রাস্তা সারানোর জন্য এ ভাবেই চলে পিচ গলানো। ছড়ায় দূষণ। —নিজস্ব চিত্র ।
নির্মাণস্থল থেকে বায়ুদূষণ নিয়ে আগেই সরব হয়েছিলেন পরিবেশকর্মীরা। এ বার ভরা এজলাসে নির্মাণের দূষণ নিয়ে মন্তব্য করলেন জাতীয় পরিবেশ আদালতের বিচারপতি এস পি ওয়াংদি। বুধবার বায়ুদূষণ সংক্রান্ত মামলার শুনানির সময়ে বিচারপতি জানান, তিনি সান্ধ্যভ্রমণে বেরোন। কিন্তু ইদানীং রাস্তায় বেরোলেই তাঁর শারীরিক কষ্ট হয়। রাস্তা সারানোর জন্য যে ভাবে প্রকাশ্যে পিচ গলানো হয়, তার ধোঁয়াতেই এই অসুবিধা। কেন এমন ভাবে রাস্তা সারানো হয়, সরকারি কৌঁসুলির কাছে তাও জানতে চান বিচারপতি।
মহানগরের বায়ুদূষণ নিয়ে কলকাতায় জাতীয় পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চে মামলা দায়ের করেছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। সেই মামলায় সম্প্রতি তিনি একটি অতিরিক্ত হলফনামা দিয়েছেন। তাতে বায়ুদূষণের পিছনে রাস্তা সারাইয়ের পদ্ধতিকে দায়ী করেছেন। সুভাষাবাবু জানান, কলকাতায় এখনও পুরনো পদ্ধতিতে প্রকাশ্যে টায়ার, কাঠ, ডিজেল পুড়িয়ে পিচ গলানো হয়। এক দিকে পিচ গলার ধোঁয়া, তার উপরে কাঠ, টায়ার, ডিজেলের ধোঁয়া— দুইয়ে মিলে দূষণের স্বর্গরাজ্য হয়ে ওঠে মহানগরী।
হলফনামায় বেশ কিছু ছবিও জমা দিয়েছেন এই পরিবেশকর্মী। তিনি জানান, রাজ্যের প্রশাসনিক সদর দফতর নবান্নের পিছনেই এমন পদ্ধতিতে রাস্তা সারাই হচ্ছে। শহরের অন্যান্য কয়েকটি জায়গার ছবিও দিয়েছেন তিনি। বস্তুত, এর আগেও এই প্রসঙ্গ জাতীয় পরিবেশ আদালতে উঠেছিল। সে সময়ে পরিবেশ দফতরের তরফে জানানো হয়েছিল, পূর্ত দফতর এবং কেএমডিএ-র কাছে দূষণ এড়িয়ে রাস্তা সারানোর উপায় জানতে চাইবে তারা। এ দিন সুভাষবাবু আদালতে মনে করান, সেই কথা জানানোর পরে বছর ঘুরতে চললেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। উন্নত দেশ এমনকী, এ দেশের কিছু জায়গাতেও মাইক্রো-সারফেসিং পদ্ধতিতে রাস্তা সারাই হয়। কিন্তু এ রাজ্যে তার কোনও নামগন্ধ নেই। আদালতের বাইরে সুভাষবাবুর মন্তব্য, ‘‘মাইক্রো সারফেসিং পদ্ধতি দামেও সস্তা। এতে এক দিনে এক কিলোমিটার রাস্তা সারাই করা যায়।’’
কলকাতায় যে প্রাগৈতিহাসিক পদ্ধতিতে রাস্তা সারাইয়ের ফলে দূষণ হয়, তা মেনে নিচ্ছেন রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের একাংশও। তারা বলছে, এ নিয়ে প্রশাসনিক দফতরগুলিকে বারবার বলা হয়েছে। কিন্তু ফল কিছু হয়নি। এ দিন বিচারপতি ওয়াংদির নির্দেশ, এই ব্যবস্থা বন্ধ করা উচিত। কী ভাবে তা বন্ধ করা যায়, সরকার পক্ষের কাছে জানতে চেয়েছেন তিনি। ১৭ জানুয়ারির মধ্যে এ ব্যাপারে অ্যাকশন প্ল্যান জমা দিতেও বলেছে আদালত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy