Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কাঁকিনাড়া স্টেশনে দুষ্কৃতী হানা, হত যুবক

হতবাক, শোকস্তব্ধ ভীমপুরের নতুনপাড়ার বাসিন্দারাও। এই পাড়ায় মামাবাড়িতে বড় হয়েছেন সত্যজিৎ ও বিশ্বজিৎ।

বিশ্বজিৎ বিশ্বাস

বিশ্বজিৎ বিশ্বাস

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁকিনাড়া ও শান্তিপুর শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:০২
Share: Save:

মাত্র দেড় দিন আগে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল দাদা-র। খবর পেয়ে শোকে আকুল মায়ের পাশে দাঁড়াতে ভিন রাজ্য থেকে আসছিলেন ছোট ভাই। কিন্তু নদিয়ার ভীমপুরের বাড়িতে পৌঁছনো আর হল না। তার আগেই শুক্রবার গভীর রাতে উত্তর ২৪ পরগনার কাঁকিনাড়া স্টেশনে দুষ্কৃতীদের বোমায় মৃত্যু হল বছর ছাব্বিশের বিশ্বজিৎ বিশ্বাসের। দু’দিনের মধ্যে দুই ছেলেকে হারিয়ে কার্যত বাকরুদ্ধ প্রৌঢ়া তাপসী বিশ্বাস কাঁদার ক্ষমতাও হারিয়েছেন তিনি। থানার বেঞ্চে বসে অস্ফুটে শুধু কয়েক বার বলেছেন, ‘‘ঠাকুর আমার দুই ছেলেই কেড়ে নিলে! তা হলে আমি কেন বেঁচে রইলাম?’’

হতবাক, শোকস্তব্ধ ভীমপুরের নতুনপাড়ার বাসিন্দারাও। এই পাড়ায় মামাবাড়িতে বড় হয়েছেন সত্যজিৎ ও বিশ্বজিৎ। তাঁদের বাবা ছোটবেলায় বাড়ি ছেড়ে দ্বিতীয় বিয়ে করে আন্দামানে চলে গিয়েছিলেন। বিড়ি বেঁধে বহু লড়াই করে ছেলেদের বড় করেছিলেন তাপসী। গত কয়েক বছর ধরে বিহারে গ্রামীণ চিকিৎসক হিসাবে কাজ করতেন তাঁর দুই ছেলে। স্তব্ধবাক নিহত দুই যুবকের দাদু-দিদিমা হরেন্দ্রনাথ ও গিরিবালা মণ্ডল।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রের খবর, বিহারের শ্রীহরপুরে গ্রামীণ চিকিৎসক হিসাবে কাজ করতেন বিশ্বজিৎ। বছর দু’য়েক হল তাঁর সহযোগী হয়েছিলেন দাদা সত্যজিৎ। প্রেমঘটিত কোনও সমস্যার জেরে দিন পাঁচেক আগে হঠাৎ বাড়ি ফেরেন সত্যজিৎ। বৃহস্পতিবার বাড়িতে তাঁর ঝুলন্ত দেহ মেলে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন।

খবর পেয়েই কেশব প্রসাদ নামে এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে ট্রেনে উঠে বসেছিলেন বিশ্বজিৎ। রেলপুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ডাউন মুজফফরপুর প্যাসেঞ্জারে ফিরছিলেন তাঁরা। নৈহাটি স্টেশনে নেমে কৃষ্ণনগর

লোকাল ধরার কথা ছিল। কিন্তু ঘুমিয়ে পড়ায় নামতে পারেননি। রাত সওয়া দু’টো নাগাদ তাঁরা কাঁকিনাড়ায় নামেন। অভিযোগ, সেই সময় তিন দুষ্কৃতী তাঁদের পথ আটকায় এবং টাকা ও ফোন দিতে বলে।

শিয়ালদহের রেল পুলিশ সুপার অশেষ বিশ্বাস জানান, কথা কাটাকাটি-ধাক্কাধাক্কি শুরু হতে কেশব ছুটে পালিয়ে কাঁকিনাড়া জিআরপি ফাঁড়িতে খবর দেন।

কিন্তু তত ক্ষণে প্ল্যাটফর্মে থেকে পড়ে যান বিশ্বজিৎ এবং এক দুষ্কৃতী। সেই সময় ওই দুষ্কৃতীর কাছে থাকা একটি বোমা ফেটে যায়। তাতেই ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় বিশ্বজিতের। জখম হয় সেই দুষ্কৃতীও। তাকে নিয়ে বাকি দু’জন পালিয়ে যায়। তার পরেই রেলপুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। কেশবকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Kankinara
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE