‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’ বা কাজ বন্ধের নোটিস বৃহস্পতিবার রাতেই উঠে গিয়েছিল। শুক্রবার সকাল থেকে তাই হাওড়ার বার্ন স্ট্যান্ডার্ডের সামনে ছিল খুশির হাওয়া। ফের শুরু হয়ে গিয়েছে কাজ।
তবে যে-ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাসপেনশন অব ওয়ার্কের নোটিস পড়েছিল, তার তদন্তে এ দিনও পুলিশকে সে-ভাবে উদ্যোগী হতে দেখা যায়নি। গ্রেফতার করা দূরের কথা, এ দিন অভিযুক্ত দুই মেয়র-পারিষদ ও পাঁচ তৃণমূল নেতাকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়নি। পুলিশ জানায়, গত বুধবার কারখানার জেনারেল ম্যানেজারকে মারধর করা হয়েছিল কি না, তা জানার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে সিসিটিভি-র হার্ডডিস্ক চেয়ে পাঠানো হয়েছে। সেটি পাঠানো হবে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য।
এ দিন কারখানা খোলার খবর পেয়ে সকাল থেকেই কর্মীরা কারখানার দু’নম্বর গেটের সামনে ভিড় জমাতে শুরু করেন। কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবারেই নির্দেশ দিয়েছিলেন, পরিচয়পত্র ছাড়া কোনও কর্মীকেই ঢুকতে দেওয়া হবে না। নিরাপত্তার জন্য সকাল থেকেই ফটকের সামনে পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়। পরিচয়পত্র ছাড়া কাউকেই এ দিন কারখানায় ঢুকতে দেননি রক্ষীরা। যে-সব কর্মী পরিচয়পত্র দেখাতে পারেননি, তাঁদের ফিরে যেতে হয়।
সকালে কারখানা ফের চালু হওয়ার পরে নিজের দফতরে যাওয়ার আগে কারখানার গেটে আসেন রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী তথা হাওড়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি (শহর) অরূপ রায়। গাড়িতে বসেই কারখানার পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন তিনি। পরে মন্ত্রী বলেন, “কারখানা খুলে গিয়েছে, এটাই সব থেকে ভাল কথা। কিন্তু রাজ্য সরকার চায়, কর্মচ্যুত ১৭৫ জন শ্রমিকের কথাও কর্তৃপক্ষ যেন একটু ভাবেন।”
বরখাস্ত হওয়া ১৭৫ জন অস্থায়ী কর্মীকে পুর্নবহালের দাবিতে ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে কারখানার গেটে রিলে অনশন করছিল তৃণমূল সমর্থিত একটি শ্রমিক সংগঠন। তাদের সমর্থন করেন অরূপবাবু। তাঁর নির্দেশেই বুধবার হাওড়া পুরসভার চেয়ারম্যান অরবিন্দ গুহের নেতৃত্বে তিন জন মেয়র-পারিষদ-সহ তৃণমূল নেতারা কারখানায় যান। কারখানার জেনারেল ম্যানেজারকে মারধর এবং হাঙ্গামা চালানোর অভিযোগ ওঠে ওই নেতাদের বিরুদ্ধে। রাতে ওই তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান কারখানা-কর্তৃপক্ষ। সে-রাতেই সাসপেনশন অব ওয়ার্ক ঘোষণা করা হয়।
কিন্তু ঘটনার তদন্ত শুরু হওয়ার আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেন, বার্ন স্ট্যান্ডার্ডে কোনও মারধরের ঘটনাই ঘটেনি। শুধু তর্কাতর্কি হয়েছে। তদন্তের আগেই মুখ্যমন্ত্রী এ কথা ঘোষণা করে দেওয়ায় পুলিশ এই তদন্ত ঠিক ভাবে করবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিরোধী দলগুলি।
পুলিশি সূত্রের খবর, ঘটনার পরে ৪৮ ঘণ্টা কেটে গেলেও অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ হয়নি। যদিও হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তার অবশ্য দাবি, “তদন্ত ঠিক ভাবেই এগোচ্ছে। এই নিয়ে কোনও গাফিলতি করা হবে না। সকলকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy