ইচ্ছা ছিল, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করবেন। প্রশ্ন করবেন, ১০ বছর সসম্মানে চাকরি করার পর দ্বিতীয় বার কী ভাবে যোগ্যতার পরীক্ষা দেবেন? সেইমতো বৃহস্পতিবার সকাল সকাল মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাসভবন চত্বরে উপস্থিত হয়েছিলেন চাকরিহারা শিক্ষিকারা। তাঁদের পথ আটকাল পুলিশ। বৈধ অনুমতিপত্র না-থাকায় ছ’জন শিক্ষিকাকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হল কালীঘাট থানায়।
বৃহস্পতিবার সকালে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের’ ছ’জন শিক্ষিকা কালীঘাটে পৌঁছোন। তাঁদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী নেতাজি ইন্ডোরে বলেছিলেন প্রয়োজনে তাঁদের সঙ্গে দেখা করবেন। সেইমতো মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতেই কালীঘাটে তাঁর বাসভবনে গিয়েছিলেন শিক্ষিকারা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার অনুমতিপত্র না-থাকায় তাঁদেরকে আটকায় কালীঘাট থানার পুলিশ। পরে ছ’জন শিক্ষিকাকে আটক করে কালীঘাট থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। ছয় শিক্ষিকার নাম সঙ্গীতা সাহা, রূপা কর্মকার, স্মার্তি রায়, নুর আমিনা গুলশন, শিল্পী চক্রবর্তী এবং সাহানি নাজনিন। কেন এসেছেন? প্রশ্নের উত্তরে চাকরিহারা সঙ্গীতা বলেন, ‘‘আমরা কোনও আন্দোলন বা বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে আসিনি। আমরা জানতে এসেছিলাম, ১০ বছর সম্মানের সঙ্গে চাকরি করার পরেও পরীক্ষা দেওয়া কী ভাবে সম্ভব?’’ তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ হয়নি তাঁদের। বৃহস্পতিবার সকালে আটক হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরে তাঁদের সেখান থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে বেলা পর্যন্ত থানাতেই বসে রয়েছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা যাবেন না।
আরও পড়ুন:
মঙ্গলবার চাকরিহারাদের উদ্দেশে বার্তা দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘পরীক্ষা দেব না— এখনই বলা উচিত নয়। তা হলে চাকরিটাই থাকবে না। সরকারের দু’টি পথই কাজে লাগান। রিভিউ করে বিচার না-পেলে চাকরি ফিরে পাওয়ার সুযোগ থাকবে না। পরীক্ষায় বসুন। মর্যাদার সঙ্গে সসম্মানে ফিরে আসুন। সুযোগ আসবে, সদ্ব্যবহার করুন।’’ মমতা এ-ও বলেন, ‘‘রিভিউ পিটিশনের পথও খোলা থাকছে। সেই আবেদনের ফলাফল ইতিবাচক হলে তা-ই মানবে সরকার। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে পরীক্ষার প্রস্তুতি আর একটি রাস্তা। গরমের ছুটির পরে রিভিউ পিটিশন ফের সুপ্রিম কোর্টে উঠবে। আমরা চেষ্টা করব যাতে চাকরিরত শিক্ষকদের আর পরীক্ষায় বসতে না হয়।’’ মুখ্যমন্ত্রী এ ভাবে পরীক্ষায় বসার আবেদন করায় অসন্তুষ্ট চাকরিহারারা। তাঁদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী এর আগে নেতাজি ইন্ডোরে যে কথা বলেছিলেন, তার সঙ্গে মঙ্গলবার নবান্নে বলা তাঁর কথায় ফারাক রয়েছে। এর পরেই ফের প্রতিবাদ শুরু করেন চাকরিহারারা। বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে গিয়েও তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চান চাকরিহারাদের একাংশ।