Advertisement
E-Paper

জড়িয়ে ধরলেন ‘জেঠু’, জল্পনা দেবরাজকে নিয়ে

যাঁর বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে দল ছেড়েছিলেন, শুক্রবার সেই ‘জেঠু’র আলিঙ্গনে আবদ্ধ হলেন নতুন কাউন্সিলর ‘ভাইপো’। ভোটের আগে ‘ভাইপো’ শুধু দলই ছাড়েননি, ‘জেঠুর কীর্তি’ ফাঁস করে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৫ ০৩:৩৯
আলিঙ্গন। এক মঞ্চে পূর্ণেন্দু বসু এবং দেবরাজ চক্রবর্তী।—নিজস্ব চিত্র।

আলিঙ্গন। এক মঞ্চে পূর্ণেন্দু বসু এবং দেবরাজ চক্রবর্তী।—নিজস্ব চিত্র।

যাঁর বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে দল ছেড়েছিলেন, শুক্রবার সেই ‘জেঠু’র আলিঙ্গনে আবদ্ধ হলেন নতুন কাউন্সিলর ‘ভাইপো’।

ভোটের আগে ‘ভাইপো’ শুধু দলই ছাড়েননি, ‘জেঠুর কীর্তি’ ফাঁস করে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন। এখনও পর্যন্ত অবশ্য ‘জেঠুর কীর্তি’ তিনি ফাঁস করেননি। ভোটে জিতে এ দিন শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে তাঁরা দু’জনেই বসেছিলেন এক মঞ্চে। অনুষ্ঠান চলার সময় তাই সকলেরই আলাদা করে নজর ছিল তাঁদের দিকেই। শেষ পর্যন্ত ‘ভাইপো’কে বুকে টেনে নিলেন ‘জেঠু’। দর্শকরা হাততালি দিলেন। আওয়াজ উঠল, ‘‘ঘরের ছেলে, ঘরে ফিরে আয়!’’

শেষ পর্যন্ত কবে তিনি ঘরে ফিরবেন তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। কারণ, বিধাননগর-রাজারহাট পুরনিগমের ভোটে দলের টিকিট না পেয়ে ‘ভাইপো’ দেবরাজ চক্রবর্তী ক্ষোভে তৃণমূল ছেড়েছিলেন। ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন কংগ্রেস প্রার্থী হয়ে। ভোটের আগে তিনি ছিলেন রাজারহাট-গোপালপুরের বিধায়ক তথা কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর আপ্ত সহায়ক। তাঁকেই ‘জেঠু’ বলেন দেবরাজ। সবুজ জামা, নীল জিনস পরা পাতলা চেহারার দেবরাজ এ দিন শপথ বাক্য শেষ করতেই হাততালির ঝড় ওঠে। যাঁরা হাততালি দিলেন, তাঁরা প্রায় সকলেই শাসক দলের সমর্থক। যাঁদের অনেকেই চাইছেন, দেবরাজ তৃণমূলেই ফিরে আসুন।

আবার পূর্ণেন্দুবাবুও প্রকাশ্যেই বলেন, ‘‘দেবরাজকে তাঁর জয়ের জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছি। মানুষের জন্য দেবরাজ কাজ করবে আশা করি। আপনারা বিশ্বাস রাখুন, কাজ করার জন্যে দেবরাজকে সব রকম ভাবে আমি সাহায্য করব।’’ বরফ কী তা হলে গলতে শুরু করেছে? দেবরাজ কি ফিরবেন পুরনো দলে? এখনও এমন কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই জানিয়েছেন দেবরাজ। বিধাননগর পুর নিগমে শপথ নেওয়ার পরেই এ দিন দেবরাজ দেখা করেন কংগ্রেসের সভাপতি অধীর চৌধুরীর সঙ্গে। অভিনন্দন জানানোর পরে অধীরবাবুও একই প্রশ্ন করেন দেবরাজকে। বিধাননগর, রাজারহাটে যে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে দেবরাজকে নিয়ে, তা কি সত্যি? দেবরাজ কি তৃণমূলে ফিরছেন? দেবরাজ কংগ্রেস সভাপতিকে বলেন, তিনি যদি তৃণমূলেই ফিরতেন, তা হলে কি শপথ নিয়েই অধীরের সঙ্গে দেখা করতে যেতেন! অধীরের কাছে দেবরাজের দাবি, তিনি কংগ্রেসে আছেন এবং থাকবেন।

বিধাননগর পুরনিগমের ভোটে দেবরাজকে ধরেই নতুন করে রাজারহাট-গোপালপুর আলোচনায় চলে আসে কংগ্রেস। সূত্রের খবর, যে ৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে দেবরাজ জিতেছেন, সেখানে তাঁকে হারাতে কার্যত চ্যালেঞ্জ নেয় তৃণমূল। যাঁর মূল উদ্যোক্তা ছিলেন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ দোলা সেন নিজে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তৃণমূল প্রার্থী খুরশিদ আলমকে হারিয়ে দেবরাজ জিতে যান। ভোটের দিন ওই ওয়ার্ডে ব্যাপক গোলমাল হয়। দেবরাজ ও পূর্ণেন্দুবাবু ওই ঘটনায় একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন। পূর্ণেন্দুবাবুর ঘনিষ্ঠ দক্ষিণ দমদম পুরসভার কাউন্সিলর সত্যব্রত সাঁতরাকে ওই গোলমালের সময় খুনের চেষ্টার অভিযোগে জেল খাটতেও হয় দেবরাজকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও শপথ মঞ্চে যে ভাবে দেবরাজ ও পূর্ণেন্দুবাবু একে অন্যকে জড়িয়ে ধরলেন তাতে অনেকেই ভাবতে শুরু করেছেন, পুরনো ‘শত্রুতা’ হয়ত দু’জনেই ভুলতে চাইছেন। পূর্ণেন্দুবাবু অবশ্য দেবরাজ নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেনি। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি বলেন, তৃণমূলে তিনি ফিরবেন কিনা তা একান্তই দেবরাজের উপর নির্ভর করছে। আর তাঁকে আবার দলে নেওয়ার বিষয়টিও তৃণমূল নেতৃত্বই ঠিক করবেন।

পূর্ণেন্দুবাবুর সঙ্গে এ দিন শুভেচ্ছা বিনিময়ে প্রসঙ্গে দেবরাজ অবশ্য বলেন,‘‘কাজের প্রয়োজনে তো মন্ত্রীর কাছে আমায় যেতেই হবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এমন কিছু ঘটেনি যে, আমি ফের তৃণমূলে ফিরব।’’

সব কথা ফাঁস করব, বার্তা ‘জেঠু’র ফোনে

কয়েক দিন আগে থানায় বসেই ‘জেঠু’-কে এসএমএস পাঠিয়েছিলেন বিধাননগর পুরসভার কংগ্রেস প্রার্থী দেবরাজ চক্রবর্তী। লিখেছিলেন, ‘‘জেঠু, আমি অ্যারেস্ট হলাম। ভুল কিছু করিনি, তা-ও হলাম। আমি কাল প্রেসকে সব বলব তোমার আর দোলাদির ব্যাপারে। এত নীচে নামবে আমি জানতাম না। থ্যাঙ্ক ইউ।’’ কে জেঠু? কে-ই বা দোলাদি? দেবরাজের এই ‘জেঠু’ রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু। আর ‘দোলাদি’ হলেন পূর্ণেন্দু-ঘনিষ্ঠ সাংসদ দোলা সেন। সেই খবর সবিস্তার পড়তে ক্লিক করুন...

abpnewsletters
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy