Advertisement
E-Paper

শিবপুরে শিল্প না করে বাড়ি তৈরি কেন: বিমান বসু

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৭ ০২:০৩
পথে: সিউড়িতে বামেদের পদযাত্রায়। নিজস্ব চিত্র

পথে: সিউড়িতে বামেদের পদযাত্রায়। নিজস্ব চিত্র

তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে বুথস্তর পর্যন্ত সংগঠন মজবুত করতে নানা কর্মসূচি নিয়েছে বিজেপি। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে প্রতিটি বুথে পৌঁছতে আসরে নামল বামেরাও। লক্ষ্য কেবল রাজ্যের শাসক তৃণমূল নয়, কেন্দ্রের বিজেপি শাসিত সরকারও। সেই লক্ষ্যে গ্রাম ও শহরের ১৭ দফা দাবি নিয়ে ১১৭টি গণ-সংগঠনের যৌথ মঞ্চ বিপিএমও-র (বেঙ্গল প্ল্যাটফর্ম অফ মাস অর্গানাইজেশন) আয়োজনে রবিবার থেকে রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে পদযাত্রা। পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি মেনে এ দিন সকালে জেলা সদর সিউড়ি থেকে পদযাত্রার সূচনা করলেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। বিমানবাবুর মতো রাজ্য সিপিএমের প্রথম সারির নেতৃত্ব আজ বিভিন্ন জেলায় ছড়়িয়ে ছিলেন।

রবিবার সকাল ১১টা নাগাদ পদযাত্রা শুরু হয় সিউড়ি জেলাস্কুলের মাঠ থেকে। সেখান থেকে সিউড়ি শহরের মূল রাস্তা ধরে বাসস্ট্যান্ড হয়ে দুবরাজপুর রোড ধরে রেলসাঁকো পেরিয়ে সোজা ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে এসে পরে পদযাত্রা। ওই রাস্তা ধরেই পদযাত্রা কচুজোরে পৌঁছয় বেলা দুটো নাগাদ। বহু কর্মী সমর্থকেরা তো ছিলেনই। পদযাত্রায় যোগ দেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রামচন্দ্র ডোম, জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা সহ জেলার বাম নেতারা। কচুজোরে দলীয় কার্যালয়ে সামান্য থেমে বিকেলে দুবরাজপুরের চিনপাই গ্রাম ঘুরে ফের জাতীয় সড়ক ধরে পদযাত্রা সন্ধ্যায় পৌঁছায় দুবরাজপুর পাওয়ার হাউস মোড়ে।

আগাগোড়া ঘোষিত দাবিগুলিকে মানুষের সামনে রাখার বার্তা দেন বিমানবাবু। তবে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের খোঁচাতেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সিউড়িতে তেমন কিছু বলেননি। সংবাদমাধ্যমের মূল প্রশ্ন ছিল: আগেও বামেদের জাঠায় আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। এ বার জাঠা বা পদযাত্রা আক্রান্ত হলে কী করা হবে? বিমানবাবু বলেন, ‘‘সকলের অধিকার আছে পথে চলার। যাঁরা গণতন্ত্র হত্যা করে, গণতন্ত্রের বিকাশ ঘাটানো হচ্ছে বলে দাবি করছে। তাদের মুখোশ উন্মোচন করার জন্যই আমরা পদযাত্রা করছি। আক্রান্ত হলে তাদের মুখোশ আরও উন্মোচিত হবে।’’ সন্ধ্যায় এ দিনের পদযাত্রা শেষে দুবরাজপুর বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন সরকারের ভূমিকা নিয়ে কটাক্ষ করেন বিমান।

বাম নেতৃত্ব জানাচ্ছেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের গণতন্ত্র বিরোধী ও জনবিরোধী নীতি এবং সাধারণ মানুষের জ্বলন্ত সমস্যাগুলি নিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছনোই মূল উদ্দেশ্য। ১৭ দফা দাবির মধ্যেই সেগুলি রয়েছে। মূল ও উপপদযাত্রা বা জাঠাগুলি হাজার হাজার কিমি পথ হেঁটে প্রতিটি বুথ স্তরের সকলের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। পদযাত্রা শেষে দুবরাজপুর পাওয়ার হাউস মোড়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সেই ভাবনাই স্পষ্ট করেন বিমানবাবু। তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায় ও কাজে বিস্তর ফারাক। সেই ফারাকটা মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে।’’

বামফ্রন্টের চেয়ারম্যানের আরও কটাক্ষ, ‘‘গণতন্ত্র আক্রান্ত। ধর্মের নামে, জাতির নামে, বর্ণের নামে দেশ এক ভয়াবহ পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে সরকার।’’ শিল্প গড়ার ইচ্ছের প্রসঙ্গ নিয়েও রাজ্যের সমালোচনা করেন বিমানবাবু। সেই সূত্র ধরেই উঠেছে বীরভূমের শিবপুর প্রসঙ্গ। বিমানবাবু বলেন, ‘‘রাজ্যে শিল্প নেই। কর্মসংস্থান নেই। শুধু উৎসব আছে। এ রাজ্যেও শিল্প গড়ার জন্য জমি নেওয়া হয়েছিল। কথা ছিল, শিল্প হলে জমিদাতাদের পরিবারে এক জনের কর্মসংস্থান হবে। কিন্তু এখন বলছে, সেখানে শিল্প হবে না বাড়ি হবে। বাড়ি হবে মানে হাতিয়ে টাকা তোলা হবে। এতে লাভ কার। চোর-বদমাইশদের। এই কথাগুলোই মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে।’’

তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল অবশ্য চুপ করে থাকেননি। নানুরে একটি দলীয় কার্যালয়ের উদ্বোধনে এসে অনুব্রত বলেন, ‘‘বৃদ্ধ বিমান কেন জেলায় এসেছেন জানি না। আমাদের দিকে আঙুল ওঠালে আঙুল নামিয়ে দেব।’’ আঙুল নামানো মানে ঠিক কী, তা আর খোলসা করেননি তিনি।

Biman Bose CPM Rally Industry বিমান বসু
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy