অসমে গিয়ে তল্লাশির নামে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে পশ্চিমবঙ্গের আবগারি বিভাগের দুই অফিসারের বিরুদ্ধে। ওই দুই অফিসারকে জনতা মারধর করে থানায় নিয়ে গেলে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে ও পরে ব্যক্তিগত জামিনে ছেড়ে দেয়। এ রাজ্যের অসম সীমানাবর্তী জেলার আবগারি বিভাগের কর্তারা অবশ্য এমন কোনও ঘটনার কথা জানেন না বলে জানিয়েছেন।
রাজ্যের আবগারি দফতরের একটি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, কোচবিহার জেলা লাগোয়াই অসম। সে ক্ষেত্রে অভিযান চালানোর সময়ে সীমানা বুঝতে না পেরে অফিসারেরা চলে যেতে পারেন। তবে এমন ঘটনা ঘটলে দফতরে রিপোর্ট করতে হয়। সে রকম কোনও রিপোর্ট এখনও জমা পড়েনি বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত ন’টা নাগাদ রাজ্যের আবগারি বিভাগের ছয় অফিসার একটি গাড়িতে অসমের ছাগলিয়ার একটি হোটেলে হানা দেন। অফিসারদের অভিযোগ, ওই হোটেল অবৈধ মদ-গাঁজা-ভাং-মাদক ইত্যাদি বিক্রি করা হয় বলে জানতে পেরেই তাঁরা তল্লাশি চালান। হোটেল মালিক অজিত মণ্ডলের পাল্টা অভিযোগ, সেখানে কিছু না পেয়ে ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে ঢুকেও তল্লাশি চালান তাঁরা। ব্যবসায়ীর অভিযোগ, সেখানেও কিছু না পেয়ে ঘুম থেকে ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রীকে তুলে অশ্লীল গালি গালাজ করে তাঁরা ঘরের জিনিসপত্র তুলে ছুড়ে ফেলে দেন।
ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা এসে চালক ও ছয় অফিসারকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। চালক ও চার অফিসার পালিয়ে যান। তবে দু’জনকে ধরে ফেলে মারধর করে জনতা। পুলিশ গিয়ে আহত ওই দুই অফিসারকে উদ্ধার করে ছাগলিয়া ফাঁড়িতে নিয়ে আসে। পরে হালাকুরা প্রাথমিক হাসপাতালে তাঁদের চিকিত্সা করায় ধুবুরি পুলিশ। গভীর রাতে ওই হোটেল মালিক ফাঁড়িতে ওই দুই অফিসারের বিরুদ্ধে এফআইআর করেন। পুলিশ ওই দু’জনকে গ্রেফতার করে। রবিবার সকালেই অবশ্য ব্যক্তিগত জামিনে তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়। ধুবুরির পুলিশ সুপার মৃদুলানন্দ শর্মা জানিয়েছেন, ভিন্ রাজ্য বা জেলা থেকে এসে কোনও অভিযান চালাতে গেলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ প্রশাসনের লিখিত অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হয়। তবে এ ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের ওই দলটি কোনও ধরনের খবর না দিয়েই এসেছিলেন। তিনি বলেন, “আমাদের জানালে আমরাই ওঁদের সাহায্য করতাম। ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগে দুই অফিসারকে জামিনযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করা হয়। পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনার বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।”
আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, যে অফিসারদের নামে অভিযোগ উঠেছে, সে নামে জলপাইগুড়ি বিভাগীয় দফতরের দুই অফিসার রয়েছেন। জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার এই বিভাগের অধীনে রয়েছে। বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক তথা অতিরিক্ত আবগারি কমিশনার পিটি ভুটিয়া বলেন, “অসম পুলিশের তরফে কিছু জানানো হয়নি। ধুবুরিতে অভিযান চালাতে যাওয়ার কথাও নয়। খোঁজ নিয়ে দেখব।” এমন কোনও ঘটনার কথা জানেন না বলে জানিয়েছেন দার্জিলিং জেলার আবগারি দফতরের ডেপুটি সুপার দীনেশ মণ্ডলও। তিনি বলেন, “এমন কোনও ঘটনার কথা জানি না। ধুবুরির পুলিশের তরফেও কিছু জানানো হয়নি। তাই এ বিষয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy