Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
Mamata Banerjee

Bengal Politics: রাজ্যসভার দুই খালি আসনে কাদের পাঠাবেন মমতা, জল্পনা জোরালো হচ্ছে তৃণমূলের অন্দরে

মন্ত্রী মানসকে কি বিধায়ক পদে ইস্তফা দিইয়ে আবার রাজ্যসভায় পাঠানো হবে? রাজ্যসভায় কি যেতে পারেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিন্‌হা?

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২১ ১১:১২
Share: Save:

বিধানসভা ভোটের আগে দীনেশ ত্রিবেদী নাটকীয় ভাবে সাংসদ পদে ইস্তফা দিয়ে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপি-তে। সাংসদ মানস ভুঁইয়া লড়েছিলেন বিধানসভা ভোটে। সবং থেকে তিনি জিতেছেন। মন্ত্রীও হয়েছেন। রাজ্যে মন্ত্রিত্ব থাকলে তাঁকেও রাজ্যসভার পদ ছেড়ে দিতে হবে। ফলে সংসদের উচ্চকক্ষে তৃণমূলের দু’টি রাজ্যসভা আসন খালি হওয়ার সম্ভাবনা। তার মধ্যে দীনেশের আসনটি তো খালি হয়েই গিয়েছে ইতিমধ্যে।

অতএব, তৃণমূলের অন্দরে প্রত্যাশিত ভাবেই জল্পনা শুরু হয়েছে— ওই দুই আসনে কাকে পাঠাবেন দলনেত্রী মমতা। মন্ত্রী মানসকে কি তাঁর বিধায়ক পদে ইস্তফা দিইয়ে আবার রাজ্যসভায় পাঠানো হবে? নাকি তাঁকে রাজ্যের মন্ত্রী হিসেবেই রেখে তাঁর জায়গায় অন্য কাউকে রাজ্যসভায় পাঠানো হবে। দীনেশের জায়গায় যাঁর নাম তৃণমূলে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি শোনা যাচ্ছে, তিনি প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিন্‌হা। ভোটের আগে এই প্রবীণ নেতা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। কলকাতায় এসে বিজেপি-বিরোধী প্রচার তো বটেই, নেটমাধ্যমেও তিনি বিজেপি-বিরোধিতার বিষয়ে অত্যন্ত সক্রিয়। বস্তুত, নরেন্দ্র মোদীকে রাজনৈতিক ভাবে আক্রমণ করার তালিকায় যশবন্তের নাম প্রথমদিকেই থাকবে।

তবে তৃণমূলেরই একটি সূত্রের খবর, যশবন্ত নিজে তাঁর ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছেন, রাজ্যসভা সাংসদের পদের জন্য তাঁর কোনও মোহ নেই। তিনি চান নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ জুটিকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশের হাল ফেরাতে। তবে যশবন্ত যা-ই বলুন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন মমতাই। সে তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠানো হোক বা না-পাঠানো হোক। রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে দীনেশ য়খন ইস্তফা দিয়েছিলেন, তখন তাঁর মেয়াদের ছ’বছরের মধ্যে মাত্রই এক বছর অতিবাহিত হয়েছে। ফলে তাঁর জায়গায় যিনি রাজ্যসভায় যাবেন, তাঁর হাতে পাঁচ বছর সময় থাকবে। সে তিনি যশবন্ত হোন বা অন্য কেউ।

জল্পনা তৈরি হয়েছে মানসের রাজ্যসভা সাংসদ পদ নিয়েও। মানসকে রাজ্যসভায় রেখে দিয়ে সদ্য মমতাকে ভবানীপুর কেন্দ্র ছেড়ে-দেওয়া শোভনদেবকে সবংয়ে দাঁড় করানো হবে কি না, তা নিয়েও জল্পনা চলছে। তবে তৃণমূলের একাংশ বলছে, মানস রাজ্যেই থাকবেন। তা হলে কি শোভনদেবকে তাঁর জায়গায় রাজ্যসভায় পাঠানো হবে? তৃণমূলের শীর্ষনেতাদের একাংশের অভিমত, প্রবীণ নেতা শোভনদেব জাতীয় স্তরের চেয়ে রাজ্যের পক্ষেই ভাল। তা ছাড়া মানস সবং ছেড়ে দিলে ওই আসনের দাবিদার হতে পারেন তাঁর স্ত্রী গীতা। যিনি মানস কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে গিয়ে পর্যায়কত্রমে রাজ্যসভায় যাওয়ার পর সবং থেকে উপনির্বাচনে লড়ে জিতেছিলেন।

তাহলে শোভনদেবকে কোন আসন দেওয়া হবে? খড়দহ? তৃণমূলের অভিজ্ঞরা আবার মনে করছেন, নিজের পুরোন আসন খড়দহ থেকে অমিত মিত্রকেই আবার বিধানসভায় আনা হতে পারে। কারণ, ইতিমধ্যেই তিনি অর্থমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে ফেলেছেন। ফলে ছ’মাসের মধ্যে তাঁকে কোনও একটি আসন থেকে জিতে আসতেই হবে। সে ক্ষেত্রে খড়দহ তাঁর পক্ষে নিরাপদতম আসন হতে পারে। কারণ, প্রথমত, ওই আসনটি ২৮ হাজারেরও বেশি ভোটে জিতেছে তৃণমূল। কিন্তু জয়ী প্রার্থীর করোনায় মৃত্যু হয়েছে ফল প্রকাশের আগেই। সেদিক দিয়ে অমিতের পক্ষে ‘আদর্শ’ হতে পারে খড়দহ। শাসক শিবিরের এক প্রথমসারির নেতার বক্তব্য, ‘‘অমিত’দার যা শরীরের অবস্থা, তাতে তিনি ঘুরে ঘুরে প্রচার করতে পারবেন বলে মনে হয় না! সেই ধকল নিতে পারবেন না বলেই তিনি এ বার ভোটেও দাঁড়াননি। কিন্তু খড়দহ তাঁর পুরোন আসন। পর পর দু’বার জিতেছিলেন। এ বার অসুস্থতার জন্য ভোটে দাঁড়ানি। ফলে তিনি যদি ওই আসনে প্রার্থী হয়ে ভার্চুয়াল প্রচারও করেন, তা হলেও জিতবেন। তা ছাড়া, তাঁর হয়ে মমতা’দিও প্রচারে যেতে পারেন।’’

রাজ্যে বিধান পরিষদ তৈরি করে অমিতকে সেখান থেকে আনা হতে পারে বলে দলের একটি অংশের দাবি। কিন্তু অন্য একটি অংশ আবার জানাচ্ছে, এত দ্রুত বিধান পরিষদ গঠন করা সম্ভব নয়। কারণ, বিষয়টি সংসদের দু’টি কক্ষেই পাস করাতে হয়। বিষয়টি সময় সাপেক্ষ তো বটেই, পরিস্থিতি বিচারেও তৃণমূলের পক্ষে অনুকূল নয়। ফলে অমিতকে বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই জিততে হবে।

অতঃপর তৃণমূলের অন্দরে প্রশ্ন— নদিয়ার শান্তিপুর আসনে উপ নির্বাচনে কাকে প্রার্থী করা হবে! কারণ, ওই আসনে জয়ী বিজেপি-র সাংসদ জগন্নাথ সরকার বিধায়ক পদ ছেড়ে দিয়েছেন। ফলে সেখানে উপ নির্বাচন হবেই। কিন্তু ওই আসনে তৃণমূলের প্রার্থী অজয় দে-র মৃত্যু হয়েছে করোনায়। ফলে তৃণমূলকে সেখানে নতুন প্রার্থী দিতে হবে। তবে প্শাপাশিই প্রণিধানযোগ্য যে, ওই আসনে তৃণমূল প্রায় ১৬ হাজার ভোটে হেরেছিল। ফলে সেখানে ওজনদার প্রার্থী দেওয়া উচিত বলে মনে করছেন নেতাদের একাংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Rajya Sabha Politics
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE