Advertisement
২৬ মে ২০২৪

আগাম টাকা দিলে তবেই বিদ্যুৎ সরকারি দফতরে

বিভিন্ন সরকারি দফতরে বিদ্যুতের বিল বাবদ কোটি কোটি টাকা বকেয়া রাখার অভ্যাস বন্ধ করতে চাইছে বিদ্যুৎ দফতর। তাই চালু হচ্ছে ফেলো কড়ি, মাখো তেল’ নীতি। অর্থাৎ বিদ্যুৎ পরিষেবা নিতে হবে আগেভাগে টাকা জমা দিয়েই।

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৩৮
Share: Save:

বিভিন্ন সরকারি দফতরে বিদ্যুতের বিল বাবদ কোটি কোটি টাকা বকেয়া রাখার অভ্যাস বন্ধ করতে চাইছে বিদ্যুৎ দফতর। তাই চালু হচ্ছে ফেলো কড়ি, মাখো তেল’ নীতি। অর্থাৎ বিদ্যুৎ পরিষেবা নিতে হবে আগেভাগে টাকা জমা দিয়েই।

বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে সংস্কারের পদক্ষেপ হিসেবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাকে ধাপে ধাপে সরকারি দফতর, পঞ্চায়েত ও পুরসভায় প্রিপেড মিটার লাগাতে বলা হয়েছে। যাতে বিদ্যুৎ বিলের টাকা আদায় নিশ্চিত করা যায়। যে-সব সরকারি অফিসে পাঁচ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়, আপাতত সেখানেই এই মিটার লাগানো হবে। ‘‘আপাতত কিছু সরকারি অফিসে প্রিপেড মিটার লাগানো হবে। নবান্নের শীর্ষ প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে,’’ বলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।

সরকারি দফতর বিল বাকি রাখায় ভুগতে হয় বণ্টন সংস্থাকে। এই মুহূর্তে সরকারি ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ বিল বাবদ বণ্টন সংস্থার প্রায় ৮০০ কোটি টাকা পাওনা। পোস্ট পেড মিটারের বদলে প্রিপেড মিটার লাগালে মোবাইলের মতো আগে টাকা জমা দিয়ে তবেই বিদ্যুৎ পরিষেবা নিতে হবে। জমা টাকা শেষ হয়ে গেলে বন্ধ হয়ে যাবে বিদ্যুৎ পরিষেবা। প্রথমে ছোট সরকারি অফিসগুলিতে এই ব্যবস্থা বলবৎ হলেও শিল্প শিবিরের মতে, এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সল্টলেক ও নিউ টাউনে বণ্টন সংস্থার প্রিপেড মিটার পরিষেবা চালু আছে। বিধাননগরে প্রায় চার হাজার এবং নিউ টাউনে ১৭ হাজার প্রিপেড মিটারের গ্রাহক রয়েছেন। নবান্ন মনে করছে, সরকারি দফতরগুলিতেও পাকাপাকি ভাবে প্রিপেড মিটার লাগানো উচিত। কারণ, প্রতিটি দফতরেরই নিজস্ব বাজেট রয়েছে। নিজস্ব আয়ের উৎস আছে পঞ্চায়েত, পুরসভাগুলিরও। প্রিপেড মিটার চালু হলে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ফেলে রাখার অভ্যাস বন্ধ হবে। এ ব্যাপারে বিদ্যুৎমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুখ্যসচিব মলয় দে-র আলোচনাও হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর।

এমনিতেই বিদ্যুৎ চুরি, অনাদায়ি বিল, মিটারে কারচুপি প্রভৃতি কারণে প্রতি বছর কয়েকশো কোটি টাকা লোকসান হয় বণ্টন সংস্থার। সাধারণ গ্রাহক থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারি দফতর ওই সংস্থার প্রাপ্য টাকা সময়ে না-মিটিয়ে বকেয়া ফেলে রাখে। কিন্তু পরিষেবা চালিয়ে যেতে বণ্টন সংস্থাকে বিদ্যুৎ কেনার টাকা, কর্মীদের বেতন ও অন্যান্য খরচ, রাজ্য সরকারের ইলেকট্রিসিটি ডিউটি ও পুরনো ঋণের টাকা নিয়ম মেনে যথাসময়ে মিটিয়ে দিতে হয়। আবার দিন-রাত চালিয়ে যেতে হয় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবাও। তাই বণ্টন সংস্থার প্রাপ্য টাকা আদায়ের পথটাও পরিষ্কার করা দরকার বলেই মনে করছেন বিদ্যুৎ দফতরের কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Electricity Government Offices Advance Payment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE