‘ছোট পোশাক’ পরে মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন না মহিলারা। এমনই নিষেধাজ্ঞা জারি হল দার্জিলিঙের মহাকাল মন্দিরে। চলতি সপ্তাহেই এই নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার পরেই জোর বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
গত সপ্তাহে বৈঠকে বসেছিল মন্দির কমিটি। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার পর সোমবার মন্দিরের বাইরে নির্দেশিকা জারি হয়। সাঁটানো হয় পোস্টারও। তবে কেউ ছোট পোশাক পরে এলে, তাঁদের যাতে ফিরে যেতে না হয়, তা মাথায় রেখে বিকল্প ব্যবস্থাও করেছে মন্দির কমিটি। মন্দিরের বাইরে রাখা থাকবে চুড়িদার, ঘাগরা। স্বল্প মূল্যে তা ভাড়া নিতে পারবেন দর্শনার্থীরা।
মহাকাল মন্দিরের সহ-সভাপতি মদন সুব্বা বলেন, ‘‘আমরা আলোচনার পরেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ অনেকে এমন ছোট কাপড় পরে আসেন, যা মন্দিরের পরিবেশ নষ্ট করে। দৃষ্টিকটু লাগে। এই সপ্তাহেই এই নিয়ম চালু করা হয়েছে। পুণ্যার্থীদের জন্য একটি ডোনেশন কাউন্টারে ঘাগরা বা চুড়িদার রাখা হয়েছে। যাঁরা ভুলবশত ছোট কাপড় পরে আসবেন, তাঁরা ডোনেশন কাউন্টার থেকে ওই পোশাক ভাড়া নিতে পারবেন।’’
জিটিএ-র মুখপাত্র শক্তিপ্রসাদ শর্মা বলেন, ‘‘মন্দির কমিটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই বিষয়ে কিছু বলার নেই।’’ শিলিগুড়ি কলেজের অধ্যাপিকা বিদ্যাবতী আগরওয়াল বলেন, ‘‘মন্দির কমিটি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটাকে স্বাগত জানাই। কিছু জায়গায় মানানসই কাপড় পরতে পরিধান হয়। এতে বিতর্কের কিছু নেই।’’
শিলিগুড়ি সূর্য সেন কলেজের সহকারী অধ্যাপিকা সঞ্চিতা দাসের বক্তব্য, ‘‘যদি নারীবাদের কথা হয়, সে ক্ষেত্রে আমি কী পোশাক পরব, সেটা আমার ব্যক্তিগত বিষয়। তৃতীয় ব্যক্তির মতামতের কোনও বিষয় নেই সেখানে। কিন্তু কোনও ধর্মীয় স্থানে সেখানকার সংস্কৃতিকে প্রাধান্য দিয়ে তাদের নিয়ম-নির্দেশিকা মানাই যায়। বাড়িতে ছোট পুজো হলে সেখানেও আমরা ট্র্যাডিশনাল পোশাক পরতেই পছন্দ করি। আবার পাশ্চাত্যের অনেক মন্দির রয়েছে, যেখানে প্রবেশ করতে গেলে নির্দিষ্ট পোশাক পরেই প্রবেশ করতে হয়। কাজেই ভারতীয় নাগরিক হিসাবে আমাদের সংস্কৃতিকে প্রাধান্য দিই এবং ফেমিনিজ়মকেও সঙ্গে নিয়েই চলি।’’
অন্য দিকে, সম্প্রতি পাহাড় সফরে গিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সফরের শেষ দিন মহাকাল মন্দিরে পুজো দিয়েছিলেন। পুজো দিয়ে বেরিয়ে মহাকাল মন্দিরে বিশেষ ভাবে সক্ষম ও বয়স্কদের জন্য ব্যাটারিচালিত গাড়ির ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেইমতো মন্দির কমিটি ইতিমধ্যে একটি গাড়ি কিনেছে। খুব দ্রুত পুণ্যার্থীদের জন্য পরিষেবা চালু করা হবে। তার ভাড়া হবে ১০-২০ টাকা। মন্দিরের ওঠার জন্য একটি আলাদা রাস্তা রয়েছে। সে দিক দিয়ে ওই গাড়িটি চলবে। একটি গাড়িতে ছ’জনের বসার ব্যবস্থা থাকবে। খুব দ্রুত আরও একটি গাড়ি কেনা হবে।