শৌচাগার না থাকায় লম্বা বাসযাত্রায় সমস্যায় পড়েন যাত্রীরা। সে সমস্যা দূর করতে শৌচাগার-সহ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস চালানোর পরিকল্পনা করেছে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা (এসবিএসটিসি)। চলতি মাসের মধ্যেই আসানসোল থেকে দুর্গাপুর হয়ে কলকাতা পর্যন্ত এমন দু’টি বাস পরীক্ষামূলক ভাবে চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন এসবিএসটিসি-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর নবকুমার বর্মণ। তাঁর দাবি, পূর্ব ভারতে এই প্রথম এ ধরনের বাস চলবে।
এসবিএসটিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসখানেকের মধ্যে সংস্থার কেনা ২০টি এবং জেএনএনইউআরএম প্রকল্পে পাওয়া ১০২টি নতুন বাস রাস্তায় নামানো হবে। আসানসোল থেকে কলকাতা পর্যন্ত চারটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস চলবে। যার দু’টিতে শৌচাগার থাকবে। সংস্থার দুর্গাপুরের ডিভিশনাল ম্যানেজার প্রণবকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আপাতত পরীক্ষামূলক ভাবে সেগুলি চালানো হবে। আসানসোল থেকে ছেড়ে দুর্গাপুর সিটিসেন্টার বাসস্ট্যান্ড ছাড়া আর কোথাও এই বাস থামবে না, এমনই পরিকল্পনা রয়েছে। পরে এরকম বাস আরও নামানো হবে জানিয়ে প্রণববাবু বলেন, “অনেক সময়ে আমরা দেখি বয়স্ক মানুষজন শৌচাগার না থাকায় বাসযাত্রায় অসুবিধায় পড়েন। এই বাস চালু হলে সে সমস্যা খানিকটা মিটবে বলে মনে করি।”
দুর্গাপুর সিটি সেন্টার বাস টার্মিনাস থেকে প্রতিদিন মোট ৭৫টি বাস কলকাতা যাতায়াত করে। বেসরকারি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসে আসানসোল থেকে কলকাতা পর্যন্ত ভাড়া সাড়ে তিনশো টাকার আশপাশে। দুর্গাপুর থেকে তা ৩২০ টাকা। দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা সূত্রের খবর, যে চারটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসে শৌচাগার চালু করা হবে, আসানসোল থেকে কলকাতা পর্যন্ত তার ভাড়া হবে ২২০ টাকা। দুর্গাপুর থেকে ১৮০ টাকা। প্রণববাবু বলেন, “অনেক কম খরচে সরকারি এসি বাসে যাওয়া-আসা করতে পারবেন যাত্রীরা।”
এসবিএসটিসি সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, যে সব পুরনো বাস চলছে, সেগুলি তুলে নিয়ে মেরামত করা হবে। পরে উত্তরবঙ্গের যে সমস্ত রুটে বাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, সেখানে এই বাসগুলি চালানো হবে। পিপিপি মডেলে বাস চালিয়ে আগের থেকে সংস্থার অনেক লাভ বেড়েছে বলে এসবিএসটিসি সূত্রে দাবি। সংস্থার একটি সূত্রের খবর, ২০১২ সালে টিকিট বিক্রি ছিল ৬ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা। ২০১৩ সালের মাঝামাঝি পিপিপি মডেল চালু করার ফলে তা দাঁড়ায় ৭ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা। গত দু’মাসে সংস্থা ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকার টিকিট বিক্রি করেছে। দুর্গাপুরের ডিভিশনাল ম্যানেজার প্রণববাবুর দাবি, “এ রকম নানা নতুন পরিকল্পনা করে ৯ কোটি টাকার টকিট বিক্রি করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।”
শৌচাগার-সহ বাস চালু হওয়ার খবরে খুশি আসানসোল-দুর্গাপুরের যাত্রীরা। দুর্গাপুর তিলক রোডের বাসিন্দা, বছর পঞ্চাশের মধুমতি গুহর কথায়, “আমাকে মাঝে-মাঝেই কলকাতা যেতে হয়। শৌচাগার না থাকায় সমস্যায় পড়ি। এই রকম বাস চালু হলে সমস্যা মিটবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy