মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ‘একলা চলো’র ডাক। গাঁধীজির চশমা ব্যবহার করেই এখন স্বচ্ছ ভারত অভিযানের জন্য দেশবাসীর হাতে ঝাড়ু ধরিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। সেই মোদীর দলের একমাত্র বিধায়ককেই এ বার বিধানসভায় ‘একলা চলো’র নীতি মানতে দেখা গেল!
পাড়ুইয়ে সংঘর্ষের ঘটনার জেরে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আলোচনা চেয়েছিলেন বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অনুমতি না দেওয়ায় বৃহস্পতিবার শমীকবাবুর প্রতিবাদ ছিল প্রথমে ওয়েলে নেমে এবং তার পরে সভা থেকে ওয়াক আউট। বিধায়ক হওয়ার পরে এই প্রথম শমীকবাবুর কক্ষত্যাগ। কিন্তু বিধানসভায় একাকী এমন কক্ষত্যাগ প্রথম নয়। শমীকবাবুর ওয়াক আউট তাই অবধারিত ভাবে মনে পড়িয়ে দিচ্ছে সেই সব অনুষঙ্গ।
দাবি মানা না হলে বা কোনও বিষয়ে প্রতিবাদের পথ হিসাবে বিরোধীরা প্রায়শই ওয়াক আউট করেন। কিন্তু একা ওয়াক আউট করার ‘মাহাত্ম্য’ একটু অন্য রকম! এক বাম বিধায়কের কথায়, “দল বেঁধে ওয়াক আউট এক জিনিস। একা কেউ বেরোলে টয়লেটে যাচ্ছেন, নাকি চলেই যাচ্ছেন, বোঝা মুশকিল! তাই চেঁচিয়ে বলে যেতে হয়, ওয়াক আউট করলাম!” শমীক তা-ই করেছেন। আগে এসইউসি-র দেবপ্রসাদ সরকারও দিনের পর দিন তা-ই করতেন। বিধায়ক বেঞ্চ থেকেই তখন হাসির রোল উঠত! এখন বিজেপি-র বাড়তি গুরুত্বের কারণেই হয়তো, শমীকের প্রথম ওয়াক আউটে গাম্ভীর্য রাখার চেষ্টা করেন অন্য দলের বিধায়কেরা!
পরে কংগ্রেসের এক বিধায়কের রসিকতা, “একা ওয়াক আউট খুব কঠিন! বিজেপি বিধায়ক গত ক’দিনে একটু ধাতস্থ হয়ে বোধহয় আজ ওয়াক আউট করেছেন।” শমীক অবশ্য অবিচলিত! তাঁর যুক্তি, একা বিধায়কের লড়াই কঠিন। অথচ মানুষের প্রত্যাশা বিপুল। তাই যা করণীয়, একাই করতে হবে। আর শমীককে ভরসা জোগাতে বাবুল সুপ্রিয় বলেছেন, “এক কিন্তু অনেক বড় একটা সংখ্যা!” দীর্ঘদিন সে সত্য জানতেন দেবপ্রসাদবাবু। প্রবীণ প্রাক্তন বিধায়কের মন্তব্য, “আমার জোর ছিল, সত্য। তাই সংখ্যার জোরে যাঁরা আমায় কটাক্ষ করতেন, তাঁদের মোকাবিলা করতে পারতাম।” শমীকও হয়তো পারবেন!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy