বছরের অন্যান্য দিন চিকিৎসকদের কথা শুনেই চলতে হয় তাঁদের। কিন্তু বছরের একটা দিন ওঁদের কথা শুনে চলেন চিকিৎসকেরা। দিনটি হল বিশ্ব লুপাস ডে।
মঙ্গলবার ছিল সেই দিন। চল্লিশ জন লুপাস রোগী ও তাঁদের পরিবারকে নিয়ে আশুতোষ জন্মশতবার্ষিকী হলে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল লুপাস রোগীদের নিয়ে কাজ করা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
এই অনুষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তা ছিলেন এসএসকেএম হাসপাতালের রিউম্যাটোলজি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক অলোকেন্দু ঘোষ।
সিস্টেমিক লুপাস এরিথেমেটোসাস বা সংক্ষেপে লুপাস হল একধরনের বাত যা কখনও কখনও প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। কারণ শরীরের বিভিন্ন গ্রন্থি ছাড়াও হার্ট, কিডনি বিকল করে দিতে পারে এই রোগ। এই রোগ প্রভাব ফেলে মস্তিষ্ক এবং ফুসফুসেও। ঘন ঘন জ্বর, চামড়ায় লাল রঙের র্যাশ এবং বিভিন্ন গাঁটে ব্যথা লুপাসের উপসর্গ। পশ্চিমবঙ্গে প্রতি এক হাজার জনে তিন জন এই রোগে আক্রান্ত হন। প্রতি ১০০ জন আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যু হয়
১০ জনের।
সারা বছরই এই জটিল রোগে আক্রান্ত মানুষগুলিকে চিকিৎসকদের পরামর্শ মতোই চলতে হয়। এ দিন অবশ্য তাঁরা দিনটা কাটালেন একটু অন্যরকম ভাবে। এ দিন তাঁরা কেউ গান গাইলেন, কেউ করলেন আবৃত্তি, কেউ বা আবার মেতে উঠলেন নাচের ছন্দে। মনের আনন্দে চিকিৎসকদের তাঁরা জানান, কী কী করতে পারেন তাঁরা, কী করতে ভাল লাগে।
এ দিনের অনুষ্ঠানকে অবশ্য চিকিৎসকেরা শুধুই আনন্দ, হই-হুল্লোড়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখেননি। এ দিন এক সচেতনতামূলক আলোচনাচক্রেরও আয়োজন করা হয়। আলোচনার বিষয় ছিল এই রোগে আক্রান্ত গর্ভবতী মায়েদের কী করা উচিত, যে সব শিশুরা এই সমস্যায় ভুগছে তাদের কী কী পরামর্শ মেনে চলা দরকার ইত্যাদি বিষয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায়, সুপর্ণা গুহ, সুভাষ বিশ্বাস প্রমুখ।
অলোকেন্দুবাবু এ দিন বলেন, ‘‘সারা বছর মানুষগুলি বাঁধাধরা জীবন কাটান। একটা দিন অন্যরকম ভাবে কাটিয়ে ওঁদের মন ভাল থাকবে, এটা ভেবেই ভাল লাগছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy