সন্দীপ ঘোষ, সুদীপ্ত রায় এবং শান্তনু সেন। —ফাইল ছবি।
নির্ধারিত সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও কেন শোকজ়ের উত্তর না-দেওয়া সন্দীপ ঘোষের রেজিস্ট্রেশন রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল বাতিল করেনি, তা নিয়ে এ বার প্রশ্ন তুলল সর্বভারতীয় চিকিৎসক সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)-এর পশ্চিমবঙ্গ শাখা। রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি সুদীপ্ত রায়কে পাঠানো চিঠিতে আইএমএ-র রাজ্য সভাপতি দিলীপকুমার দত্ত এবং রাজ্য সম্পাদক শান্তনু সেন জানতে চেয়েছেন, কেন কাউন্সিলের সংবিধান মেনে সন্দীপের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হল না।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে দিলীপ এবং শান্তনু মঙ্গলবার সুদীপ্তকে পাঠানো চিঠিতে লিখেছেন, ‘‘আমরা আপনাকে অনুরোধ করছি সন্দীপের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের ঊর্ধ্বে উঠে দ্রুত তাঁর রেজিস্ট্রেশন বাতিল করবেন।’’ ঘটনাচক্রে, সুদীপ্ত রায় তৃণমূল বিধায়ক। শান্তনু তৃণমূলেরই প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ তথা প্রাক্তন মুখপাত্র। শান্তনু ছিলেন আরজি কর হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান। তাঁকে সরিয়ে ওই পদে বসানো হয়েছিল সুদীপ্তকে। হুগলির শ্রীরামপুরের বিধায়ক হলেও সুদীপ্ত কলকাতার ১ নম্বর ওয়ার্ড অর্থাৎ কাশীপুর এলাকার বাসিন্দা। শান্তনুও ওই এলাকারই। তৃণমূল সূত্রের খবর, হাসপাতাল রাজনীতির সমীকরণে শান্তনু বরাবরই সন্দীপের বিরোধী। আবার সন্দীপ এবং সুদীপ্ত একই পক্ষের বলে খবর।
গত ২ সেপ্টেম্বর আর্থিক দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পাঁচ দিন পরে সন্দীপকে শোকজ় করেছিল রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল। গত ৭ সেপ্টেম্বর সেই চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়েছিল, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর দিতে হবে। যদি তা দেওয়া না হয়, কিংবা সন্তোষজনক উত্তর না মেলে, তা হলে সন্দীপের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হবে। মেডিক্যাল কাউন্সিলের ব্যাখ্যা ছিল, কোনও চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বাতিল করতে হলে দু’টি কারণে তা করা সম্ভব। এক, কেউ যদি কোনও অপরাধমূলক কাজের চক্রান্ত কিংবা তাতে সরাসরি যুক্ত থাকার অপরাধে আদালতে দোষী প্রমাণিত হন এবং দুই, কোনও অপরাধমূলক কাজে নাম জড়ানোর ফলে জনসমাজে যদি তাঁর বদনাম হয়ে থাকে।
তবে দু’টি ক্ষেত্রেই শোকজ় না করে রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা নিয়মবিরুদ্ধ। তাই সন্দীপকে শোকজ় করা হয়েছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পরেও তো সন্দীপ শোকজ়ের জবাব দেননি। উপরন্তু তরুণী চিকিৎসক-পড়ুয়া খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় তথ্য প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর সিবিআই গ্রেফতার করেছে সন্দীপকে। তার পরেও কেন প্রাক্তন অধ্যক্ষের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে গড়িমসি করছে কাউন্সিল? এই প্রশ্নই তুলেছে আইএমএ। প্রসঙ্গত, সিবিআই গ্রেফতার করার আগেই গত ২৮ অগস্ট ‘পেশাকে কলঙ্কিত করার অভিযোগে’ আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপকে সাসপেন্ড করেছিল আইএমএ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy