রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টায় এলাকার এক মহিলা। শনিবার আসানসোলে। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী এখনই আসানসোলে যান, চায়নি রাজ্য। কিন্তু নাছোড় কেশরীনাথও। গত বুধবার থেকে তিনি প্রতিদিন নবান্নের কাছে আসানসোল-রানিগঞ্জে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করছিলেন। দু’বার নবান্ন সরাসরি রাজভবনকে জানিয়ে দেয়, পুলিশ এখন ওখানে আইনশৃঙ্খলা সামলাতে ব্যস্ত। আলাদা করে তাঁর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা মুশকিল। কিন্তু তার পরেও রাজ্যপাল আসানসোল যেতে চাওয়ায় বাধা দেয়নি প্রশাসন। রবিবার কেশরীনাথের সফরে যাতে বিঘ্ন না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে কয়েকশো পুলিশ ঘিরে থাকে তাঁকে।
নবান্নের এক কর্তার কথায়, ‘‘রাজ্য সরকার রাজ্যপালের নামে চললেও, রাজ্যটা নির্বাচিত দলই চালায়। সংবিধানে রাজ্যপালের ভূমিকা নির্দিষ্ট। রাজ্যকে এড়িয়ে তাঁর বিশেষ কিছু করার নেই।’’
কিছুটা একই সুরে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, ‘‘আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়। প্রশাসনের কাজে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ কাম্য নয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে রাজ্য তো নীতিগত প্রশ্ন তোলেনি। রাজ্য সরকার বলেছে, যে তারা রাজ্যপালকে নিরাপত্তা দিতে অপারগ। ফলে তারা মেনে নিয়েছে যে ওখানে আইনশৃঙ্খলা খারাপ।’’
তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘রাজ্য তো জানিয়েইছিল যে রাজ্যপাল আসানসোলে গেলে আপত্তি নেই। তবে প্রশাসন যোগ্যতার সঙ্গে বিজেপির বিশৃঙ্খলাকে প্রতিহত করছে।’’ ২০০৭-র মার্চে তৎকালীন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গাঁধী নন্দীগ্রামের ত্রাণ শিবির দেখতে গিয়েছিলেন। তৃণমূল তখন তাঁকে বাহবা দিয়েছিল।
এখন বিরোধিতা করলেও সংবিধান বিশেষজ্ঞরা এর মধ্যে কোনও অন্যায় দেখছেন না। লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘অশান্ত এলাকায় সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনতে রাজ্যপালের তো ভূমিকা রয়েছে। তাঁকে তাঁর ভূমিকা পালন করতে দেওয়াই উচিত।’’
প্রাক্তন বিচারপতি চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘রাজ্যপাল গেলে অশান্তি বাড়ার সম্ভাবনা দেখি না। পরিস্থিতি কেমন, তা রাজ্যপাল নিজে গিয়ে দেখতেই পারেন। এতে আইনত বাধা নেই।’’ সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘কোনও এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি বা পরিস্থিতি কেমন, তা রাজ্যপালের দেখার অধিকার তো রয়েছেই। অশান্ত এলাকায় মন্ত্রীরা যদি যেতে পারেন, রাজ্যপালও যেতে পারেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy