Advertisement
০৪ মে ২০২৪
BJP

কোর্টের থাপ্পড় খেয়ে মানল প্রশাসন, কটাক্ষ দিলীপের, জঙ্গলের ভাষা, পাল্টা পার্থ

বৃহস্পতিবার সকালে ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে জেলা সভাপতিদের নিয়ে বৈঠক করেছেন রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।

পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও দিলীপ ঘোষ।—ফাইল চিত্র।

পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও দিলীপ ঘোষ।—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৮ ২০:০৪
Share: Save:

সপ্তাহ দুয়েকের ‘টেনশন’ কাটিয়ে স্বস্তিতে বঙ্গ বিজেপি। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্ট ‘গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা’র অনুমতি দিয়ে দিয়েছে বিজেপি-কে। দলের তরফে মামলা সংক্রান্ত নানা বিষয়ের সমন্বয়ে ছিলেন যিনি, উচ্ছ্বসিত সেই জয়প্রকাশ মজুমদারও। কণ্ঠস্বরে স্বস্তি রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের। আর দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে কলকাতা হাইকোর্টকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্ব। তবে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিনও দাবি করেছেন যে, বিজেপি রোজ অশান্তি বাধানোর চেষ্টা করছে।

বৃহস্পতিবার সকালে ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে জেলা সভাপতিদের নিয়ে বৈঠক করেছেন রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। তখনও হাইকোর্টের রায় আসেনি। তাই সব রকম পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এগনোর বিষয়েই জেলা সভাপতিদের বার্তা দেন দিলীপ। দিল্লির বৈঠকে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যে বার্তা দিয়েছেন, জেলা সভাপতিদের সে বিষয়েই মূলত অবহিত করা হয় ওই বৈঠকে। তবে দুপুরে হাইকোর্ট রায় দিতেই দিলীপ উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়া দেন।

‘‘আমরা তো বার বার আলোচনার কথাই বলছিলাম। আমাদের কর্মসূচির বিষয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করেই সমস্যার সমাধান করতে চাইছিলাম। কিন্তু প্রশাসন কিছুতেই আমাদের প্রস্তাব মানতে রাজি ছিল না। এ বার হাইকোর্টের থাপ্পড় খেয়ে মানতে বাধ্য হল,’’—এই রকম কড়া ভাষাতেই এ দিন রাজ্য প্রশাসনকে কটাক্ষ করেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ

আরও পড়ুন: বিষ ছড়িয়ে পড়েছে ভারতীয় সমাজে, সন্তানদের জন্য ভয় হয়: নাসিরুদ্দিন​

দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ও দৃশ্যতই খুশি। তবে বেশ কিছুটা সংযত প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন কৈলাস। তিনি বলেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে প্রতিদিন গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা হচ্ছে। সেই কারণেই আমরা গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা করতে চাইছি। কলকাতা হাইকোর্টকে এই রায়ের জন্য ধন্যবাদ। এই জয়ের জন্য বাংলার মানুষকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।’’ কলকাতা হাইকোর্টের রায় জানার পরে উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। নয়াদিল্লির বিজেপি সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে কলকাতা হাইকোর্টকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে বিজেপির তরফে।

তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিনও অবশ্য অশান্তির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘দিলীপ ঘোষরা জঙ্গলের ভাষায় কথা বলছেন। জঙ্গলের মানুষরাও ওই ভাষায় কথা বলেন না। এটা জঙ্গলের রাজত্ব তো নয়! ওঁরা ভালকে খারাপ করছেন।’’ হাইকোর্টের রায় পর্যালোচনা করে প্রশাসন উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেবে বলে পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান।

আরও পড়ুন: হনুমান আসলে মুসলিম! বিতর্কিত মন্তব্য বিজেপি নেতার​

বামেরা অবশ্য দু’পক্ষকেই আক্রমণ করেছেন। বিধানসভার বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী এ দিন বলেন, ‘‘বিজেপি যদি গণতন্ত্র যাত্রা করে, তা হলে আটকানো উচিত নয়। কিন্তু বিজেপি তো এখন বলছে গণতন্ত্র যাত্রা। এর আগে তো রথযাত্রা বলা হচ্ছিল।রাজনৈতিক কর্মসূচির আড়ালে যদি ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক কর্মসূচি পালনের চেষ্টা হয়, তা হলে তো থামাতেই হবে।’’ সুজন চক্রবর্তীর অভিযোগ, রাজ্য সরকার অনেক আগে থেকেই কোমর বেঁধে নামতে পারত এই কর্মসূচি আটকানোর জন্য। হাইকোর্টের রায় বিজেপির পক্ষে যাওয়াকে প্রশাসনিক ব্যর্থতা হিসেবেই দেখছেন তিনি। সুজনের কটাক্ষ, ‘‘কিসের রথ এটা? রথে তো জগন্নাথ ওঠেন? এই রথের জগন্নাথ কে? অমিত শাহ? বলরাম কে? নরেন্দ্র মোদী? তাঁদের মাঝে সুভদ্রা দিদি সাজার জন্য কি কেউ অপেক্ষায় আছেন?’’ বিজেপির এই যাত্রা থেকে যদি সাম্প্রদায়িকতা ছড়ানোর চেষ্টা হয়, তা হলে ‘মানুষ রথ ভেঙে দেবে’ বলে সুজন এ দিন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE