেলেছিল অবিজেপি রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বাংলায় আবাসন প্রকল্পের সাফল্যের কারণ অনেকটাই রাজনৈতিক। রাস্তার মতো বাড়িও সব চেয়ে দৃশ্যমান উন্নয়ন। সেই উন্নয়নের শরিক হতে তাই পিছপা হয়নি রাজ্য। কারণ যা-ই হোক, দেশের গ্রামাঞ্চলে যত বাড়ি হয়েছে, তার ১৫% বাংলার দখলে। রাজ্যের মধ্যে প্রথম পাঁচ জেলা উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম আর পূর্ব বর্ধমান। ঘটনাচক্রে কাটমানি-কাণ্ডেও কিছু ক্ষেত্রে অভিযোগ উঠেছে, বাড়ি তৈরির টাকা থেকে ভাগ নিয়েছেন স্থানীয় কয়েক জন নেতা। আবার কোথাও কোথাও বাড়ি পাওয়ার তালিকায় নাম তোলার কথা বলে টাকা নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। অনেকের মতে, কাজ বেশি হয়েছে বলেই কিছু লোক তার সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করেছে।
ঠেকে শিখেছে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। চলতি অর্থবর্ষ (২০১৯-২০)-এ গ্রামে ৬০ লক্ষ বাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। ধার্য হয়েছে ৭৬,৫০০ কোটি টাকা। কেন্দ্রের ভাগে পড়ছে ৪৮,১৯৫ কোটি। রাজ্যগুলি দেবে ২৮,৩০৫ কোটি। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে ৬৫ লক্ষ এবং ২০২১-২২ সালে ৭০ লক্ষ বাড়ি তৈরির কথা জানিয়েছে মন্ত্রক। জানানো হয়েছে, বাড়ি-প্রতি দেড় লক্ষ টাকার বরাদ্দ বৃদ্ধির পরিকল্পনা নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy