কলকাতার পথে। বর্ধমানে বিস্ফোরণ-কাণ্ডে ধৃত শাহনুর আলম। শুক্রবার গুয়াহাটি স্টেশনে উজ্জ্বল দেবের তোলা ছবি।
খাগড়াগড়-কাণ্ডে অভিযুক্ত শাহনুর আলম-সহ তিন জনকে গুয়াহাটি থেকে এনে আজ, শনিবার কলকাতার আদালতে পেশ করার কথা জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র। শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার কিছু পরে গুয়াহাটি স্টেশন থেকে সরাইঘাট এক্সপ্রেসে ওই তিন জনকে নিয়ে এনআইএ অফিসারেরা হাওড়ার উদ্দেশে রওনা হন। শাহনুর ছাড়া অন্য দু’জন হল, সাইখুল ইসলাম ও রফিকুল ইসলাম।
খাগড়াগড়-কাণ্ডে অভিযুক্ত হিসেবে নাম উঠে আসার পর অসম পুলিশ এই তিন জনকে বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার করেছিল। খাগড়াগড় কাণ্ডের তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা এনআইএ ওই তিন জনকে দফায় দফায় জেরা করলেও এখনও তাদের হেফাজতে পায়নি। এনআইএ-র এক শীর্ষকর্তা বলেন, “শাহনুর ও অসমের অন্য দু’জনকে শনিবার আমরা আদালতে হাজির করিয়ে হেফাজতে চাইব।” এ ব্যাপারে এনআইএ-র আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২০ ডিসেম্বর কলকাতার নগর দায়রা আদালতের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট ৩ জানুয়ারির মধ্যে তাঁর আদালতে শাহনুরদের হাজির করানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। এর পর কামরূপের মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালত থেকে এনআইএ এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়ে নেয়।
শাহনুরদের হেফাজতে নিয়ে এনআইএ নতুন কী তথ্য পেতে পারে?
গোড়া থেকেই এনআইএ দাবি করছে, পশ্চিমবঙ্গে ঘাঁটি গেড়ে থাকা জঙ্গিদের জন্য বাংলাদেশ থেকে আসা টাকা বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদের জঙ্গি ডেরায় পৌঁছে দিতে শাহনুরের বড় ভূমিকা ছিল। শাহনুরের সব ক’টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য তারা সংগ্রহ করেছে। হেফাজতে পেলে খাগড়াগড় কাণ্ডে ধৃত অন্য কয়েক জনের মুখোমুখি বসিয়ে শাহনুরকে জেরা করতে পারে তারা।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, অসম-সহ উত্তর-পূর্ব ভারতে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর অন্যতম চাঁই বরপেটার এই হাতুড়ে ডাক্তার শাহনুর। খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পর বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদের একাধিক জঙ্গি ডেরা থেকে অসমের কয়েক জন তরুণ-তরুণীর নাম মিলেছিল। সেই তদন্তের সূত্র ধরে শাহনুর ও তার স্ত্রী সুজানা-সহ ১২ জনকে গ্রেফতার করে অসম পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় শাহনুরের ভাই জাকারিয়াকেও। শাহনুরের জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা ইনাম ঘোষণা করেছিল এনআইএ।
গোয়েন্দারা জানান, বরপেটারই বাসিন্দা সাইখুল ইসলাম অসমে জেএমবি-র আর এক বড় চাঁই। খাগড়াগড় বিস্ফোরণে নিহত, বাংলাদেশের নাগরিক শাকিল আহমেদের সঙ্গে সাইখুলের ঘনিষ্ঠতা ছিল। বোরখা ব্যবসার আড়ালে সে তরুণ-তরুণীদের দলে টানত। রফিকুলও অসমে জেএমবি-র গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের অন্যতম।
পুলিশের দাবি, বাংলাদেশের কোনও গোপন ডেরায় আলফা-র পরেশ বরুয়া গোষ্ঠীর সঙ্গে জেএমবি-র বিশেষ বৈঠক হয়েছিল। অস্ত্র আদান-প্রদান ও নাশকতা ঘটানোয় পারস্পরিক বোঝাপড়ার বিষয় ওই বৈঠকেই চূড়ান্ত হয়। এমনকী খাগড়াগড়ে তৈরি হওয়া বিস্ফোরকের একটা অংশ শাহনুরদের মাধ্যমেই অসমে মজুত করা হয়েছিল বলে মনে করছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy