Advertisement
E-Paper

ডিএ না পেয়ে ধর্মঘটের আগে ‘পেন ডাউন’ কর্মসূচির ঘোষণা কো-অর্ডিনেশন কমিটির

এ বার রাজ্যের সব কর্মচারী সংগঠন নিজেদের মতো করে আন্দোলনের পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোনও কোনও সংগঠন আবার রাজ‍্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে চিঠি লিখে জানিয়েছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কোনও সিদ্ধান্ত না-নিলে, তারা আদালত অবমাননার মামলা করবে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৫ ০১:১৬

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে অবিলম্বে কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ (মহার্ঘভাতা) মিটিয়ে দেওয়ার জন্য রাজ্যের কাছে দাবি জানিয়ে ধর্মঘট এবং ‘পেন ডাউন’ কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটি। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ওই সংগঠনের তরফে সোমবার বিবৃতি দিয়ে সে কথা জানানো হয়েছে।

রাজ্য সরকারি এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দেওয়ার জন্য রাজ্যকে সুপ্রিম কোর্ট যে ছয় সপ্তাহ সময়সীমা দিয়েছিল, তা শুক্রবার শেষ হয়েছে। এর পর সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য জানায়, তাদের এখন আর্থিক সঙ্কট রয়েছে। তাই বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ মেটানোর জন্য আরও সময় প্রয়োজন। সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশ পুনর্বিবেচনারও আর্জি জানায় রাজ্য। এ-ও জানিয়েছে, তারা বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ সরাসরি আদালতের তহবিলে জমা দিতে প্রস্তুত। এ বার রাজ্যের সব কর্মচারী সংগঠন নিজেদের মতো করে আন্দোলনের পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোনও কোনও সংগঠন আবার রাজ‍্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে চিঠি লিখে জানিয়েছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কোনও সিদ্ধান্ত না-নিলে, তারা আদালত অবমাননার মামলা করবে।

ইতিমধ্যেই কো-অর্ডিনেশন কমিটির নেতা বিশ্বজিৎ গুপ্ত চৌধুরী-সহ সিপিএম সমর্থিত রাজ্য সরকারের কর্মচারীরা আগামী ৯ জুলাই একটি ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। কিন্তু তার আগে আগামী ৪ জুলাই তাঁরা একটি ‘পেন ডাউন’ কর্মসূচি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেই সংক্রান্ত তাঁরা একটি নির্দেশিকা দেন।

নির্দেশিকায় বলা আছে, রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে বেতনপ্রাপ্ত সমস্ত অংশের শিক্ষক ও কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা ও রিলিফ প্রদানের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে রাজ্য সরকার কর্মচারীদের ন্যায্য অধিকারকে উপেক্ষা করছে। তার প্রতিবাদে আগামী ৯ জুলাই ধর্মঘট হবে। এই ধর্মঘটের আগে আগামী ৪ জুলাই দু’ঘণ্টার জন্য ‘পেন ডাউন’ কর্মসূচির বিষয়েও উল্লেখ করা আছে ওই নির্দেশিকায়। শুধু তাই নয়, এই আন্দোলনের কর্মসূচিকে ঐক্যবদ্ধ করতে আগামী ১ জুলাই বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ শহিদ মিনারে যৌথ মঞ্চ ও সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বানে যৌথ উদ্যোগে সাংবাদিক বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১৬ মে সুপ্রিম কোর্ট ডিএ সংক্রান্ত মামলায় নির্দেশ দিয়েছিল, ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত যে পরিমাণ ডিএ রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া রয়েছে, তার ২৫ শতাংশ রাজ্য সরকারকে মিটিয়ে দিতে হবে পরের ছয় সপ্তাহের মধ্যে। সেই সময়সীমা শেষ হয়েছে ২৭ জুন, শুক্রবার। আগামী অগস্ট মাসে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হওয়ার কথা। ডিএ মামলার শুনানিতে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছিল, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মোট বকেয়া ডিএ–র পরিমাণ ১১ হাজার ৮৯০ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা। এ ছাড়া পেনশন প্রাপকদের জন্য মোট বকেয়া ১১ হাজার ৬১১ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা। এ ছাড়াও শিক্ষক, পুরসভা, পঞ্চায়েত–সহ স্বশাসিত সংস্থা ও রাজ্য সরকার পরিচালিত সংস্থার কর্মীদের পাওনা ১৮ হাজার ৩৬৯ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা। সব মিলিয়ে অঙ্কটা ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি। তাই রাজ্য সরকারের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে জানিয়েছিলেন, পুরো ডিএ দিতে গেলে রাজ্য সরকারের আর্থিক অবস্থা বেহাল হয়ে যাবে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশ মেনে এর ২৫ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ১০ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা ২৭ জুনের মধ্যে মেটাতেই হবে।

পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীরা বর্তমানে ১৮ শতাংশ হারে ডিএ পান। কয়েক মাস আগে বাজেট বক্তৃতার সময়েই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চার শতাংশ ডিএ বৃদ্ধির কথা জানিয়েছিলেন। তার পর ১৪ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ডিএ হয় ১৮ শতাংশ। সেই বর্ধিত ডিএ কার্যকর হয় ১ এপ্রিল থেকে। যদিও কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে এ রাজ্যের কর্মীদের মহার্ঘভাতার ফারাক এখনও ৩৭ শতাংশ। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা ৫৫ শতাংশ হারে ডিএ পান। গত ১৬ মে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়ে জানিয়েছিল, কর্মীদের বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ পরের ছ’সপ্তাহের মধ্যে মিটিয়ে দিতে হবে।

Dearness Allowances DA Protest DA West Bengal government Supreme Court of India State Government Employees
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy