খাগড়াগড় বিস্ফোরণের আঁচ পড়ল এ বার প্রতিবেশী ঝাড়খণ্ডেও। আজ পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম লাগোয়া পাকুড় থেকে খাগড়াগড় কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করল এনআইএ। দেখা যাচ্ছে বরপেটার হাতুড়ে ডাক্তার শাহনুর আলম ছাড়াও আরও এক হাতুড়ে এই ঘটনায় জড়িত। তার নাম সালাউদ্দিন শেখ। ঝাড়খণ্ড পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ বিকেলে পাকুড় থানা এলাকার সংগ্রামপুর থেকে সালাউদ্দিন শেখ ছাড়াও জাহাঙ্গির শেখ নামে এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়।
ঝাড়খণ্ডের এক পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, এনআইএ ছাড়াও আইবি, ঝাড়খণ্ড আর পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ যৌথভাবে পাকুড়ের ওই গ্রামে তল্লাশি অভিযান চালায়। খাগড়াগড় কাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ওই এলাকার আরও কয়েক জনকে খোঁজা হচ্ছে। আজ রাত পর্যন্ত ওই এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে তল্লাশি চলছে।
এ দিকে, বরপেটার জঙ্গি নেতা শাহনুর আলমের ধৃত স্ত্রী সুজানাকে জেরা করতে গিয়ে আরও বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন। জানা গিয়েছে, প্রতি শুক্রবার বরপেটার চটলা গ্রামের মাদ্রাসায় মেয়েদের ‘বিশেষ’ শিক্ষাদান করত সুজানা বেগম। ধরা পড়া সুজানার কাছ থেকে তার এক ঘনিষ্ঠ ছাত্রীর নাম পেয়েছিল এনআইএ। আজ এনআইএ-র গুয়াহাটি দফতরে সেই ছাত্রী ও তাঁর স্বামীকে ডেকে পাঠানো হয়। সেই সঙ্গে চটলা গ্রামের প্রধান গাঁওবুড়া (গ্রাম প্রধান) আব্দুর রশিদকেও ডেকে পাঠায় এনআইএ। পাশাপাশি, শাহনুর-সুজানার ঘনিষ্ঠ খুইবর আলি ও জহরুল ইসলাম নামে দুই ব্যক্তিকেও দফতরে এনে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে এনআইএ। গুয়াহাটিতে এনআইএ সূত্রে খবর, সুজানার ছাত্রী বাতাসি বেগম ও তার স্বামী সইফুল ইসলাম তদন্তে সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে আলম দম্পতির ব্যাপারে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছে এনআইএ। সুজানা মাদ্রাসায় ঠিক কী ধরনের শিক্ষা দিত তাও বাতাসি জানিয়েছে। গভীর রাত অবধি জেরা চলছে। গ্রামপ্রধান রশিদ এনআইএকে সন্দেহভাজন দুই যুবকের ব্যাপারেও তথ্য দেন। চটলা গ্রামের এই দুই যুবক আপাতত নিখোঁজ।
এ দিকে, শাহনুরের ব্যাপারে সুজানা তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করেছে বলেই মনে করছে এনআইএ-র গোয়েন্দারা। বিভিন্ন সূত্র থেকে এনআইএ খবর পেয়েছে, ভিন রাজ্যে নয়, সম্ভবত গুয়াহাটিতেই ছদ্মবেশে আত্মগোপন করে রয়েছে শাহনুর। কেটে ফেলেছে লম্বা দাড়ি। বদলে ফেলেছে চুলের ছাঁটও। তার সম্ভাব্য বিভিন্ন চেহারার ছবি তৈরি করে তল্লাশিতে নেমেছে পুলিশ।
এই তদন্তের পাশাপাশি, নামনি অসমের বিভিন্ন চরে, সিডির পাশাপাশি, মোবাইলেও বাংলা ভাষায় জিহাদের গান ও ভিডিও প্রচারিত হচ্ছে। এমন বেশ কয়েকটি ক্লিপিং রাজ্য পুলিশের স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের হাতে এসেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, অসমে অন্যান্য স্থানের বেশ কিছু সংঘর্ষের ছবি চতুর ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। ডিজিপি খগেন শর্মা জানান, “কেবল মাদ্রাসা নয়, নামনি অসমের প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকাগুলিতেও জিহাদিরা মগজ ধোলাইয়ের ‘বিশেষ শিক্ষা শিবির’ চালাচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy