Advertisement
E-Paper

জঙ্গলমহলে হাসি কই, পুস্তিকায় প্রশ্ন সিপিএমের

জঙ্গলমহল হাসছে। লোকসভা ভোটের মুখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের এই দাবিকে ‘চ্যালেঞ্জ’ করছে সিপিএম। একেবারে হাতে-গরম তথ্য নিয়ে আসরে নেমেছে তারা। গত আড়াই বছরে জঙ্গলমহলে এসে মুখ্যমন্ত্রী পঞ্চাশটিরও বেশি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তার কোনটার কী অবস্থা, তা নিয়েই সিপিএমের পুস্তিকা, ‘জঙ্গলমহল প্রকল্পের ভাঁওতা-সিরিজ।’ দাম ২ টাকা। তবে বিলি হচ্ছে বিনামূল্যেই। তথ্য-পরিসংখ্যান ঠাসা পুস্তিকা পৌঁছে যাচ্ছে বাড়ি বাড়ি।

কিংশুক গুপ্ত

শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:১৩
বিলি করা হচ্ছে সিপিএমের প্রচার পুস্তিকা। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

বিলি করা হচ্ছে সিপিএমের প্রচার পুস্তিকা। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

জঙ্গলমহল হাসছে। লোকসভা ভোটের মুখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের এই দাবিকে ‘চ্যালেঞ্জ’ করছে সিপিএম। একেবারে হাতে-গরম তথ্য নিয়ে আসরে নেমেছে তারা। গত আড়াই বছরে জঙ্গলমহলে এসে মুখ্যমন্ত্রী পঞ্চাশটিরও বেশি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তার কোনটার কী অবস্থা, তা নিয়েই সিপিএমের পুস্তিকা, ‘জঙ্গলমহল প্রকল্পের ভাঁওতা-সিরিজ।’ দাম ২ টাকা। তবে বিলি হচ্ছে বিনামূল্যেই। তথ্য-পরিসংখ্যান ঠাসা পুস্তিকা পৌঁছে যাচ্ছে বাড়ি বাড়ি।

মাত্র ১২ পাতার পুস্তিকায় দেখা যাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর ২০১১ সালের ১২-১৩ জুলাই প্রথম জঙ্গলমহলে এসে ২৭টি প্রতিশ্রুতি দেন মমতা। ১৯টির ক্ষেত্রে কোনও কাজ হয়নি। বাকিগুলির কাজ হয় প্রাথমিক পর্যায়ে আটকে, নাহলে আধাখ্যাঁচড়া ভাবে হচ্ছে। যেমন, সাঁওতালি ভাষায় স্থায়ী ১৮০০ শিক্ষক নিয়োগের প্রতিশ্রুতি ছিল। নিয়োগ হয়েছে ১১৬৯জন, সকলেই অস্থায়ী, অনেকেই অলচিকি জানেন না। ৭৫ হাজার পরিবারকে কৃষি পেনশন দেওয়া হবে বলা হলেও, বাস্তবে সেই সংখ্যা ১০ হাজারও ছাড়ায়নি।

পুস্তিকার প্রথমেই বাম আমলে জঙ্গলমহলের উন্নয়নে কী কী হয়েছিল, তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ রয়েছে। আদিবাসী পরিবারগুলিকে ২ টাকা কেজি দরে চাল বিলি, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীদের সাইকেল বিলি, পিছিয়ে-পড়া এলাকা উন্নয়নে অর্থ ব্যয়, আদিবাসী মহিলাদের স্বনির্ভর করা ইত্যাদি নানা কাজ ফ্রন্ট ক্ষমতায় থাকাকালীনই যে হয়েছিল, তা মনে করানো হয়েছে। তারপর দেখানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন অনেক, কাজ হয়েছে সামান্য।

বামেদের যে প্রচার-ভঙ্গিমা দেখতে রাজ্যবাসী অভ্যস্ত, তার থেকে এই তথ্য-পুস্তিকা একেবারেই আলাদা। পুস্তিকাটির চেহারাও অন্য রকম। কোথাও লাল রং নেই। ঝকঝকে প্রচ্ছদ, সুন্দর ছাপা। সিপিএম নেতৃত্বের আশা, এমন তথ্যনিষ্ঠ বিরোধিতা মানুষকে টানবে। বিরোধী দলনেতা ও দলের পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্রের কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী দাবি করছেন, তাঁর উন্নয়ন গোটা দেশের কাছেই মডেল। এই যদি মডেল হয়, গোটা দেশে বিপর্যয় হবে।”

পুস্তিকাটি মানুষের মনে দাগ কাটছে বলে দাবি সিপিএম নেতাদের। ঝাড়গ্রাম লোকসভায় সিপিএম প্রার্থী পুলিনবিহারী বাস্কের কথায়, “পুস্তিকাটিতে সত্যি ছবিটা তুলে ধরা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর সরকারের তরফে জঙ্গলমহল হাসছে বলে যে দাবি করা হচ্ছে, সেটা আসলে কী, তা ভোটারদের জানানোটা বিরোধী দলের দায়িত্ব। সব দেখে মানুষের মোহভঙ্গ হচ্ছে।” তৃণমূল নেতৃত্ব প্রকাশ্যে এ সবে বিশেষ আমল দিচ্ছেন না। দলের নেতা তথা তমলুকের প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর মতে, “সিপিএম যত বলবে উন্নয়ন হয়নি, জঙ্গলমহলে ওদের ভোট তত কমবে। গত পঞ্চায়েত ও পুর নির্বাচনে জঙ্গলমহল থেকে ধুয়ে মুছে গিয়েও ওদের শিক্ষা হয়নি! লোকসভা ভোটেও সিপিএম সাফ হয়ে যাবে!” পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা পরিসংখ্যান দিয়ে দাবি করেন, “২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে কেবল আমার দফতর থেকে ১৬০ কোটি টাকার কাজ হয়েছে।” তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি দীনেন রায়েরও বক্তব্য, “গত আড়াই বছরে জঙ্গলমহলের চিত্রটা বদলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।”

পুস্তিকা অবশ্য অন্য কথা বলছে।

(সহ-প্রতিবেদন: দেবব্রত দাস)

lok sabha election kingshuk gupta jhargram cpm
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy