সারা দেশের মধ্যে আন্তর্জাতিক পর্যটনে বিশেষ স্বীকৃতি আদায় করে নিল পশ্চিমবঙ্গ। ভারত সরকারের পর্যটন মন্ত্রক প্রকাশিত ‘ইন্ডিয়া ট্যুরিজ়ম ডাটা কমপেন্ডিয়াম ২০২৫’–এর তথ্য অনুযায়ী, বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণে দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বাংলা। এই রিপোর্টে স্পষ্ট হয়েছে যে গত কয়েক বছর ধরে রাজ্য সরকারের ধারাবাহিক উদ্যোগেই পশ্চিমবঙ্গ আন্তর্জাতিক পর্যটনের অন্যতম বড় কেন্দ্র হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
রাজ্যের পর্যটন দফতরের আধিকারিকদের মতে, উৎসব পর্যটন, ধর্মীয় পর্যটন এবং ‘মিটিং ইনসেন্টিভস, কনফারেন্স অ্যান্ড এগ্জ়িবিশন’ (এমআইসিই) পর্যটনের প্রসার ঘটাতে গত কয়েক বছরে একাধিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল। পর্যটন দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “বিদেশি পর্যটকদের রাজ্যে আকৃষ্ট করতে আমাদের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। বিভিন্ন উৎসবের প্রচার, ঐতিহ্যবাহী স্থানের উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক মানের পরিষেবা চালু করায় সুফল মিলেছে। আগামী দিনে আমরা আরও নতুন আঙ্গিকে পর্যটন পরিষেবাকে গতি দিতে চাই।” প্রশাসনিক কর্তাদের মতে, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দৌড়ে পশ্চিমবঙ্গের উন্নতির অন্যতম বড় কারণ কলকাতার দুর্গাপুজোকে ঘিরে গড়ে ওঠা উৎসব পর্যটনের জোয়ার। ২০২২ সালে ইউনেস্কো ‘ইন্ট্যাঞ্জিবল কালচারাল হেরিটেজ’-এর স্বীকৃতি দেওয়ার পর দুর্গাপুজো দেখতে বিদেশি পর্যটকের আগমন লক্ষ্যণীয় হারে বেড়েছে। বিশেষ করে ২০২৩,২০২৪ ও ২০২৫ সালে কলকাতার বিভিন্ন প্যান্ডেলে বিদেশি নাগরিকদের ভিড় নতুন মাত্রা যোগ করেছে রাজ্যের পর্যটন সম্ভাবনায়।
এ ছাড়াও দার্জিলিং, সুন্দরবন, শান্তিনিকেতন, ডুয়ার্সের মতো জনপ্রিয় স্থানগুলির পরিকাঠামো উন্নয়ন, হোমস্টে সংস্কৃতির প্রসার এবং পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নতিতে বিদেশি পর্যটকদের অভিজ্ঞতা আরও সমৃদ্ধ হয়েছে। ফলস্বরূপ আন্তর্জাতিক পর্যটনের সূচকে বাংলা আজ শীর্ষ রাজ্যগুলির তালিকায়।
পর্যটন দফতর মনে করছে, এই স্বীকৃতি ভবিষ্যতে আরও বৃহত্তর বিদেশি বিনিয়োগে, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং বিশ্বমানের পর্যটন পরিষেবা তৈরির পথে রাজ্যকে সাহায্য করবে। সংস্থার বক্তব্য, “পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি, ইতিহাস, প্রকৃতি এবং উৎসব— সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যটনের শক্তিশালী ব্র্যান্ড হিসাবে বাংলা আরও বিকশিত হবে।”