Advertisement
E-Paper

যাত্রাভঙ্গে বচসা বাবুলে-পুলিশে

এ দিন দুপুর পৌনে ১২টা নাগাদ আসানসোলের কল্যাণপুরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে শ’দেড়েক দলীয় কর্মীকে নিয়ে পৌঁছন বাবুল। গেটেই এলাকাবাসীর একাংশ তাঁকে বাধা দেন। তাঁরা বলেন, ‘‘আপনি ভিতরে যাবেন না। এখানে পরিস্থিতি একেবারেই স্বাভাবিক।’’

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৮ ০৩:৪১
পুলিশের সঙ্গে বচসা বাবুল সুপ্রিয়ের। বৃহস্পতিবার আসানসোলের কল্যাণপুরে। দুর্গাপুরে বাধা পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। ছবি: বিকাশ মশান

পুলিশের সঙ্গে বচসা বাবুল সুপ্রিয়ের। বৃহস্পতিবার আসানসোলের কল্যাণপুরে। দুর্গাপুরে বাধা পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। ছবি: বিকাশ মশান

গোষ্ঠী সংঘর্ষে তেতে থাকা শহরে পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিতে জড়ালেন বিজেপি সাংসদ তথা মন্ত্রী। সে শহরেই যেতে বাধা পেয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হল একই দলের নেত্রীর।

বৃহস্পতিবার আসানসোলকে ঘিরে এই উত্তেজনার পরে সেই সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় প্রশ্ন তোলেন রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে। বিজেপির মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা ও মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি তুলেছেন। যদিও তৃণমূলের মহাসচিব তথা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘মন্ত্রী ও এক রাজনৈতিক দলের শাখা সংগঠনের প্রধান উত্তেজনা ছড়ানোর এবং শান্তি ব্যাহত করার চেষ্টা করেছেন। অশান্ত এলাকায় ভিড় বাড়ালেই কি শান্তি ফিরবে?’’

বাবুলের বিরুদ্ধে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা এবং কর্তব্যরত পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ হয়েছে আসানসোল উত্তর থানায়। বাবুলেরও দাবি, আসানসোল দক্ষিণ থানায় তিনি আইপিএস অফিসার রূপেশ কুমারের বিরুদ্ধে তাঁকে আক্রমণ করার পাল্টা অভিযোগ করেছেন। আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা বলেছেন, ‘‘সাংসদের অভিযোগ এখনও পাইনি। ওঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগে আইনানুগ ব্যবস্থা হবে।’’

এ দিন দুপুর পৌনে ১২টা নাগাদ আসানসোলের কল্যাণপুরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে শ’দেড়েক দলীয় কর্মীকে নিয়ে পৌঁছন বাবুল। গেটেই এলাকাবাসীর একাংশ তাঁকে বাধা দেন। তাঁরা বলেন, ‘‘আপনি ভিতরে যাবেন না। এখানে পরিস্থিতি একেবারেই স্বাভাবিক।’’ তখন রূপেশ কুমারের নেতৃত্বে কলকাতা পুলিশের বাহিনী সেখানে যায়। রূপেশ সাংসদকে এলাকা থেকে চলে যেতে অনুরোধ করেন। বাবুল তার পরে বুধবার রেলপাড়ের যে অংশে গোলমাল বেধেছিল, সেখানে যেতে চান। রূপেশ বলেন, ‘‘১৪৪ ধারা রয়েছে ওই এলাকায়। যাওয়া যাবে না।’’ এর পরে পুলিশের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বচসা হয় মন্ত্রীর। পুলিশের একাংশের অভিযোগ, রূপেশকে ধাক্কা মারেন বাবুল। এর পরেই কর্তব্যরত ‘র‌্যাফ’ ও পুলিশকর্মীরা বাবুলকে গাড়িতে তুলে দেন। বাবুলের বক্তব্য, ‘‘আমি এলাকার সাংসদ। বাসিন্দাদের কাছ থেকে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ পেয়ে যাচ্ছিলাম। পুলিশ আটকাল। পুলিশকে ধাক্কা দিইনি।’’

প্রহরা: আসানসোলের চাঁদমারি এলাকায় পুলিশের টহল। —নিজস্ব চিত্র।

দুর্গাপুরে লকেটের সঙ্গে গোলমাল বাধে পুলিশের। দুপুর ১টায় দুর্গাপুর থেকে ওই বিজেপি নেত্রী আসানসোলের দিকে যেতে গেলে তাঁর পথ আটকায় পুলিশ। লকেটকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আসানসোল কেন যেতে পারব না?’’ পুলিশের সঙ্গে ঘণ্টাখানেক কথা কাটাকাটি হয়। পরে অসুস্থ বোধ করায় কলকাতার দিকে গাড়ি ঘোরান লকেট। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রের কাছে রিপোর্ট পাঠাব। রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে। অবিলম্বে এখানে রাষ্ট্রপতির শাসন চাইব। মুখ্যমন্ত্রীরও পদত্যাগ করা উচিত।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘রাজ্য প্রশাসন যদি কাউকে কোথাও যেতে বাধা দেয় তা হলে বুঝতে হবে, কিছুর ঘাটতি রয়েছে।’’

আরও পড়ুন: স্বাভাবিক ব্যাঙ্ক ও রেল

সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মোট ৬০ জনকে ধরেছে। একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। আসানসোল রেলপাড় ছাড়া, ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে আসানসোল উত্তর ও দক্ষিণ, এবং রানিগঞ্জ থানা এলাকায়। রাজ্য পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘যেখানে ১৪৪ ধারা রয়েছে, সেখানে লোক জড়ো হতে দিচ্ছি না। পরিস্থিতি মাথায় রেখেই ওঁদের বাধা দেওয়া হয়েছে।’’ আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির বক্তব্য, ‘‘এখন রাজনীতি করার সময় নয়। বাবুল, লকেট সবার কাছেই অনুরোধ— আসানসোলকে শান্ত করুন।’’

আরও পড়ুন: নরম পুলিশ দেখেই গরম আসানসোল

Asansol Ranigunj Communal Unrest BJP TMC Locket Chatterjee Babul Supriyo আসানসোল রানিগঞ্জ লকেট চট্টোপাধ্যায় বাবুল সুপ্রিয় Video
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy