Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

অভিষেকের ক্ষমা চাইলেন দেবাশিসের বাবা-মা

সাক্ষাতের ইচ্ছেটা জানিয়েছিলেন তাঁরাই। আর তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করলেন চড়-কাণ্ডে ধৃত দেবাশিস আচার্যের বাবা-মা। বুধবার বিকেলে কালীঘাটে এসে যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেকের সঙ্গে দেখা করেন দেশবন্ধু ও শিবানী আচার্য। ছেলের হয়ে তাঁর কাছে ক্ষমাও চান।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:২৩
Share: Save:

সাক্ষাতের ইচ্ছেটা জানিয়েছিলেন তাঁরাই। আর তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করলেন চড়-কাণ্ডে ধৃত দেবাশিস আচার্যের বাবা-মা। বুধবার বিকেলে কালীঘাটে এসে যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেকের সঙ্গে দেখা করেন দেশবন্ধু ও শিবানী আচার্য। ছেলের হয়ে তাঁর কাছে ক্ষমাও চান।

পরে অভিষেক জানান, বিকেল তিনটে নাগাদ আচার্য দম্পতি তাঁর কাছে এসেছিলেন। ঘণ্টা খানেক কথা হয়েছে। অভিষেকের কথায়, “ওঁরা আমার কাছে ক্ষমা চাইলেন। জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা করেন। ওঁরা চান প্রশাসন তদন্ত করে সত্য উদ্ঘাটন করুক।” পরে দেশবন্ধুবাবু বলেন, “ছেলে অন্যায় করেছে। ওর হয়ে ক্ষমা চাইতেই দেখা করতে যাওয়া।”

এ দিন দেশবন্ধুবাবু দাবি করেন, তাঁরা নিজেরাই অভিষেকের ফোন নম্বর জোগাড় করে ঠিকানা জেনে কলকাতায় পৌঁছন। তৃণমূল সূত্রে খবর, দলের জেলা নেতারা দেখা করতে যাওয়ার বিষয়টি জানতেন না। অভিষেক এ দিন জানতে চান, ‘কেন সে দিন চণ্ডীপুরে ওই কাণ্ড ঘটাল দেবাশিস’? জবাবে দেশবন্ধুবাবু ও শিবানীদেবী ছেলের মানসিক সমস্যার কথা বলেছেন। দেবাশিসের বোনের সঙ্গেও ফোনে কথা বলেন অভিষেক। আহত দেবাশিসের চিকিৎসা ঠিকমতো হচ্ছে কিনা, আচার্য দম্পতির কাছে খোঁজ নেন অভিষেক। সাহায্যের আশ্বাস দেন। দেশবন্ধুবাবু বলেন, “আমরা অভিষেকের সঙ্গে কথা বলে আশ্বস্ত হয়েছি। আমাদের বিশ্বাস উনি পাশে থাকবেন।” অভিষেক তাঁদের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করিয়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন দেশবন্ধুবাবু।

এ দিকে, চণ্ডীপুরের ঘটনার পরে অভিষেকের নিরাপত্তার ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে বলে মনে করছেন পুলিশের শীর্ষকর্তাদের একাংশ এবং রাজ্য মন্ত্রিসভার কয়েক জন সদস্য। বর্তমানে অভিষেক ‘জেড ক্যাটেগরি’-র নিরাপত্তা পান। এই পরিস্থিতিতে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজতে চায় রাজ্য পুলিশ। কেউ কেউ মনে করছেন, এর ফলে অভিষেককে ‘জেড প্লাস’ নিরাপত্তা দেওয়া হতে পারে। তবে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া রাজ্যের আর কেউ ‘জেড প্লাস’ নিরাপত্তা পান না। এ নিয়ে বিতর্ক এড়াতে তাই অভিষেকের নিরাপত্তা জেড স্তরে রেখেই ঢেলে সাজা হতে পারে বলে জানান রাজ্য পুলিশের এক কর্তা।

চড়-কাণ্ডের পরে এ দিন আলিপুরদুয়ারে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কর্মিসভায় নিরাপত্তা নিয়ে তৎপর ছিলেন নেতৃত্ব। সভা শুরুর আগে নেতাদের মাইকে বলতে শোনা যায়, ‘কেউ মোবাইল হাতে মঞ্চে উঠে ছবি তুলবেন না।’ সে দিন ছবি তোলার অছিলায় মঞ্চে উঠেই অভিষেককে চড় মারেন দেবাশিস।

তবে দেবাশিসকে গণপ্রহারের ঘটনায় বুধবারও কেউ গ্রেফতার হয়নি। মারধরে অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মীদের গ্রেফতারের দাবিতে এ দিন চণ্ডীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন সমাজকর্মী বিপ্লবকুমার চৌধুরী। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের কাছেও অভিযোগ পাঠিয়েছেন তিনি। বিপ্লববাবু প্রশ্ন তুলেছেন, চণ্ডীপুরের জনসভায় তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চড় মারায় দেবাশিস আচার্যের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা হওয়া সত্ত্বেও ওই যুবককে নৃশংসভাবে মারধরের ঘটনায় অনিচ্ছাকৃত খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের করা হল কেন।

তিন দিন পরে এ দিন সকালে অবশ্য থানা ভাঙচুরে অভিযুক্তদের খোঁজ করতে নেমেছিল চণ্ডীপুর থানার পুলিশ। থানা সংলগ্ন বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE