বরাবরের ক্ষোভ-অসন্তোষের পাশাপাশি শিক্ষারত্ন পুরস্কার নিয়ে এ বারেও বৈষম্য-বঞ্চনার অভিযোগ উঠছে। কয়েকটি শিক্ষক সংগঠনের দাবি, আগামী বছর থেকে পিছিয়ে পড়া জেলাগুলিতে আরও বেশি শিক্ষককে শিক্ষারত্ন দেওয়া হোক। কারণ, প্রত্যন্ত এলাকার শিক্ষকদের অনেক বেশি প্রতিবন্ধকতার মধ্যে কাজ করতে হয়। তাঁদের মধ্যে অগ্রবর্তী কয়েক জনকে বেছে নিয়ে শিক্ষারত্ন দিলে সেখানকার শিক্ষকেরা কাজ করতে আরও উৎসাহিত হবেন।
“বেশ কিছু জেলার শিক্ষকেরা এ বার শিক্ষারত্ন পেয়েছেন। আবার কিছু জেলায় ওই পুরস্কার প্রাপকের সংখ্যা খুব কম। বিশেষত প্রত্যন্ত এলাকায় শিক্ষারত্ন যাচ্ছে যৎসামান্য। সেই জন্যই বৈষম্যের অভিযোগ উঠছে,” বলেন পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নবকুমার কর্মকার।
শিক্ষা সূত্রের খবর, কোন কোন শিক্ষক অতিমারির মধ্যেও পড়ুয়াদের পাশে থেকেছেন, এ বার শিক্ষারত্ন বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সেটা দেখা হয়েছে। গ্রামের শিক্ষকদের বক্তব্য, সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেক শিক্ষক পড়ুয়াদের পাশে থাকতে পারেননি। কারণ, অনেক জায়গাতেই অনলাইনে ক্লাস করা সম্ভব হয়নি। ফলে শিক্ষারত্নের দৌড়ে তাঁরা পিছিয়ে পড়েছেন।
প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে দেশ জুড়ে শোক জ্ঞাপন চলছে। সেই জন্য আজ, শনিবার শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান রবীন্দ্র সদনে করার সিদ্ধান্ত নিয়েও তা বদলাতে হয়েছে। এ বার পুরোটাই হবে ভার্চুয়ালি। শিক্ষারত্ন প্রাপকেরা নিজেদের নিকটতম জেলাশাসকের দফতরে উপস্থিত থাকবেন। সেখানেই তাঁদের এই সম্মান জানানো হবে। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী শিক্ষকদের নিজেদের জেলায় বদলির কথা ঘোষণা করলেও সেই প্রক্রিয়া কার্যত শুরুই হয়নি। কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেসের সাধারণ সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস জানান, স্বচ্ছতার জন্য সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের প্যানেল অনুমোদনের ক্ষমতা জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের হাত থেকে নিয়ে শিক্ষা দফতরকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া থমকে গিয়েছে। ফলে বহু স্কুল পঠনপাঠনের পরিকাঠামোর অভাব দেখা দিয়েছে। এই সমস্যার দ্রুত সমাধান দরকার।
উচ্চ মাধ্যমিক চুক্তি শিক্ষক সমিতির কল্যাণ সরকার জানান, শিক্ষক দিবসে তাঁরা করোনা-বিধি মেনে সাইকেলে শিক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে ফুল ও শুভেচ্ছা বার্তা দিয়ে আসবেন। ‘পে স্কেল’, স্থায়ীকরণ-সহ নানা দাবিও জানানো হবে। কলেজ শিক্ষক সংগঠন কুটাব শনিবার ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে দাবিদাওয়া জানাবে, করবে প্রতিবাদসভা। সোশ্যাল মিডিয়ায় আজ ‘পার্শ্ব শিক্ষক বঞ্চনা দিবস’ পালন করা হবে বলে জানান পার্শ্ব শিক্ষক ঐক্য মঞ্চের প্রতিনিধি ভগীরথ ঘোষ। তাঁদের অভিযোগ, পার্শ্ব শিক্ষকদের ‘পে স্কেল’ এখনও অধরা।