Advertisement
E-Paper

খেতে দেরি, নেত্রীর কথা শুনতে পেলেন না অনেকেই

উদ্দেশ্য ছিল কর্মিসভায় এসে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা শোনা। কিন্তু খাওয়া-দাওয়ার পর্ব মেটাতেই তাল কাটল সভার। মঙ্গলবার খড়্গপুরের বিদ্যাসাগর শিল্পতালুকে মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চে উপস্থিত হওয়ার পরেও খাবারের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলেন প্রায় ২০ হাজার দলীয় কর্মী। খাবারের জায়গায় মাইক না থাকায় শুনতে পেলেন না নেত্রীর বক্তব্যও। মমতা-র বক্তব্য শেষের পরেও চলল খাওয়া-দাওয়া। অনেকে আবার পেলেনই না খাবার।

দেবমাল্য বাগচি

শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:৩০
কর্মিসভা শুরু হয়ে গিয়েছে। তখনও মেটেনি তৃণমূল কর্মীদের খাওয়ার পর্ব। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।

কর্মিসভা শুরু হয়ে গিয়েছে। তখনও মেটেনি তৃণমূল কর্মীদের খাওয়ার পর্ব। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।

উদ্দেশ্য ছিল কর্মিসভায় এসে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা শোনা। কিন্তু খাওয়া-দাওয়ার পর্ব মেটাতেই তাল কাটল সভার।

মঙ্গলবার খড়্গপুরের বিদ্যাসাগর শিল্পতালুকে মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চে উপস্থিত হওয়ার পরেও খাবারের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলেন প্রায় ২০ হাজার দলীয় কর্মী। খাবারের জায়গায় মাইক না থাকায় শুনতে পেলেন না নেত্রীর বক্তব্যও। মমতা-র বক্তব্য শেষের পরেও চলল খাওয়া-দাওয়া। অনেকে আবার পেলেনই না খাবার। কেউ বিরক্ত, কেউ ক্ষুব্ধ। জেলা তৃণমূল সভাপতি দীনেন রায় অবশ্য বলছেন, “সব কর্মীরা খেতে পাননি এটা ঠিক নয়। অনেকে হয়ত খেতে চাননি। অনেকে বহু দূর থেকে এসেছেন, তাঁরা দেরি করে ফেলেছেন।” কর্মিসভা সর্বাত্মক, দাবি তাঁর।

কথা ছিল, দুই মেদিনীপুরের একেবারে বুথ থেকে জেলা পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের নিয়ে সকাল ১১টায় শুরু হবে সাংগঠনিক সভা। প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসা কর্মীদের সকলের জন্য দুপুরে খাবারের আয়োজন করা হয়েছিল। মেনুতে ছিল ভাত, ডাল, বাঁধাকপি, ডিম আর শেষপাতে চাটনি। এত লোকের রান্না ও খাবার বিলির জন্য সভাস্থল থেকে দু’শো মিটার দূরে তিনটি পর্যায়ে একশো কাউন্টার খোলা হয়েছিল। ঠিক ছিল, সভা শুরুর আগে খাওয়ার পর্ব মেটাতে সাড়ে ৯টা থেকেই কাউন্টার খুলে দেওয়া হবে।

সভায় আসা কর্মীদের দাবি, নিয়ম মেনেই কাজ করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্যাটারার। তবে খাওয়া শুরু হতেই দেরি হয়ে যায় বলে অভিযোগ। তার উপরে বেলা বাড়ার সঙ্গেই বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে এসেছেন কর্মীরা। প্রথম পর্যায়ে সমস্যা দেখা দেয় পানীয় জল নিয়ে। গড়বেতার হিরাবনির শ্যামল মাঝি বলছিলেন, “খাওয়াটা ভাল ভাবেই হল। কিন্তু জলটা পেলাম না।”

অনেকেই বলছেন, বেলা বাড়তে ভিড় এতটাই বাড়ে যে সাড়ে ১২টা নাগাদ সব কাউন্টারেই বহু লোক দাঁড়িয়ে যায়। এক সময় ঘোষণা করা হয়, নেত্রী মঞ্চে উঠলে সব কাউন্টার বন্ধ করা হবে। তাই খেতে এসেও শালবনির ৪ নম্বর অঞ্চলের সম্পাদক নিতাই মাহাতো ফিরে যান। না খেয়েই কেন ফিরে যাচ্ছেন? তাঁর জাবাব, “বড় লাইন হয়েছে দেখেই ফিরে যাচ্ছি। খাওয়াটা বড় নয়, দিদির কথা শোনাটাই বড় কথা।”

তবে এ দিন নিতাইবাবুর মতো সকলে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলেন অনেকেই। সময় যত এগিয়েছে দীর্ঘ হয়েছে লাইন। বেলা একটা নাগাদ নির্ধারিত সূচি মেনেই মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চে ওঠেন। তখনও খাওয়ার জায়গায় প্রায় ২০ হাজার মানুষ ভিড় করে ছিলেন। সভাস্থল থেকে দু’শো মিটার দূরে এই জায়গায় কোনও মাইক না থাকায় পৌঁছননি নেত্রীর কথাও।

মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চ ছাড়ার পরে খাবারের জায়গার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ঘোষণা করেন, “সভা শেষ হয়ে গিয়েছে। আর খাবার দেওয়া যাবে না। আমরা দুঃখিত!” তখনও হাল ছাড়েননি অনেকেই। কেউ কেউ থার্মোকলের থালা না পেয়ে প্লাস্টিকেই ভাত, ডাল নিয়ে অনেকে মিলে একপাতে খাওয়া শুরু করেন। অবস্থা দেখে কিছুটা ক্ষোভ ছড়ায় কর্মীদের মধ্যে। ঘাটালের ক্ষীরপাই থেকে আসা অরূপ নাগ বলেন, “দেড় ঘণ্টা কাউন্টারে দাঁড়িয়ে আছি। এখন বলছে আর খাবার মিলবে না। আগে জানলে দু’মুঠো খেয়েই আসতাম!”

debmalya bagchi kharagpur tmc rally meeting mamata mamata bandyopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy