Advertisement
২৪ মার্চ ২০২৩
Dilip Ghosh

Rampurhat Clash: বগটুই থেকে অনেক দূরে দিল্লিতেই দিলীপ, দলের নির্দেশ, নাকি ঘোষের নিজস্ব মর্জি!

বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যে বগটুই আন্দোলন যে চেহারাই নিক না কেন, চলতি মাসে দিল্লিতেই থাকবেন দিলীপ। ফিরবেন সংসদের অধিবেশন শেষ হলে।

দিলীপ এখন দিল্লিতে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

দিলীপ এখন দিল্লিতে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২২ ০৮:১৯
Share: Save:

রামপুরহাটের বগটুই গ্রাম থেকে বুধবার ঘুরে এসেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ছাড়াও সেই গ্রামে গিয়েছেন ভিন্ রাজ্যের তিন সাংসদ। কিন্তু কোথাও নেই দিলীপ ঘোষ। যা চোখে পড়ার মতো। এতটাই যে, এ নিয়ে আলোচনা চলছে গেরুয়া শিবিরেও। কেউ কেউ বলছেন, দিলীপ-শুভেন্দু দূরত্বের কথা সকলেরই জানা। সেই দূরত্ব বা মতানৈক্যের ছায়া যাতে এই আন্দোলনে না পড়ে, সে কারণেই দিলীপকে দূরে দূরে থাকতে বলা হয়েছে।

Advertisement

এখন সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি হলেও দিলীপকে ইদানীংকালে রাজ্যের দলের সব কর্মসূচিতেই অংশ নিতে দেখা গিয়েছে। তিনি যখন রাজ্য সভাপতি ছিলেন, তখনকার মতোই সব বিষয়ে তাঁকে মতামত দিতেও দেখা গিয়েছে। কিন্তু এ বার উল্লেখযোগ্য ভাবেই চুপ তিনি। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যে বগটুই আন্দোলন যে চেহারাই নিক না কেন, চলতি মাসে দিল্লিতেই থাকবেন দিলীপ। ফিরবেন এপ্রিল মাসে সংসদের অধিবেশন শেষ হলে।

সেকানেই জল্পনা। সাধারণ ভাবে দেখা যায়, কলকাতা, দিল্লি বা রাজ্যের যে প্রান্তেই তিনি থাকুন, প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে সব বিষয়েই মন্তব্য করেন দিলীপ। গেরুয়া শিবিরের অন্দরে অনেকেই জানেন, সব বিষয়ে দিলীপের কথা বলাটা বর্তমান রাজ্য নেতৃত্বের অনেকেরই না-পসন্দ। কিন্তু দিলীপকে রোধ করিবে কে? সাতসকালে যা মনে হয়, উগরে দেওয়াই তাঁর মর্জি। বগটুই-কাণ্ডের আবহে রাজ্য থেকে দূরে থাকাটাও কি দিলীপের নিজস্ব মর্জি? না কি এর পিছনে দলীয় কোনও নির্দেশ রয়েছে?

দিলীপ-ঘনিষ্ঠেরা দলীয় নির্দেশের কথা মানতে নারাজ। প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির ‘ঘনিষ্ঠ’ এক বিজেপি নেতার বক্তব্য, ‘‘সংসদের অধিবেশন চলার সময়ে দিলীপদা বরাবরই দিল্লিতে থাকেন। এ বারেও তাই হয়েছে। আর বগটুইয়ের ঘটনা থেকে দিলীপদা দূরে রয়েছেন বলাটা ঠিক নয়। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে সাংসদদের যে প্রতিনিধি দল গিয়েছিল, তাতে তো উনিও ছিলেন।’’

Advertisement

তবে বিজেপি-র অন্দরে পাল্টা উদাহরণও আছে। অনেকে বলছেন, রাজ্যে কোনও বড় ঘটনা ঘটলে দিলীপকে ‘ডেলি প্যাসেঞ্জার’-এর মতো যাতায়াত করতে দেখা গিয়েছে। পুরভোটের সময়ে সংসদে অধিবেশন চললেও শুক্রবার রাতেই চলে আসতেন দিল্লি থেকে। আবার ঝোড়ো প্রচার চালিয়ে রবিবার রাতে বা সোমবার ভোরের বিমানে দিল্লি ফিরে যেতেন। এ বার যে সেটা তিনি করছেন না, তা অবশ্য জানিয়েছেন করেছেন দিলীপও। কেন করছেন না, তা খোলসা না করলেও আনন্দবাজার অনলাইনকে দিলীপ বলেন, ‘‘এই মাসটা দিল্লিতেই থাকব। আগামী মাসের গোড়ায় বাংলায় ফিরে বালিগঞ্জ আর আসানসোলের প্রচারে যোগ দেব।’’

দিলীপ বগটুই থেকে দূরত্বে থাকার কারণ নিয়ে আনুষ্ঠানিক বাবে কেউ মুখ খুলতে রাজি না-হলেও অনেকের বক্তব্য, সকলেই সবকিছুতে অংশ নেবেন, এটা বিজেপি-তে হয় না। সকলের নির্দিষ্ট দায়িত্ব থাকে। বগটুই-কাণ্ড নিয়ে দল যে আন্দোলন পরিকল্পনা করেছে, তার দু’টি ভাগ রয়েছে। এক দিকে পরিষদীয় দলের আন্দোলন। যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন শুভেন্দু। তিনি বিধায়কদের নিয়ে বগটুই গিয়েছেন, বিধানসভায় প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। অন্য দিকে, কেন্দ্রীয় বিজেপি যে প্রতিনিধি দল ঠিক করেছে তার নেতৃত্বে রয়েছেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত। তাঁকে ওই কমিটিতে রাখাও হয়েছে। আর রাজ্যের নেতা হিসেবে কমিটিতে রয়েছেন প্রাক্তন আইপিএস ভারতী ঘোষ। তিনি দলের সর্বভারতীয় মুখপাত্রও বটে।

বিজেপি সূত্রে এটাও জানা গিয়েছে যে, শুধু দিলীপ নয়, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চাইছে শুধু সুকান্ত এবং শুভেন্দুর নেতৃত্বেই হোক বগটুই আন্দোলন। সেই কারণেই রাজ্যের সাংসদ চার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে শুরু করে অন্যান্য রাজ্য নেতারাও চুপ থাকছেন। দলের যুব বা মহিলা মোর্চাও এখনও পর্যন্ত সে ভাবে কোনও কর্মসূচি নেয়নি। উত্তর কলকাতা জেলা বিজেপি-র সভাপতি কল্যাণ চৌবে বৃহস্পতিবার শহরে একটি মিছিল ডেকেছিলেন। পরে দলীয় নির্দেশে তা বাতিল করেছেন। যার আনুষ্ঠানিক কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, কেন্দ্রীয় নেতারা বগটুইয়ে যেদিন যাচ্ছেন, সেদিন কলকাতায় আলাদা মিছিল করে লাভ নেই। তাতে নজর দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যেতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.