বাহিনীতে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কেউই যোগ দেননি। প্রতীকী ছবি।
হুটহাট কালভার্ট উড়িয়ে দেওয়া। রাস্তা মেরামতিতে বাধাদান। মাওবাদীদের দাপটের সময় জঙ্গলমহলে এটাই ছিল দস্তুর। সেই কারণেই যুগপৎ সুরক্ষা দিতে এবং মেরামতির কাজ করতে দক্ষ একটি বিশেষ পুলিশবাহিনী গঠন করেছিল রাজ্য সরকার। ‘স্পেশাল ইন্ডিয়ান রিজ়ার্ভ ব্যাটেলিয়ন’ বা এসআইআরবি নামের সেই বাহিনীতে ইঞ্জিনিয়ার ও নিরাপত্তারক্ষীদের নিয়ে দু’টি বিভাগ গড়ার কথা ছিল।
ঠিক হয়েছিল, কেন্দ্রীয় সংস্থা বর্ডার রোডস অর্গানাইজ়েশন (বিআরও)-এর ধাঁচে গড়া এসআইআরবি-র কাজ হবে নিরাপত্তা রক্ষার সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট, সেতু সারানো। যদিও সেই বাহিনীতে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কেউই যোগ দেননি।
ইদানীং মাওবাদী কার্যকলাপ প্রায় নেই বললেই চলে। তাই এ বার ওই বাহিনী থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং বা প্রযুক্তি বিভাগকে বাদ দিতে চাইছে রাজ্য পুলিশ। তার বদলে বাহিনীতে নিরাপত্তারক্ষী বাড়াতে চান পুলিশকর্তারা। ইতিমধ্যে এই মর্মে প্রস্তাবও পাঠানোও হয়েছে নবান্নে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, প্রস্তাব অনুযায়ী এসআইআরবি-তে মোট আটটি কোম্পানি রয়েছে। তাদের সদর দফতর বাঁকুড়ার বড়জোড়ায়। ওই বিশেষ বাহিনীর ছ’টি কোম্পানি গড়া হয়েছে নিরাপত্তারক্ষী বা পুলিশ কনস্টেবলদের নিয়ে। সেই জন্য ছয় শতাধিক কনস্টেবল নিয়োগ করেছে রাজ্য সরকার। এর সঙ্গে রয়েছে দু’টি ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। পূর্ত দফতরের কর্মীদের নিয়ে ওই দু’টি কোম্পানি গড়ার কথা ছিল । কিন্তু পূর্ত দফতর থেকে কোনও কর্মীকে ডেপুটেশনে ওই বাহিনীতে পাঠানো হয়নি। তাই এখন ওই দু’টি ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির বদলে নিরাপত্তারক্ষীদের কোম্পানি গড়ার প্রস্তাব গিয়েছে।
রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, ওই দু’টি কোম্পানিতে নিরাপত্তারক্ষী বা পুলিশ নিয়োগের অনুমতি দিলে বাহিনীর কাজে আরও সুবিধে হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে ওই বাহিনী তৈরি হয়েছিল, তাই ওই দু’টি ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি বন্ধ করার জন্য দিল্লিরও অনুমতি দরকার। মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকায় নাশকতার মোকাবিলায় এবং দার্জিলিং-সহ পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গায় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক বা সেতুর মেরামতির জন্য মূলত ডাক পড়ে পূর্ত দফতরের। মাওবাদী এলাকায় যথাসময়ে কাজ শেষ করার জন্য পুলিশি পাহারার ব্যবস্থা করতে হয়।
রাজ্য পুলিশের একাংশের মতে, যে-লক্ষ্যে ওই বাহিনী গড়া হয়েছিল, তা প্রথমেই ধাক্কা খায়। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, যে-হেতু পুলিশের ব্যাটেলিয়ন, তাই সেখানে সাধারণ পূর্ত দফতরের কর্মীদের পদোন্নতির ব্যবস্থা ছিল না। সম্ভবত সেই কারণে এবং জীবনের ঝুঁকির কথা ভেবে কেউ তাতে যোগ দিতে আগ্রহী হননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy