Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

জামাতের সঙ্গে ৭৫ কোটির লেনদেন, অভিযোগ বিজেপির

তৃণমূল সাংসদ আহমদ হাসান ইমরানের সঙ্গে বাংলাদেশের জেএমবি (জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ)-র এক মাথার সম্পর্ক আছে বলে এ বার অভিযোগ তুলল বিজেপি। দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক তথা এ রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহ বৃহস্পতিবার অভিযোগ করেন, “গত দু’বছরে এ রাজ্যের রাজনীতিকদের সঙ্গে জেএমবি নেতা শওকতের ১৮ দফায় আর্থিক লেনদেন হয়েছে। লেনদেনের পরিমাণ প্রায় ৭৫ কোটি টাকা।” প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালে জেএমবি যে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বাংলাদেশের সর্বত্র তাদের অস্তিত্বের প্রমাণ দেয়, গোয়েন্দাদের দাবি অনুযায়ী তার মাথা ছিল জঙ্গি নেতা বাংলা ভাইয়ের সহযোগী এই শওকত আলি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:৫২
Share: Save:

তৃণমূল সাংসদ আহমদ হাসান ইমরানের সঙ্গে বাংলাদেশের জেএমবি (জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ)-র এক মাথার সম্পর্ক আছে বলে এ বার অভিযোগ তুলল বিজেপি। দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক তথা এ রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহ বৃহস্পতিবার অভিযোগ করেন, “গত দু’বছরে এ রাজ্যের রাজনীতিকদের সঙ্গে জেএমবি নেতা শওকতের ১৮ দফায় আর্থিক লেনদেন হয়েছে। লেনদেনের পরিমাণ প্রায় ৭৫ কোটি টাকা।” প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালে জেএমবি যে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বাংলাদেশের সর্বত্র তাদের অস্তিত্বের প্রমাণ দেয়, গোয়েন্দাদের দাবি অনুযায়ী তার মাথা ছিল জঙ্গি নেতা বাংলা ভাইয়ের সহযোগী এই শওকত আলি।

সিদ্ধার্থনাথের তরফে তৃণমূল-জামাত যোগের অভিযোগ অবশ্য এই প্রথম নয়। সাম্প্রতিক কালে বহু বারই তিনি অভিযোগ করেছেন, সংখ্যালঘু ভোট পেতে বাংলাদেশের মৌলবাদী দল জামাতে ইসলামিকে ব্যবহার করেছে তৃণমূল। এই জামাতই জেএমবি-র পৃষ্ঠপোষক। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের সঙ্গে বোঝাপড়ার ভিত্তিতেই জেএমবি এ রাজ্যে মৌলবাদী-জঙ্গি কার্যকলাপ চালাচ্ছে। সিদ্ধার্থনাথ এ অভিযোগও করেছিলেন, বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারকে উৎখাত করতে জামাতের সক্রিয়তায় সহযোগী ভূমিকা ছিল তৃণমূলের, এবং সে কাজে সারদার টাকাও ব্যবহার হয়েছে। রাজ্যসভার সদস্য ইমরানই জামাত ও তৃণমূলের মধ্যে যোগসূত্র এই দাবি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতার।

সিদ্ধার্থনাথ এ দিন বলেন, বাংলাদেশের গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে সে দেশের সংবাদপত্র তৃণমূল-জামাত যোগের খবর আগেই প্রকাশ

করেছিল। এখন ভারতের গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে এ দেশের সর্বভারতীয় সংবাদপত্রেও তৃণমূলের সঙ্গে জামাত, বিশেষত ইমরানের সম্পর্কের নানা খবর প্রকাশিত হচ্ছে। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিও এইসব সংবাদ প্রতিবেদন। সিদ্ধার্থনাথ বলেন, “একুশে ফেব্রুয়ারির ভাষা দিবসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশে যাচ্ছেন ভাল কথা। আমরা তাঁর সফরকে স্বাগত জানাচ্ছি। কিন্তু তার আগে দুটো প্রশ্ন আছে। জামাত নেতা এবং তৃণমূল সাংসদের মধ্যে কী আর্থিক সম্পর্ক? জামাতের সঙ্গে তাঁর দলের নেতাদের সম্পর্কটা কী? উনি কি তার ব্যাখ্যা দেবেন?”

সিদ্ধার্থনাথের অভিযোগকে অবশ্য ‘আষাঢ়ে গল্প’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “উনি আগে বলেছিলেন, খাগড়াগড়ের তদন্তে রাজ্য পুলিশ এনআইএ-কে সহযোগিতা করছে না। পরে ওঁদের সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীই জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের ভূমিকায় তাঁরা সন্তুষ্ট! বাংলার ভূগোল, ইতিহাস কিছুই জানেন না সিদ্ধিনাথ (সিদ্ধার্থনাথ)। উনি কি নিজেকে আজকাল সমান্তরাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভাবছেন নাকি?” আর যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই তৃণমূল সাংসদ ইমরান এ দিন ফোন ধরেননি। এসএমএসেরও জবাব দেননি। বিজেপি-তৃণমূল এই চাপান-উতোরের অবসরে কংগ্রেস অবশ্য মমতার বাংলাদেশ সফরের ‘রহস্য’ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান বলেন, “মনমোহন সিংহ প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশ সফর থেকে বেঁকে বসে মমতা তাঁকে অসম্মান করেছিলেন। এখন হঠাৎ আবার কী হল যে, তিনি বাংলাদেশ যেতে উঠেপড়ে লেগেছেন! বিজেপি এবং তৃণমূল এই রহস্যটা একটু খোলসা করে বলুক!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

siddharthanath singha jamat tmc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE