পুলিশের মহিলা অফিসারের বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ কেন দুর্নীতিদমন আইনের আওতায় তদন্ত হবে না? তারকেশ্বর থানার মামলায় প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, ‘‘দুর্নীতিদমন আইনে কেন ওই অভিযোগের তদন্ত হবে না? অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারকে শো কজ় করা হলেও, সেই নথিতে ঘুষের কথা কেন উল্লেখ নেই?’’
উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ, অভিযুক্তকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে না রাজ্য যে দাবি করছে, তা সঠিক। কিন্তু উল্টো দিকে রাজ্য ওই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে কোনও সদর্থক পদক্ষেপও করছে না।
হুগলি জেলার তারকেশ্বরে বিল্টু হাজরা নামে এক ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে প্রতিবেশীর গন্ডগোল হয়। বিল্টু তারকেশ্বর থানায় অভিযোগ জানান। কিন্তু তাঁর দাবি, অভিযোগ পেয়েও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। উল্টে বিল্টুকেই মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়। তিনি জানতে পারেন, গোটা ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে পুলিশেরই হাত রয়েছে। পরে থানার তদন্তকারী অফিসারের একটি অডিয়োও প্রকাশ্যে আসে। অভিযোগ, সেখানে শোনা যায়, তারকেশ্বর থানার মহিলা অফিসার মোটা অঙ্কের ঘুষ নেওয়ার কথা বলছেন। এর পরেই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন ইঞ্জিনিয়ার। গত মঙ্গলবার ওই মামলার শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের কাছে নতুন করে রিপোর্ট চায়।
বৃহস্পতিবার রাজ্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ওই অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তও শুরু করা হয়েছে। কিন্তু আদালের বক্তব্য, গাফিলতি হয়েছে বলে রাজ্য যে যুক্তি খাঁড়া করছে, তা মানা যায় না। বিচারপতি বসাকের মন্তব্য, ‘‘এটা কোনও গাফিলতি নয়। ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ। পুলিশের একজন অফিসার সাধারণ মানুষের বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। অথচ এই বিষয়টি খুবই হালকা ভাবে নিচ্ছে রাজ্য।’’
হাই কোর্টের নির্দেশ, এ বিষয়ে আগামী সোমবার রাজ্যকে অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। তা দেখে আদালত নির্দেশ জারি করবে।