আচমকা ছেলের মৃত্যুতে হতবাক মা! বিস্মিত পুরো পরিবার! বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদারের একমাত্র পুত্র সৃঞ্জয় দাশগুপ্তের মৃত্যু নিয়ে তাঁর পিসি এবং পিসতুতো ভাইয়ের দাবি, মায়ের দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে সৃঞ্জয়ের কোনও সমস্যা ছিল না। ‘রহস্যমৃত্যু’র নেপথ্যে রিঙ্কু-দিলীপের বিয়ের কোনও সম্পর্ক নেই। তবে কী ভাবে ২৫ বছরের যুবকের মৃত্যু হল, তা নিয়ে কৌতূহলী পরিবার। অন্য দিকে, পুত্রহারা রিঙ্কু জানান, ‘মাদার্স ডে’ উপলক্ষে তাঁর জন্য কেক নিয়ে গিয়েছিলেন সৃঞ্জয়। উপহারও দিয়েছিলেন গত রবিবার। তবে সোমবার তাঁকে ফোন করে ছেলে জানান যে, তাঁর একা থাকতে ইচ্ছা করছে।
মঙ্গলবার সকালে নিউ টাউনের সাপুরজি আবাসন থেকে আইটি কর্মী সৃঞ্জয়কে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বিধাননগর সেবা হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার দুপুরে ওই যুবকের দেহ নিয়ে যাওয়া হয় আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে। সেখানেই ময়নাতদন্ত হচ্ছে।
হাসপাতালে যান সৃঞ্জয়ের বাবা, অর্থাৎ রিঙ্কুর প্রথম পক্ষের স্বামী রাজা দাশগুপ্ত। পুত্রশোকে বিহ্বল ওই প্রৌঢ় কোনও মন্তব্য করেননি। তবে রাজার বোন, অর্থাৎ সৃঞ্জয়ের পিসি জানান, তাঁর ভাইপোর স্নায়ুর সমস্যা ছিল। চিকিৎসা চলছিল। এ ছাড়া আর কোনও শারীরিক সমস্যা ছিল না। মানসিক সমস্যা ছিল কি না, সেই প্রসঙ্গে ওই মহিলার দাবি, তাঁর ভাইপোর এমন কোনও সমস্যার কথা তিনি শোনেননি।
সৃঞ্জয়ের পিসতুতো ভাই বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে ওর রোজ কথা হত। আজও ফোন করি। কিন্তু ফোনে পাইনি।’’ পাশ থেকে সৃঞ্জয়ের পিসি বলেন,‘‘পরশু দিন আমার ছেলেকে ফোন করে বলেছিল, ‘আয়, আড্ডা মারব।’ আমি ছেলেকে রাতে বেরোতে বারণ করি। কারণ, কয়েক দিন আগে একটা অ্যাক্সিডেন্টে ও চোট পেয়েছে। তার পরে দু’জনে কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল বলে দেখা হয়নি। কিন্তু ফোনে যোগাযোগ ছিল। সকালে খবর পেয়ে বালিগঞ্জের অফিস থেকে ছুটে এসেছি আমি।’’
পুত্রহারা রিঙ্কু জানান, আবাসনে দুই বন্ধুর সঙ্গে থাকতেন ছেলে। তাঁদের মধ্যে এক জন যুবক এবং এক জন তরুণী। মঙ্গলবার সৃঞ্জয়ের দুর্গাপুর যাওয়ার কথা ছিল। সোমবার রাতেও ছেলের সঙ্গে তাঁর কথা হয়। তিনি বলেন, ‘‘ছেলে সকালে দেরিতেই ঘুম থেকে ওঠে। অসুস্থ জানতে পেরে সকালে ফ্ল্যাটে যাই। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল...। তখন মুখ থেকে গ্যাঁজলা উঠছিল।’’ তিনি জানিয়েছেন, ‘মাদার্স ডে’ উপলক্ষে তাঁকে উপহার দিয়েছিলেন ছেলে। কেক-ও নিয়ে গিয়েছিলেন। আনন্দ করেছেন। তবে সোমবার তাঁকে ফোন করে ছেলে বলেছিলেন, তাঁর একা থাকতে ইচ্ছা করছে। রিঙ্কুর কথায়, ‘‘ বলেছিল, একা থাকতে ইচ্ছে করছে। বাড়িতে কাউকে আসতে বারণ করে দাও। অফিসে জানিয়ে আজ (মঙ্গলবার) ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ নিয়েছিল।’’ আর তেমন কিছু বলতে পারেননি দিলীপ-পত্নী। কেঁদে ফেলেন।
সৃঞ্জয়ের ছোটবেলার এক বন্ধু জানিয়েছেন, সোমবার রাতে রুমমেটের সঙ্গে একই ঘরে ঘুমিয়েছিলেন ওই যুবক। ওই রুমমেট সকালে ঘুমের মধ্যে গোঙানির আওয়াজ পেয়ে উঠে বসেন। তার পরে তিনিই খবর দেন বাকিদের। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় করেছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে,ময়নাতদন্তের পরেই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে সুনিশ্চিত হওয়া যাবে।