আগামী জুলাইয়ে ১৭টি পুরসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। কিন্তু এখনই সেখানে নির্বাচন হবে না বলে জানিয়ে দিলেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। মঙ্গলবার মহাকরণে এই নিয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়ে মন্ত্রী জানান, এ কথা জানিয়ে দেওয়া রাজ্য নির্বাচন কমিশনকেও হচ্ছে।
নির্দিষ্ট সময়ে ভোট না-করার কারণও এ দিন ব্যাখ্যা করেন পুরমন্ত্রী। তিনি জানান, ওই ১৭টি পুরসভার মধ্যে সাতটিকে প্রস্তাবিত চারটি কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তার আগে পুরসভাগুলির নির্বাচন করলে কর্পোরেশন গঠনের পরে ফের নির্বাচনের প্রয়োজন হবে। “তাই কর্পোরেশনগুলির সীমা পুনর্বিন্যাসের কাজ হয়ে যাওয়ার পরেই ওই নির্বাচন পর্ব সেরে ফেলা হবে,” বলেছেন পুরমন্ত্রী। ১৭টি পুরসভার মধ্যে সাতটি বিভিন্ন পুর নিগমের আওতায় চলে যাবে। বাকি ১০টি পুরসভার ভোট কর্পোরেশনগুলির সঙ্গেই হবে বলে জানান মন্ত্রী। একই সঙ্গে তিনি বলেন, “আগামী বছর আরও ৮২টি পুরসভার মেয়াদ শেষ হবে। সেগুলির ভোট নির্ধারিত সময়েই সেরে ফেলা হবে।”
চারটি নতুন কর্পোরেশন গড়া এবং তিনটি কর্পোরেশনকে পুনর্গঠিত করার সরকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে এ দিন রাজ্য বামফ্রন্টের বৈঠকে আলোচনা হয়। বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু জানান, কর্পোরেশন গঠনের ব্যাপারে তাঁদের কোনও নীতিগত আপত্তি নেই। কিন্তু যে-ভাবে অবৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এ কাজ করা হচ্ছে, তা নিয়ে আপত্তি আছে।
বিমানবাবু বলেন, “কর্পোরেশনের সদর দফতরে যাতায়াতের ক্ষেত্রে মানুষের অসুবিধা হবে। যেমন, রাজারহাটের লোক বারাসতে, জামুড়িয়ার লোক আসানসোলে বা কামারহাটির লোক দমদমে যেতে অসুবিধায় পড়বেন।”
ইতিমধ্যেই বিজেপি এবং অন্যান্য বিরোধী দলের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছে, লোকসভা ভোটের ফলাফল দেখে বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়েই তৃণমূল সরকার এ কাজ করছে। পুরভোট পিছিয়ে দিতেই এই সময়ে নতুন কর্পোরেশন গড়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এটা ভোট পিছোনোর অছিলা বলেই অভিযোগ বিভিন্ন বিরোধী শিবিরের।
শাসক দল তৃণমূল অবশ্য এই নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। নতুন কর্পোরেশন গঠনের সিদ্ধান্তে কোনও রাজনীতি নেই বলে পুরমন্ত্রী সোমবার মন্তব্য করেছিলেন। তিনি জানান, আরও কর্পোরেশন গড়ার সিদ্ধান্তটি পুরোপুরি প্রশাসনিক। সাধারণ মানুষকে আরও বেশি পরিষেবা দিতেই তিন বা ততোধিক পুরসভাকে এক-একটি কর্পোরেশনের ছাতার তলায় আনা হচ্ছে। এর ফলে কেন্দ্র ছাড়াও এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্ক, বিশ্ব ব্যাঙ্কের কাছ থেকে বেশি অনুদান ও ঋণ মিলবে বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশা।
বিভিন্ন বিরোধী দল সরকারের বিরুদ্ধে ভোট পিছোনোর চেষ্টার অবিযোগ আনলেও বিমানবাবু এ দিন বলেন, “কার কী উদ্দেশ্য, না-জানলে কী করে বলব!” অবিলম্বে বিভিন্ন পুরসভা ও শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদে ভোটের দাবি জানিয়ে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে গত ২৩ মে চিঠি দিয়েছেন বিমানবাবু। তাঁর দাবি, “গণতন্ত্রের স্বার্থেই আমরা অবিলম্বে ভোটের দাবি জানিয়েছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy