পুণের বিশ্ববিদ্যালয়ের যে আইনের ছাত্রীকে গুরুগ্রাম থেকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ, তাঁকে অন্তর্বর্তী জামিন দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার ১০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে তাঁকে অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হয়েছে। আদালত জানিয়েছে, এখনই ওই তরুণীকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন নেই। তবে তাঁকে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে। জমা রাখতে হবে পাসপোর্টও।
‘অপারেশন সিঁদুর’ পরবর্তী সময়ে সমাজমাধ্যমে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য ওই তরুণীর বিরুদ্ধে কলকাতার একটি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। দিল্লির বাসিন্দা ওই তরুণী পুণের বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তরুণীকে গুরুগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজা বসুচৌধুরীর বেঞ্চে বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি হয়। আদালতের পর্যবেক্ষণ, আপাতত তরুণীকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের কোনও প্রয়োজন নেই। পড়াশোনার কাজে তিনি পুণেতে যেতেও পারবেন। তবে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে তাঁকে।
আরও পড়ুন:
এর আগে এই মামলায় রাজ্যের কাছে কেস ডায়েরি তলব করেছিল হাই কোর্ট। জানিয়েছিল, তরুণীর বিরুদ্ধে অন্য থানায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত স্থগিত থাকবে। নতুন করে আর কোনও মামলাও দায়ের করা যাবে না। তবে সেই সঙ্গে আদালত এ-ও জানিয়েছিল, বাক্স্বাধীনতার অধিকার থাকলেও কোনও সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে মন্তব্য করা যায় না।
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার এবং তার পরবর্তী সময়ে পাকিস্তানে ভারতের সেনা অভিযান ‘অপারেশন সিঁদুর’ গোটা দেশকে আলোড়িত করেছে। ‘সিঁদুর’ অভিযানের পর ভারত এবং পাকিস্তান পারস্পরিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছিল, যা চলেছে টানা চার দিন। গত ১০ মে দুই দেশ সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়। এই আবহে পুণের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই আইনের ছাত্রী যে পোস্ট করেছিলেন, তাতে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানোর আশঙ্কা করছিল কলকাতা পুলিশ। সেই অনুযায়ী ভারতীয় ন্যায় সংহিতার সংশ্লিষ্ট ধারায় তরুণীর বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়। শান্তিভঙ্গের চেষ্টা, ইচ্ছাকৃত ভাবে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত এবং উস্কানিমূলক বিবৃতির অভিযোগেও মামলা রুজু হয় তাঁর বিরুদ্ধে। সেই মামলায় আপাতত তরুণীর অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করা হল।