শীত পড়তেই কুয়াশার প্রকোপ বাড়ছে। আর প্রবল কুয়াশার জেরে ভোররাতের দৃশ্যমানতা কমছে। আর তা থেকেই দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। সেই দুর্ঘটনা ঠেকাতে রাস্তায় ডিউটিতে থাকা পুলিশকর্মীদের জন্য এক গুচ্ছ পরামর্শ দিল রাজ্য ট্র্যাফিক পুলিশ।
সূত্রের খবর, গত সোমবার জারি করা ওই পরামর্শে জাতীয় এবং রাজ্য সড়কে যেখানে দুর্ঘটনাপ্রবণ জায়গা বা ‘ব্ল্যাক স্পট’ রয়েছে, সেখানে বিশেষ নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে। এর সঙ্গেই দূরপাল্লার যানবাহন চালকেরা শীতের রাতে সিটে বসেই যাতে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে দুর্ঘটনা না ঘটান সে জন্য ভোরের দিকে গাড়ি থামিয়ে চালকদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের চা এবং গরম জল দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় চালক যাতে গাড়ি না চালান সে জন্য নজরদারি বাড়ানোর জন্য বলা হয়েছে। কিছু জেলা নিজেরাই প্রতি বছর এ কাজ করে থাকে। এ বার সেটাই রাজ্য ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে সব জেলাকে পালন করতে বলা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, সিসিটিভি রয়েছে এমন নজরদারি এলাকার মধ্যেই নাকা করার জন্য বলা হয়েছে। গাড়ির চালকদের সঙ্গে কথা বলা থেকে শুরু করে তাদের চা-জল খাওয়ানো সব ক্ষেত্রেই পুলিশকর্মীদের ভিডিয়ো রেকর্ডিং করতে বলা হয়েছে। এর জন্য একাধিক পুলিশকর্মীকে বডি ক্যামেরা পরার জন্য বলা হয়েছে।
রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, সাধারণত শীতের মাঝামাঝি সময়ে ভোর রাতের দিকের কুয়াশার প্রভাব বেশি থাকে। আবার সারারাত গাড়ি চালিয়ে ওই সময় চালকেরা তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই স্বাভাবিক ভাবে ভোর রাতের থেকে সকালের দিকে দুর্ঘটনা ঘটে থাকে বেশি। কিছু দিন আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের মাদপুরের কাছে ঘন কুয়াশার কারণে একটি দুর্ঘটনায় এক জনের মৃত্যু হয়েছে। তাই ওই সময় যাতে চালকেরা সকলে সজাগ থাকেন তার জন্য ওই এক গুচ্ছ পরামর্শ দেওয়া হয়েছেট্র্যাফিক পুলিশকে।
রাজ্য ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, জেলা এবং কমিশনারেটগুলিকে পাঠানো তিন পাতার ওই অ্যাডভাইসারিতে বলা হয়েছে, দিনের বিভিন্ন সময়ে নাকা তল্লাশি চালালেও ভোর রাতের থেকে ওই নাকাতে জোর দিতে হবে। কুয়াশার মধ্যে দলবেঁধে পিকনিকে বা ঘুরতে যাওয়া দলবলকে নিরুৎসাহিত করার কথাও বলা হয়েছে। নাকা তল্লাশিতে থাকা পুলিশকর্মীদের বলা হয়েছে, সব গাড়ির ফগ লাইট আছে কিনা তা পরীক্ষা করতে হবে। একই সঙ্গে কুয়াশার মধ্যে চলা গাড়িগুলির যান্ত্রিক ফিটনেস সার্টিফিকেট রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে।
এক পুলিশকর্তা জানান, বেশির ভাগ মানুষ কোনও নাকাকে স্বাগত জানায় না। তাই কুয়াশার মধ্যে দুর্ঘটনা রোধে গাড়ি থামালে তাতে যাতে পুলিশকর্মীদের সঙ্গে চালকদের কোনও বচসা না হয়, সে জন্য জেলার পুলিশ আধিকারিকদের বলা হয়েছে পুলিশকর্মীদের যথাযথ ব্রিফিং করতে। এ ছাড়া পুলিশকর্তাদের বলা হয়েছে, নাকা করার সময়ে সব নিয়মাবলী কঠোর ভাবে পালন করা হচ্ছে কি না তা যাচাই করতে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)