Advertisement
E-Paper

ওদের জেলে ভরুন স্যার, বয়ান মধ্যমগ্রামের ধর্ষিতার

তার শেষ ইচ্ছে ছিল, দোষীরা যেন শাস্তি পায়। ষোলো বছরের মেয়েটি আগুনে পোড়া অবস্থায় পুলিশকে জবানবন্দি দিয়ে সেই ইচ্ছের কথা জানিয়েছিল। এর পাঁচ দিন পরেই মারা যায় মধ্যমগ্রামের গণধর্ষিতা কিশোরী। মারা যাওয়ার আগে, গত ২৬ ডিসেম্বর বেলা তিনটেয় আরজিকর হাসপাতালের সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে ২৬ নম্বর বেডে শুয়ে পুলিশের কাছে সে যে জবানবন্দি দিয়েছিল, এক বিশেষ সূত্র মারফত তার ফোটোকপি আনন্দবাজারের হাতে এসেছে।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৪ ২১:২৪

তার শেষ ইচ্ছে ছিল, দোষীরা যেন শাস্তি পায়। ষোলো বছরের মেয়েটি আগুনে পোড়া অবস্থায় পুলিশকে জবানবন্দি দিয়ে সেই ইচ্ছের কথা জানিয়েছিল। এর পাঁচ দিন পরেই মারা যায় মধ্যমগ্রামের গণধর্ষিতা কিশোরী।

মারা যাওয়ার আগে, গত ২৬ ডিসেম্বর বেলা তিনটেয় আরজিকর হাসপাতালের সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে ২৬ নম্বর বেডে শুয়ে পুলিশের কাছে সে যে জবানবন্দি দিয়েছিল, এক বিশেষ সূত্র মারফত তার ফোটোকপি আনন্দবাজারের হাতে এসেছে। জবানবন্দি নিয়েছিলেন এয়ারপোর্ট থানার এক সাব-ইন্সপেক্টর। পুলিশ জানিয়েছে, তখন মেয়েটির পোড়া চামড়ায় এমন টান ধরছিল যে, কথা বলতে রীতিমতো অসুবিধে হচ্ছিল। তাই যথাসম্ভব সংক্ষিপ্ত ভাবে বয়ান নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। কী রয়েছে ওই জবানবন্দিতে?

প্রতিলিপিতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশ প্রথমে মেয়েটির কাছে জানতে চায় তার নাম কী, বাবা-মায়ের নাম কী এবং বাড়ি কোথায়। ঠিকঠাক উত্তর পাওয়ার পরে প্রশ্ন করা হয়, ‘তুমি এখন কোথায় আছ?’ মেয়েটি বলে, ‘হাসপাতালে।’ সাব-ইন্সপেক্টর তখন জানতে চান, ‘তোমার কী হয়েছে?’

কিশোরী হিন্দিতে বলে, ‘উস দিন সুবহামে রতন আওর মিন্টা মেরেকো গালি দে রাহা থা আওর ঝগড়া কিয়া। আওর উন দোনো মেরা শরীর মে আগ লগা দিয়া আওর ছিটকি বন্ধ কর দিয়া। স্যার, উন দোনো কো জেল মে ভেজ দেনা, স্যার।’ বাংলায় তর্জমা করলে দাঁড়ায়, ‘ওই দিন সকালে রতন ও মিন্টা আমাকে গালাগালি দেয় আর ঝগড়া করে। ওরা দু’জনে আমার গায়ে আগুন লাগিয়ে ছিটকিনি বন্ধ করে দেয়। স্যার, ওই দু’জনকে জেলে পাঠান, স্যার।

জবানবন্দি এখানেই শেষ। প্রায় ৭০% দগ্ধ মেয়েটি ৩১ ডিসেম্বর হাসপাতালে মারা যায়। এবং তার মৃত্যুর পরে বিতর্ক তৈরি হয়, এটি আত্মহত্যা, নাকি হত্যা?

বিতর্কের সূত্রপাত অবশ্য মৃতার মায়ের একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে। তিনি জানিয়েছিলেন, ঘটনার দিন তাঁর স্বামী কাজে বেরিয়েছিলেন, আর তিনি মেয়েকে বাড়িতে একা রেখে বাজারে গিয়েছিলেন। ঘটনার পরে পরেই মা জানিয়েছিলেন, সে দিন ঘরের দরজা ভেঙে জ্বলন্ত মেয়েকে উদ্ধার করতে হয়েছিল। বুধবারও টেলিফোনে মহিলা বলেন, “আমি বাজার থেকে ফিরে জানলা দিয়ে দেখলাম, মেয়ে ভিতরে দাউদাউ করে জ্বলছে। পড়শি কিছু ছেলে এসে দরজা ভাঙল।”

স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, বাইরে থেকে কেউ যদি ঘরে ঢুকে আগুন লাগিয়ে দরজায় ছিটকিনি আটকে চলে যায়, তা হলে দরজা ভিতর থেকে বন্ধ থাকবে কেন? কেন দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকতে হবে? আর তা-ই যদি হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে দুর্বৃত্তেরা পালাল কোন রাস্তা দিয়ে? মেয়েটির বাবাকে টেলিফোনে প্রশ্নটি করা হলে তিনি বলেন, “আমি কাজে ছিলাম। যখন আসি, তখন দরজা খোলা ছিল। তাই জানতে পারছি না, ছিটকিনি কোথায় দেওয়া ছিল।” মা অবশ্য নিজের বক্তব্যে অনড়। “দরজা ভিতর থেকেই বন্ধ ছিল। এতে কোনও ভুল নেই।” এ দিন বলেন তিনি। দম্পতি আপাতত রয়েছেন কলকাতার নিমতলাঘাট এলাকার এক ভাড়া-বাড়িতে।

আসল ঘটনা কী, তা জানতে আদালতের অধীনে সিআইডি-তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তের দায়িত্বে রয়েছেন ডিআইজি (সিআইডি) দময়ন্তী সেন। রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুনন্দা মুখোপাধ্যায় এ দিন বলেন, “হত্যা না আত্মহত্যা, সেটা পুলিশ খুঁজবে। দুর্ভাগ্যের কথা, একটি ধর্ষিতা মেয়েকে পুড়ে মরতে হল! আশা করি, তদন্তে কোনও গড়িমসি হবে না।”

মধ্যমগ্রাম গণধর্ষণের মামলাটি এ দিনই উঠেছিল বারাসতের দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা দায়রা আদালতে। বিচারক আগামী বুধবার চার্জ গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সরকারপক্ষের কৌঁসুলি মহেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়।

ভোট-প্রস্তুতির ফরমান

লোকসভা নির্বাচন হবে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্যে

ভোটারকে প্রভাবিত করে, এমন কাজ রুখতে ব্যবস্থা এখন থেকেই

ভয় দেখাতে পারে বা আগে দেখিয়েছে, এমন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

কমিশনের নির্দেশিকা মেনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করবেন জেলাশাসক

নাম তোলা সহ-ভোট সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জানতে হেল্পলাইন

নিরাপত্তা ব্যবস্থা চূড়ান্ত হবে পর্যবেক্ষকের সামনে

ভোটের মুখে সিল করা হবে আন্তর্জাতিক সীমান্ত

rape madhyamgram
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy