মানিককে গ্রেফতারের পাঁচ যুক্তি দিল ইডি।
সুপ্রিম কোর্ট রক্ষাকবচ দিয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে। তার পরেও কেন তাঁকে গ্রেফতার করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি), তা নিয়ে শীর্ষ আদালতেই প্রশ্ন তুলেছিলেন মানিকের আইনজীবী মুকুল রোহতগি। তার প্রেক্ষিতেই সোমবার হলফনামা দিয়ে তাঁকে গ্রেফতারের কারণ জানালেন ইডির আইনজীবী তথা কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা।
সোমবার আদালতে ২৪ পাতার হলফনামা জমা দিয়েছেন ইডির আইনজীবী। ওই হলফনামায় মূলত পাঁচটি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পক্ষ থেকে। ইডির প্রথম যুক্তি, শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নাম জড়িয়েছে। অর্পিতার বাড়ি থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, ওই অর্থের সঙ্গে প্রাথমিকে নিয়োগ মামলা জড়িয়ে থাকতে পারে। মানিক যে হেতু প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি ছিলেন, তাই এ কথা কখনওই জোর দিয়ে বলা যায় না যে, মানিক জড়িত নন। তাঁকে সে ব্যাপারে প্রশ্নও করা হয়েছে। কিন্তু তিনি এড়িয়ে গিয়েছেন। যথাযথ উত্তর দেননি।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দ্বিতীয় যুক্তি, মানিকের নামে ইতিমধ্যেই প্রচুর বেনামী সম্পত্তির হদিস মিলেছে। বিপুল সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে তাঁর পুত্র শৌভিক ভট্টাচার্যের নামেও। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মানিকের সম্পত্তির হলফনামাও চেয়েছেন। তবে এখনও তা আদালতে জমা পড়েনি। কিন্তু মানিকের বিরুদ্ধেও আর্থিক তছরুপের অভিযোগ রয়েছে। ইডির গোয়েন্দারা সে ব্যাপারে তদন্ত করছেন।
ইডির আইনজীবীর তৃতীয় যুক্তি, তদন্তে উঠে এসেছে, টাকার বদলে মানিক চাকরি দিয়েছেন। সেই সব অভিযোগের তদন্তও জরুরি। ইডির চতুর্থ যুক্তি, সুপ্রিম কোর্ট মানিককে অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ দিয়ে বলেছিল, তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে। কিন্তু মানিক তা করেননি। এ জন্য যা যা পদক্ষেপ করার, করা হয়েছে। ইডির আইনজীবীর সর্বশেষ যুক্তি, শীর্ষ আদালত মূলত সিবিআইয়ের মামলায় মানিককে রক্ষাকবচ দিয়েছিল। কিন্তু ইডির মামলায় নয়। তা ছাড়া, মানিকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের তদন্ত করছে সিবিআই। আর ইডি তদন্ত করছে আর্থিক তছরুপের ভিত্তিতে। পাশাপাশি, দু’টি তদন্তকারী সংস্থার তদন্ত প্রক্রিয়াও আলাদা। এই মামলায় তদন্ত করে বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি হাতে পেয়েছে ইডি।
ইডির সওয়ালের পর সোমবার আদালত অবশ্য কোনও নির্দেশ দেয়নি। ফলে মানিকের ভবিষ্যৎ কী হতে চলেছে, তার জন্য মঙ্গলবারের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। কারণ মঙ্গলবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy