সিবিআই অফিসারের পরিচয় দিয়ে একই দিনে ফোন করা হয়েছিল রাজ্যের প্রাক্তন ও বর্তমান দুই মন্ত্রীকে। রোজ ভ্যালি কাণ্ডে যে দিন তাপস পাল গ্রেফতার হয়েছেন, সে দিনই দু’জনের মোবাইলে ওই ফোন যায়। এক জন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। অন্য জন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী, বর্তমানে শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। দু’জনেই সিবিআই অফিসারের পরিচয়ের সত্যাসত্য নিয়ে সংশয়ে।
যে নম্বর থেকে এবং যে নাম বলে ফোন করা হয়েছিল, তার সঙ্গে সিবিআইয়ের কোনও যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন গৌতমবাবু। অশোকবাবুর দাবি, ফোনটি যে সিবিআই থেকে আসেনি, সেই ব্যাপারে তিনি মোটামুটি নিশ্চিত। তাঁর সন্দেহ, ‘‘কেউ টাকা আদায় করার জন্যই ফোন করে থাকতে পারে। আমি ওটা নিয়ে বেশি মাথা ঘামাতে চাই না।’’ সিবিআইয়ের একটি সূত্রের দাবি, যে নামে দুই মন্ত্রীকে ফোন করা হয়েছিল বলে শোনা যাচ্ছে, সেই নামে তাঁদের কোনও অফিসার নেই। কাউকে জেরার দরকার পড়লে নির্দিষ্ট বিধি মেনেই তাঁরা এগোন বলে সিবিআইয়ের সূত্রটি জানিয়েছে।
৩০ ডিসেম্বর তাপস গ্রেফতার হন। সে দিন দিল্লি থেকে কলকাতা ফিরেছিলেন গৌতমবাবু। মন্ত্রী জানান, সিবিআই অফিসার পরিচয় দিয়ে একজন ফোন করে তিনি কোথায় রয়েছেন জানতে চান। গৌতমবাবুর সঙ্গে দেখা করতে চান এবং সঙ্গে বাহিনী রয়েছে বলেও দাবি করেন। তার পরেই ও প্রান্ত থেকে ফোন কেটে দেওয়া হয় বলে গৌতমবাবু জানান। অশোকবাবুও জানান, সিবিআই অফিসার পরিচয় দিয়ে এক জন ফোন করে তাঁর স্বাস্থ্যের খোঁজখবর শুরু করেন। অশোকবাবু বলেন, ‘‘তা শুনেই ফোন কেটে দিই। এটা টাকা আদায়ের কোনও ছক বলে সন্দেহ হয়।’’ তার পরে প্রায় ১০ দিন কেটে গিয়েছে। এত দিন পরে ওই ফোনের বিষয়টি সামনে এল কেন?
তৃণমূল সূত্রের খবর, প্রভাবশালী মন্ত্রীকে ডাকার সম্ভাবনা নিয়ে চর্চা শুরু হতেই ওই ফোন আসল না ভুয়ো, তা নিয়ে খোঁজ শুরু হয়। একই দিনে দু’জনের কাছে ফোনের সত্যাসত্য নিয়ে বার্তা চালাচালি শুরু হয়। প্রাক্তন
ও বর্তমান দুই মন্ত্রীই সিবিআইয়ের নামে ফোনের আড়ালে অসৎ উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে মনে করছেন।
উত্তরবঙ্গে রোজ ভ্যালির কর্মকাণ্ড বাড়ানোর ক্ষেত্রে একাধিক প্রভাবশালীর নাম উঠেছে। সেই প্রসঙ্গে এ দিন গৌতমবাবু বলেন, ‘‘সিবিআই বা ইডি, যে কারও মুখোমুখি হতে প্রস্তুত। চল্লিশ বছরের বেশি স্বচ্ছতার সঙ্গে রাজনীতি করছি। কেউ আঙুল তুলতে পারবে না।’’ অশোকবাবু দাবি করেন, বামপন্থীদের সঙ্গে প্রতারণা চক্রের যোগসাজশ কোনও দিনই ছিল না। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা নিজেকে স্বচ্ছ বলে হইচই করছেন, তাঁদের বিচার মানুষই করবেন। আমরা ঠাকুরঘরে কে, আমি তো কলা খাই না গোছের কথাবার্তা বলি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy