কালীপুজোর সময়, হেমন্তকালে শ্যামাপোকার আবির্ভাব। —ফাইল চিত্র।
প্রতি বছর অক্টোবর থেকে নভেম্বরে হানা দেয় ওরা। আকাশে উড়ে বেড়ায়। আলো দেখলেই ছুটে যায়। কালীপুজোর সময়, হেমন্তকালে ওদের আবির্ভাব। তাই বঙ্গবাসী ওদের চেনে শ্যামাপোকা নামে। অন্য অনেক পোকা, পাখির সঙ্গে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে সেই শ্যামাপোকা। কেন? শুধুই কি কীটনাশক প্রয়োগের কারণে? নাকি অন্য কোনও কারণও রয়েছে?
ইংরেজিতে এই পোকাকে বলে গ্রিন লিফহপার। বিজ্ঞানের ভাষায় বলে নেফোটেট্টিক্স ভিরেসেনস। ধান উৎপাদনকারী রাজ্যেই এক মাত্র দেখা যায় এই শ্যামাপোকা। কারণ এদের প্রধান খাবার হল ধানগাছের রস। বাংলায় এই পোকাকে দীপাবলি উৎসবের বাহক বলেও ধরা হয়। আলোর উৎসের প্রতিই এদের ঝোঁক। আলো নিভে গেলে অনেক সময় শ্যামাপোকাকে খসে পড়তে দেখা যায়।
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, শ্যামাপোকা রোগ বয়ে আনে। মানুষের নয়, তবে ধানের। এর ফলে ধানগাছের বৃদ্ধি ব্যহত হয়। গাছের পাতার রং ফিকে হয়ে যায়। ধানগাছের রস শুষে খায় বলে গ্রাম বাংলায় একে শোষকও বলে। আর ঠিক সে কারণে এই পোকা মারতে কৃষকরা কীটনাশক ব্যবহার করেন। তার জেরে কমছে শ্যামাপোকার সংখ্যা।
তবে কীটনাশকই এর সংখ্যাহ্রাসের এক মাত্র কারণ নয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ুর পরিবর্তনও এর কাল ডেকে এনেছে। খুব আর্দ্র পরিবেশ ছাড়া শ্যামাপোকা বাঁচতে পারে না। কৃষিবিজ্ঞানীরা বলছেন, এ বছর দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি কম হয়েছে। শুষ্ক আবহাওয়া, উচ্চ তাপমাত্রা আর বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির কারণে ক্রমেই কমছে শ্যামাপোকার সংখ্যা। কৃষিবিজ্ঞানীরা আরও মনে করছেন, কলকাতার আশপাশে ধানচাষ এখন আর হয় না। সে কারণেও শহরে শ্যামাপোকার সংখ্যা কমছে। কারণ শহরের আশপাশে খাবার না পেয়ে পোকারা এখন গ্রামেই বাস করছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy