E-Paper

বাঁধ মেরামতিতে নামলেন মহিলারাও

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:০১
নদী বাঁধ মেরামতিতে হাত লাগিয়েছেন সাগরের বোটখালি গ্রামের মহিলারা

নদী বাঁধ মেরামতিতে হাত লাগিয়েছেন সাগরের বোটখালি গ্রামের মহিলারা —নিজস্ব চিত্র।

দুর্যোগের পূর্বাভাসে নদী তীরবর্তী এলাকা থেকে সাধারণ মানুষকে সরিয়ে আনার কাজ শুরু হয়েছিল বুধবার রাত থেকেই। বৃহস্পতিবারেও দফায় দফায় উপকূলের বিভিন্ন এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে ত্রাণ শিবিরে নিয়ে আসা হয়। সাগর, পাথরপ্রতিমা, নামখানা, গোসাবা, কাকদ্বীপ, কুলতলির বিভিন্ন এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সব মিলিয়ে জেলার প্রায় ৫০ হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে।

সকাল থেকেই ঝিরিঝিরি বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া ছিল উপকূলীয় এলাকাগুলিতে। নদী-সমুদ্র ছিল উত্তাল। রাত গড়াতে বৃষ্টি বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে হাওয়ার দাপট। প্রশাসন জানিয়েছে, সুন্দরবনের বিচ্ছিন্ন দ্বীপগুলিতে বাড়তি নজরদারি চালানো হচ্ছে। উপকূলে ৩৫টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে এনডিআরএফ-এর তিনটি, এসডিআরএফ-এর ২টি দল এবং প্রশিক্ষিত ডুবুরিদের। গাছ ভেঙে পড়লে পরিষ্কার করার জন্য প্রস্তুত ৪৭০টি দল। জেলা, মহকুমা ও ব্লকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।

দিনভর সেচ দফতরের তরফে বাঁধ মেরামতের কাজ হয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। তবে সেচ দফতরের কাজ নিয়ে এ দিনও প্রশ্ন উঠেছে। কোথাও কোথাও স্রেফ প্লাস্টিক দিয়ে মাটির বাঁধ ঢেকে দায় সারতে দেখা যায় প্রশাসনকে। অনেক জায়গায় দেখা যায়, এলাকার মানুষই বেরিয়ে এসে বাঁধের কাজে হাত লাগিয়েছেন। সাগরের ধবলাট পঞ্চায়েতের বোটখালি এলাকায় দেখা গেল, গ্রামের মহিলারাই বাঁধ মেরামত করছেন। বাঁধের কাজে নামা স্থানীয় বাসিন্দা প্রতিমা জানা বলেন, “প্রশাসনকে বার বার বলেও কোনও কাজ হয়নি। বেহাল বাঁধ মেরামতিতে প্রশাসনের ঢিলেমি দেখে আমরা নিজেরা কাজে নামি। বাড়িতে ছোট ছোট ছেলেমেয়ে আছে, তাদের কথা ভেবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” নামখানা ব্লকের দশ মাইল বাজারে ধরা পড়ল আরও এক ছবি। দেখা গেল, মাছ ধরার ট্রলারগুলি পাড়ে এনে কাছি দিয়ে বেঁধে রাখছেন মৎস্যজীবীরা। এ দিকে বকখালি সমুদ্রপাড়ে গিয়ে দেখা গেল, বেঁধে রাখা হয়েছে দোকানঘরগুলিকেও।

সকাল থেকে সাগরের বিভিন্ন জায়গায় নদী বাঁধ পরিদর্শন করতে দেখা যায় সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরাকে। সন্ধ্যায় বিভিন্ন ফ্লাড শেল্টারে গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তাঁদের খাবার পরিবেশনও করেন। রাতভর সাগরে থেকে পরিস্থিতির উপরে নজর রাখবেন বলে জানান তিনি। কাকদ্বীপ, নামখানা, পাথরপ্রতিমা এলাকায় নজরদারি করতে সচিব পর্যায়ের আধিকারিক মণীশ জৈনকে পাঠানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। সেচ দফতরের আধিকারিকেরাও থাকছেন। এ দিন সকাল থেকে মথুরাপুরের সাংসদ বাপি হালদার বকখালি-সহ নামখানা ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় নদী বাঁধ পরিদর্শন করেছেন।

জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলেন, “বৃহস্পতিবার সারা রাত আধিকারিকেরা নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করবেন। আমিও সারারাত কন্ট্রোল রুমে থাকব। প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা করার জন্য।” বঙ্কিম হাজরা বলেন, “কপিলমুনি মন্দিরের সামনে ভাঙন নিয়ে উদ্বেগে আছি। প্রশাসন সব দিক থেকেই প্রস্তুত। আমিও সারারাত জেগে থাকব।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Cyclone Dana Cyclone

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy