Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

তৃণমূলের ‘ত্রিনেত্র অস্বস্তি’ বাড়ালেন সিদ্ধার্থনাথ

তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘ত্রিনেত্র দুর্নীতি’র অভিযোগ তুলে আগেই নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি। এ বার ওই বিষয়ে আরও কয়েকটি অভিযোগ এনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিবৃতি দাবি করলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক তথা রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহ।

সাংবাদিক বৈঠকে সিদ্ধার্থনাথ সিংহ। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।

সাংবাদিক বৈঠকে সিদ্ধার্থনাথ সিংহ। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৫ ০৩:৩০
Share: Save:

তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘ত্রিনেত্র দুর্নীতি’র অভিযোগ তুলে আগেই নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি। এ বার ওই বিষয়ে আরও কয়েকটি অভিযোগ এনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিবৃতি দাবি করলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক তথা রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহ। মঙ্গলবার তিনি বলেন, “ত্রিনেত্র কনসালটেন্সি প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি সংস্থা তৃণমূলকে ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা দিয়েছিল। তারা এখন জানাচ্ছে, ২০১৩-’১৪ আর্থিক বছরে আরও সাড়ে তিন কোটি টাকা তারা তৃণমূলকে দিয়েছে। অথচ, ওই সময়ে তাদের ব্যবসার মোট পরিমাণ ছিল ৩৩ হাজার টাকা। তা হলে অত টাকা তারা তৃণমূলকে দিল কী করে?” পাশাপাশি, সিদ্ধার্থনাথের আরও প্রশ্ন, “সাড়ে তিন কোটি টাকার এই তথ্য তৃণমূল কি নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে?”

গত বছর লোকসভা ভোটে তৃণমূলের তহবিল এবং খরচ সংক্রান্ত যে নথি নির্বাচন কমিশনে পেশ করা হয়েছে, তাতে সই করেছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। সেই নথিতে বলা হয়েছে, ত্রিনেত্র লোকসভা ভোটে তৃণমূলকে ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা দিয়েছিল। ওই বিষয়ে বিজেপি নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তদন্ত দাবি করেছিল। এ দিন সিদ্ধার্থনাথ আরও প্রশ্ন তোলেন, “ওই সংস্থার অ্যাকাউন্টে ১১ কোটি এবং ৩৭ কোটি টাকা কী করে ধার হিসাবে এল? এ বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি নীরবতা ভাঙবেন?” তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য জানান, এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন কিছু জানতে চাইলে, তাদেরই তাঁরা জানাবেন।

বিজেপি-র ওই কেন্দ্রীয় নেতার আরও অভিযোগ, এ রাজ্যের সীমান্তে খোলাখুলি চোরাচালান হচ্ছে। এ পার থেকে গরু বাংলাদেশে যাচ্ছে। সেখান থেকে সোনা পাচার হয়ে আসছে। সীমান্তবর্তী এলাকার এক তৃণমূল বিধায়কের ভাই আব্দুল বারিক বিশ্বাসের অ্যাকাউন্টে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) ১২০ কোটি টাকার হদিশ পেয়েছে। নেপাল থেকে রাজ্যে ঢুকছে জাল নোট। এ সবের জন্যই রাজ্য তথা মুখ্যমন্ত্রীর ‘অপশাসন’কে দায়ী করেন সিদ্ধার্থনাথ।

তাঁর আরও প্রশ্ন, “এ রাজ্যে ৬০ কোটি টাকার জাল নোট পাওয়া গিয়েছে। তা বিদেশ থেকে আসেনি। এ রাজ্যেই ছাপা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী কি এর কোনও সদুত্তর দেবেন?” জাল নোট, খাগড়াগড় বিস্ফোরণ, গরু পাচার প্রসঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। খাগড়াগড়ে জামাত যোগ মিলেছে। জাল নোট তৈরির পিছনেও কি তেমন কোনও সংগঠনের ভূমিকা আছে বলে তিনি মনে করেন? সিদ্ধার্থনাথের জবাব, “কেন্দ্রীয় সংস্থা তদন্ত করছে। অনেক কিছুই সামনে আসছে। এত বড় জাল! এর জন্য কে দায়ী?’’

সংসদে বিজেপি-কে বিপাকে ফেলতে কালো টাকা নিয়ে বিস্তর চেঁচামেচি করছে তৃণমূল। সোমবার তারা সংসদে কালো ঝুড়ি নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। কিন্তু তৃণমূলের বিরুদ্ধেই এত রকম দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। সেই প্রসঙ্গ তুলে সিদ্ধার্থনাথ কটাক্ষ করেন, “ওঁদের কালো রঙের প্রতি ভালবাসা আছে। সে জন্য কালো ছাতা, কালো পট্টি, কালো ঝুড়ি নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। এ বার কালো টাকার প্রসঙ্গ তোলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। কারণ বিজেপিই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE