Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কোরপান খুনে দুই ক্যান্টিন কর্মী ধৃত

হবু ডাক্তার নন তাঁরা। তবে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ছাত্রাবাসের ক্যান্টিনের কর্মী। ডাক্তারির ছাত্রদের হস্টেলে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক কোরপান শা খুনে ওই দু’জনকে এ বার গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবার গোয়েন্দাপ্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ বলেন, “ধৃতেরা হলো কার্তিক মণ্ডল ওরফে গণেশ এবং রুবি ওন্দিয়া। কোরপান শাকে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় তারাও জড়িত বলে তদন্তে জানা যাচ্ছে।” পুলিশ জানায়, কার্তিকের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুর। রুবির বাড়ি ওড়িশায়। এ দিন সন্ধেয় এন্টালি থানায় ডেকে পাঠানো হয় দু’জনকে।

কোরপান শা

কোরপান শা

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:২৫
Share: Save:

হবু ডাক্তার নন তাঁরা। তবে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ছাত্রাবাসের ক্যান্টিনের কর্মী। ডাক্তারির ছাত্রদের হস্টেলে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক কোরপান শা খুনে ওই দু’জনকে এ বার গ্রেফতার করল পুলিশ।

শনিবার গোয়েন্দাপ্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ বলেন, “ধৃতেরা হলো কার্তিক মণ্ডল ওরফে গণেশ এবং রুবি ওন্দিয়া। কোরপান শাকে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় তারাও জড়িত বলে তদন্তে জানা যাচ্ছে।” পুলিশ জানায়, কার্তিকের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুর। রুবির বাড়ি ওড়িশায়। এ দিন সন্ধেয় এন্টালি থানায় ডেকে পাঠানো হয় দু’জনকে। জিজ্ঞাসাবাদের পরে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। আজ, রবিবার এই দু’জনকে আদালতে হাজির করানো হবে। এই খুনের ঘটনায় গত মঙ্গলবার রাতে জসিমুদ্দিন নামে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

তবে পুলিশ সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেফতার করা হলেও গত ১৬ নভেম্বর সকালে এনআরএসের হস্টেলে ওই খুনে আর কারা জড়িত তা এখনও স্পষ্ট নয়। মালদহের চাঁচলের নিম্নবিত্ত পরিবারের মেধাবী ছাত্র জসিমুদ্দিনকে পুলিশ-হাজতে রেখেও তার মুখ থেকে এখনও পর্যন্ত আর কারও নাম জানতে পারেনি পুলিশ। এমনকী, হস্টেলে সেই সকালের ঘটনা পরম্পরা নিয়েও সে-ভাবে মুখ খোলেনি পুলিশের কাছে।

তবে তদন্তকারীদের বক্তব্য, কোরপান হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে ওই দুই ক্যান্টিন কর্মীকে আগেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল পুলিশ। তখনই তাদের কথায় কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়ে। এ দু’জন গোড়া থেকেই পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছিল। লালবাজারের এক কর্তার কথায়, জসিমুদ্দিন গ্রেফতার হওয়ার পরেই ওই দুই ক্যান্টিন কর্মীর হাবভাবে উদ্বেগ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করে তা থেকেই। নিজেরা জড়িয়ে পড়তে পারে আশঙ্কায় তারা এর পর থেকে পুলিশকে এড়িয়ে চলছিল। তদন্তকারী এক অফিসারের কথায়, “জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওরা দু’জনে এক-একবার এক-এক রকম কথা বলছিল। কিন্তু ইদানীং পুরোপুরি অসহযোগিতা শুরু করে। এর পরেই ওদের ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাতে কিছু প্রমাণ মিলেছে।”

পুলিশের বক্তব্য, গণপিটুনিতে হবু ডাক্তারদের সঙ্গে এই ক্যান্টিন কর্মীদেরও হাত ছিল। শুধু একজোট হয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে ওই যুবককে বেধড়ক মারাই নয়, তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ছাত্রদের সঙ্গে এই ক্যান্টিন কর্মী দু’জনও ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যায়। পুলিশের দাবি, কোরপানের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে পরিষ্কার অনেকে মিলে মারধর করার ফলেই ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছিল। যেখানে কোরপানকে পড়ে থাকতে দেখা যায় তার কিছুটা দুরেই ছাত্রাবাসের ক্যান্টিন। তা ছাড়া, আরও কয়েকটি সূত্রে দুই ক্যান্টিন কর্মীর এই খুনে জড়িত থাকার প্রমাণ মিলছে বলে জানাচ্ছে পুলিশ।

লালবাজারের এক কর্তার কথায়, “এই দু’জন ক্যান্টিন কর্মীকে জেরা করে আর কারা কারা জড়িত তা স্পষ্ট হবে।” গত ১৬ নভেম্বর সকালে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রাবাস থেকে উদ্ধার হয় মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক কোরপান শা-র মৃতদেহ। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পারে, ওই যুবককে চোর সন্দেহে পিটিয়ে মারা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

korpan shah nrs junior doctor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE