Advertisement
১৯ মে ২০২৪

কালিয়াচকের বাঁশবাগানে মিলল ১৬টি বল-বোমা

শক্তপোক্ত প্লাস্টিকের বলের কিছুটা কেটে কমলা রঙের বিস্ফোরক ঠাসা। রয়েছে ছোট পেরেক, পাথরকুচি, বল বিয়ারিং, ধারালো লোহার টুকরোও। সে সব পুরে আঠা দিয়ে ফের বলটি জোড়া হয়েছে। সব মিলিয়ে আনুমানিক ওজন প্রায় ৫০০ গ্রাম। এমনই ১৬টি ‘বল-বোমা’ শুক্রবার উদ্ধার হল মালদহে। তবে এই ঘটনাতেও ফের তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে মালদহ জেলা পুলিশের বিরুদ্ধে।

উদ্ধার হওয়া সেই বল-বোমা। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়।

উদ্ধার হওয়া সেই বল-বোমা। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালিয়াচক (মালদহ) শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:৩০
Share: Save:

শক্তপোক্ত প্লাস্টিকের বলের কিছুটা কেটে কমলা রঙের বিস্ফোরক ঠাসা। রয়েছে ছোট পেরেক, পাথরকুচি, বল বিয়ারিং, ধারালো লোহার টুকরোও। সে সব পুরে আঠা দিয়ে ফের বলটি জোড়া হয়েছে। সব মিলিয়ে আনুমানিক ওজন প্রায় ৫০০ গ্রাম। এমনই ১৬টি ‘বল-বোমা’ শুক্রবার উদ্ধার হল মালদহে।

তবে এই ঘটনাতেও ফের তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে মালদহ জেলা পুলিশের বিরুদ্ধে। কারণ, যে শিক্ষকের বাড়ির বাগানে বড় মাপের প্লাস্টিকের জ্যারিকেনে বোমাগুলি রাখা ছিল, পুলিশ তাঁকে রাত পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করেনি।

তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ পুলিশ মানতে চায়নি। বরং কালিয়াচক থানা-সহ জেলা পুলিশের দাবি, তারা সক্রিয় থাকার সুবাদেই এই বোমা উদ্ধার হয়েছে।

জেলার পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যে সব বোমা উদ্ধার হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে আমাদের মনে হচ্ছে, দুষ্কৃতীরা তা নিজেদের মধ্যে লড়াইয়ের জন্য বানিয়েছিল। এর পিছনে দেশদ্রোহীদের হাত নেই বলেই অনুমান করা হচ্ছে। তবে এনআইএ (জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা) বা এনএসজি (ন্যাশনাল সিকিওরিটি গার্ড) যদি এ ব্যাপারে তদন্তে আসে, পুলিশ তাদের সাহায্য করবে।”

কালিয়াচক থানার ১৬ মাইল এলাকায় এ দিন এক প্রাথমিক শিক্ষকের বাঁশবাগান থেকে বোমাগুলি উদ্ধার করে পুলিশ। সংবাদমাধ্যমের কাছে ওই শিক্ষকের দাবি, বোমা কে রেখেছে তা তিনি জানেন না। খবর পেয়ে সিআইডি-র ‘বম্ব স্কোয়াড’ যায়। দুপুরে বোমাগুলি নিষ্ক্রিয় করার কাজ শুরু হয়। সেই সময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত কালিয়াচক থানার পুলিশের কাছে সিআইডি-র তরফে নির্দেশ যায়, অন্তত একটি আস্ত নমুনা রেখে দেওয়ার। পুলিশ একটি বোমা রেখে বাকিগুলি ফাটিয়ে দেয়। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “কমলা রঙের যে বিস্ফোরক এই বোমায় ব্যবহার করা হয়েছে, সেটি আসলে কী তা জানতে ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হবে।”

পুলিশের অনুমান, এই ধরনের বোমা বানানোর কারণ জলের নীচে, মাটির তলায় লুকোলেও তা সহজে নষ্ট হবে না। দ্বিতীয়ত, সামান্য নাড়াচাড়ায় ফাটবে না। তৃতীয়ত, এই বোমার মারণ-শক্তি সাধারণ ‘পেটো’র তুলনায় বেশি। মালদহে গত দু’সপ্তাহে তিনটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ভাবে তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল। এ দিন আচমকা তারা তৎপর হল কেন? জেলা প্রশাসনের একাধিক সূত্র বলছে, খাগড়াগড় বিস্ফোরণ-কাণ্ডের সূত্র ধরে এনআইএ-র একটি দল মালদহে তদন্তে পৌঁছেছে। সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর একটি দলকে নিয়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা আজ, শনিবার নানা এলাকায় তল্লাশি চালাতে পারেন, এই মর্মে খবর থাকাতেই এ দিন জেলা পুলিশ সক্রিয় হয়ে ওঠে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kaliachak blast bomb maldah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE