Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কেন অঙ্গ প্রতিস্থাপনে পিছিয়ে বঙ্গ

স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস চারেক আগে মহানগরীতে প্রথম হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনের পরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনের পরিকল্পনা শুরু করেছিল স্বাস্থ্য দফতর।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৫০
Share: Save:

কেউ হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন করে মাইলফলক ছুঁতে চাইছে। কেউ বা ফুসফুস প্রতিস্থাপনের লাইসেন্স পেতে শুরু করেছে পরিকাঠামো তৈরির কাজ। অঙ্গ প্রতিস্থাপনের প্রতিযোগিতায় রান তুলতে মরিয়া বেসরকারি হাসপাতাল। কিন্তু কলকাতা এবং জেলার সরকারি হাসপাতালে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপনের পরিকাঠামোর কতখানি উন্নতি হচ্ছে, ব্রেন ডেথ নিয়ে সচেতনতার প্রচার ও প্রসার কেমন ইত্যাদি প্রশ্ন উঠছে স্বাস্থ্য-প্রশাসনের অন্দরেই।

স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস চারেক আগে মহানগরীতে প্রথম হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনের পরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনের পরিকল্পনা শুরু করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু চার মাস কেটে গেলেও কাজ কতটা হয়েছে, সেই প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর নেই স্বাস্থ্য দফতরে। নীলরতন সরকার হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে কিডনি প্রতিস্থাপনের পরিকল্পনা চালাচ্ছে সরকার। কিন্তু প্রয়োজনীয় নেফ্রোলজিস্ট এবং পরিকাঠামো না-থাকায় আটকে আছে পরিকল্পনা। এসএসকেএম হাসপাতাল ছাড়া কার্যত আর কোনও সরকারি হাসপাতালে অঙ্গ প্রতিস্থাপন হচ্ছে না। এসএসকেএমেও অবশ্য হৃৎপিণ্ড কিংবা ফুসফুস প্রতিস্থাপনের কোনও পরিকল্পনা নেই সরকারের।

স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের একাংশ জানান, জেলা স্তরের অধিকাংশ হাসপাতালে ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষণার কমিটি নেই। জেলার যে-সব হাসপাতালে আইটিইউ বা আইসিইউ রয়েছে, সেখানে কমিটি থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। কারণ, ব্রেন ডেথ ঘোষণা করতে হলে স্নায়ুচিকিৎসক, কিডনির চিকিৎসক-সহ বিভিন্ন বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জরুরি। কিন্তু জেলা স্তরের অধিকাংশ হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। তাই ব্রেন ডেথ কমিটি থাকলেও তার কার্যকারিতা নেই।

বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানান, রাজ্যে কিছু কিছু অঙ্গ প্রতিস্থাপিত হয়েছে ঠিকই। কিন্তু জেলার হাসপাতালে ব্রেন ডেথ ঘোষণার পরে অস্ত্রোপচারের নজির নেই। জেলা স্তরে তাই মস্তিষ্কের মৃত্যু নিয়ে সচেতনতা কতটা বাড়ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অঙ্গদান না-বাড়লে রাজ্য প্রতিস্থাপনে আদৌ স্বাবলম্বী হতে পারবে কি না, সেই বিষয়েও সংশয় থাকছে। কারণ, ভিন্‌ রাজ্য থেকে অঙ্গ আসার পরে অস্ত্রোপচার করার খরচ সামাল দেওয়া কঠিন।

স্বাস্থ্য দফতরে এই বিষয়ে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক তমাল ঘোষ বলেন, ‘‘সচেতনতা প্রসারের কাজ চলছে। রিজিওনাল অরগ্যান অ্যান্ড টিসু ট্রান্সপ্ল্যান্ট অথরিটি (রোটো)-র সঙ্গে যৌথ ভাবেই জেলা স্তর থেকে সব মহলে মস্তিষ্কের মৃত্যু বিষয়ে সচেতনতা-সতর্কতার প্রচার চালাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর।’’ রোটোর অধিকর্তা মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, অঙ্গ প্রতিস্থাপনের সতর্কতা-সচেতনতার বিষয়টি সময়সাপেক্ষ। এক দিনেই সব জায়গায় কাজ হয় না। ‘‘প্রথমে কলকাতা ও আশপাশের বিভিন্ন হাসপাতাল নিয়ে এই কাজ শুরু হয়েছে। সেগুলোর পরিকাঠামোগত উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এর পরে রাজ্যের সর্বত্র সতর্কতার কাজ শুরু হবে,’’ বলেন মণিময়বাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Transplant Body Parts West BEngal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE