Advertisement
E-Paper

উপাচার্য ঘেরাও, হামিদের প্রতি সৌজন্যে ত্রুটি

বিক্ষোভ, ঘেরাও বিশ্বভারতীতে নতুন নয়। কিন্তু পড়ুয়া, অধ্যাপক ও কর্মীদের একাংশ বিশৃঙ্খলার আরও এক নজির গড়লেন মঙ্গলবার। সোমবার বিকেল থেকে প্রায় ২১ ঘণ্টা ঘেরাও করে রাখা হল উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের। তাঁদের অভিযোগ, পানীয় জল, খাবার, কিছুই তাঁদের কাছে পৌঁছতে দেননি আন্দোলনকারীরা। সকালেও ঘেরাও জারি থাকায় আশ্রমের দীর্ঘ ঐতিহ্য ভেঙে ছাতিমতলায় ৭ই পৌষের উপাসনা হল উপাচার্যকে ছাড়াই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:৩৬
ছাত্রবিক্ষোভে আটকে গিয়েছিলেন উপাচার্য। তাই বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিকে হেলিপ্যাড থেকে আনতে যাওয়া হল না তাঁর। উপাচার্যের বদলে সেখানে ছিলেন বিশ্বভারতীর নিরাপত্তা আধিকারিক। মঙ্গলবার বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরীর ছবি।

ছাত্রবিক্ষোভে আটকে গিয়েছিলেন উপাচার্য। তাই বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিকে হেলিপ্যাড থেকে আনতে যাওয়া হল না তাঁর। উপাচার্যের বদলে সেখানে ছিলেন বিশ্বভারতীর নিরাপত্তা আধিকারিক। মঙ্গলবার বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরীর ছবি।

বিক্ষোভ, ঘেরাও বিশ্বভারতীতে নতুন নয়। কিন্তু পড়ুয়া, অধ্যাপক ও কর্মীদের একাংশ বিশৃঙ্খলার আরও এক নজির গড়লেন মঙ্গলবার। সোমবার বিকেল থেকে প্রায় ২১ ঘণ্টা ঘেরাও করে রাখা হল উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের। তাঁদের অভিযোগ, পানীয় জল, খাবার, কিছুই তাঁদের কাছে পৌঁছতে দেননি আন্দোলনকারীরা। সকালেও ঘেরাও জারি থাকায় আশ্রমের দীর্ঘ ঐতিহ্য ভেঙে ছাতিমতলায় ৭ই পৌষের উপাসনা হল উপাচার্যকে ছাড়াই। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এ দিন শান্তিনিকেতনে এলেন, কিন্তু তাঁকে অভ্যর্থনা করতে পারলেন না উপাচার্য। মধ্যাহ্নভোজে আপ্যায়ন করতেও পারেননি তিনি।

বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপালও। মঙ্গলবার নেতাজী ভবনে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীকে বিশ্বভারতীতে ঘেরাওয়ের প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি জানি না পড়ুয়ারা কেন ক্রমশ এত বিশৃঙ্খল হয়ে উঠছে। কেন শিক্ষকদের প্রতি তাঁদের সম্মান ক্রমশ কমে আসছে? কেন তাঁরা তাঁদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও নিজেদের শিক্ষাকে বদনাম করছে, আমি জানি না। আমি এ সব পছন্দ করি না।”

যে প্রশ্নে এত চাপ তৈরি করল আন্দোলনকারীরা, পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রে পড়ুয়াদের জন্য বিশ্বভারতীতে আসন সংরক্ষণের সেই দাবি নিয়ে অবশ্য কোনও স্পষ্ট সিদ্ধান্ত হয়নি এ দিন। বেলা ১২টা নাগাদ বিশ্বভারতীর কর্মসমিতিতে রাষ্ট্রপতির মনোনীত সদস্য সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায় উপাচাযের্র সঙ্গে আলোচনার পর ঘোষণা করেন, “পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষায় ভর্তির বিষয়ে আগের ব্যবস্থা বহাল থাকবে। কর্তৃপক্ষ লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।” এর পর ঘেরাও ওঠে।

কিন্তু দুপুরে উপাচার্য সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “পরবর্তী শিক্ষা সমিতির বৈঠক না হওয়া পর্যন্ত, আগের ব্যবস্থা চালু থাকবে।” কার্যনির্বাহী সমিতির পরবর্তী বৈঠক ২৪ জানুয়ারি। শিক্ষা সমিতির পরবর্তী বৈঠক ফেব্রুয়ারিতে। “এই সমিতিগুলির বৈঠকে কোটা বাতিলের প্রস্তাব গৃহীত হলে তবেই তা কার্যকর হবে। তার আগে পূর্বের ব্যবস্থা বদলের অবকাশ নেই,” বলেন সুশান্তবাবু। বিশ্বভারতীতে পরবর্তী ভর্তির সময় জুলাই মাসে। কোটা বাতিল হবে কি না, তা চূড়ান্ত হয়ে যাবে তার আগেই।

পড়ুয়াদের দাবি মেনে নেওয়ায় ঘেরাও মুক্ত হয়ে কেন্দ্রীয় দফতর থেকে বেরোচ্ছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত। —নিজস্ব চিত্র

কিন্তু একুশ ঘণ্টার টানা ঘেরাও, কেবল চা-বিস্কুট খেয়ে থাকা, ক্রমাগত ব্যক্তিগত আক্রমণ করে স্লোগান, এগুলো কি কোটা বাতিলের প্রশ্নে চাপে ফেলবে না? সুশান্তবাবুর উত্তর, “এই ধরনের ঘেরাওকে আমি গুরুত্ব দিই না। ইট ইজ পার্ট অব দ্য গেম (এগুলো প্রক্রিয়ার অংশমাত্র)।”

সুশান্তবাবু গুরুত্ব দিতে রাজি না হলেও, উপাচার্য, তিন প্রোভোস্ট, ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব, সম্পত্তি আধিকারিক ও ভারপ্রাপ্ত মুখ্য নিরাপত্তা আধিকারিক সারা রাত দফতর-বন্দি থাকায় বিশ্বভারতীতে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। এ দিন ছাতিমতলার উপাসনায় সুশান্তবাবুর আচার্য থাকার কথা ছিল। তিনি না আসায় অন্য দুই অতিথিও মঞ্চে আসেননি।

ছ’দিনের ভারত সফরে এসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এ দিন শান্তিনিকেতনে পৌঁছন বেলা ১২টা ১৫ নাগাদ। তাঁকে স্বাগত জানাতে হেলিপ্যাডে যাওয়ার কথা ছিল ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব মণিমুকুট মিত্রের। তিনি ঘেরাও হয়ে থাকায় বিশ্বভারতীর পক্ষে ছিলেন নিরাপত্তা আধিকারিক সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়। তবে প্রশাসনের তরফে ছিলেন জেলাশাসক, রাজ্য পুলিশের ডিআইজি, জেলার পুলিশ সুপার-সহ অন্য পদস্থ ব্যক্তিরা।

abdul hamid sushanta duttagupta viswa bharati
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy