নিহত বিশ্বজিৎ বিশ্বাস। —নিজস্ব চিত্র।
ভিন্ রাজ্যে বসে ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়েছিলেন। তড়িঘড়ি টিকিট কেটে ট্রেনেও উঠে পড়েছিলেন। কিন্তু শেষমেশ আর বাড়ি ফেরা হল না ২১ বছরের বিশ্বজিৎ বিশ্বাসের। শুক্রবার গভীর রাতে দুষ্কৃতীদের বোমাবাজিতে কাঁকিনাড়া স্টেশনে প্রাণ হারাতে হল তাঁকে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাত ২টো বেজে ৪০ মিনিট নাগাদ তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে এসে ঢোকে ডাউন মুজফ্ফরপুর প্যাসেঞ্জার । নদিয়ার ভীমপুরের বাসিন্দা পেশায় হাতুড়ে চিকিৎসক বিশ্বজিৎ বিশ্বাস এবং তাঁর বন্ধু কেশবকুমার ওই ট্রেন থেকে নামেন। সেখানে তাঁদের উপর চড়াও হয় তিন দুষ্কৃতীর একটি দল। টাকা-পয়সা এবং জিনিসপত্র কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে তারা।
অভিযোগ, বাধা দিতে গেলে বিশ্বজিৎ এবং কেশবকে মারধর করে ওই দুষ্কৃতীরা। বোমাও ছোড়ে। সেই বোমার আঘাতেই মৃত্যু হয় বিশ্বজিৎ বিশ্বাসের। বোমার শব্দে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন জিআরপি এবং আরপিএফ-এর উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। তবে দুষ্কৃতীদের নাগাল পাননি তাঁরা।
আরও পড়ুন: সিবিআইয়ের নোটিস পেয়েও এখনও আসেননি রাজীব কুমার, জল্পনা তুঙ্গে
বিশ্বজিতের বন্ধু কেশবকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, বিহারের সেওহর থানা এলাকায় একটি ক্লিনিকে কাজ করতেন বিশ্বজিৎ। দু’দিন আগে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর ভাইয়ের। খবর পেয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় কেশবের সঙ্গে মজফ্ফরপুর থেকে ট্রেনে ওঠেন। নৈহাটি নামার কথা থাকলেও দু’জনেই ঘুমিয়ে পড়ায় তা আর হয়ে ওঠেনি। ঘুম ভাঙলে তাই কাঁকিনাড়ায় নেমে পড়েন। সেখানে কৃষ্ণনগরগামী ট্রেনের অপেক্ষা করছিলেন। তখনই হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা।
ঘটনার সময় বিশ্বজিতের কাছে এক লক্ষের বেশি টাকা, সোনার চেন ছিল বলে জানিয়েছেন তাঁর আত্মীয়রা। কিন্তু বাইরের কেউ তা জানলেন কী ভাবে, তা এখনও পর্যন্ত জানা সম্ভব হয়নি। দুষ্কৃতীরা শুধুমাত্র লুঠের উদ্দেশ্য নিয়েই এসেছিল নাকি আক্রান্তদের সঙ্গে ব্যক্তিগত সঙ্ঘাত ছিল, বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। নিহত বিশ্বজিৎ বিশ্বাস এবং আক্রান্ত কেশবকুমার কোনও অসামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: অমিতের হিন্দি-তত্ত্বের পরই মমতার টুইট: সব ভাষা সমান সম্মানের
যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাজনৈতিক হানাহানির জেরে গত কয়েক মাসে অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে ভাটপাড়া-কাঁকিনাড়া। পুলিশও তাদের আয়ত্তে রাখতে পারে না। স্টেশন চত্বরে নিরাপত্তার কোনও ব্যবস্থাই নেই। এলাকার যা পরিস্থিতি দিনের আলোয় রাস্তাতেও এই ঘটনা ঘটতে পারত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy