Advertisement
E-Paper

‘না’-এর পথে পুরসভা, অনড় বিজেপিও

ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে বিজেপি-র সভা করার দাবি নিয়ে বুধবারও দিনভর নাটক চলল পুরসভায়। আগামী ৩০ নভেম্বর সেখানে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সভা করাতে চায় বিজেপি। কিন্তু বিজেপিকে সেখানে সভা করার অনুমতি না দেওয়ার পথেই এগোচ্ছে পুরসভা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৪৩
চলছে মাপজোক। ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে পুরসভার লোকজন। বুধবার রাজীব বসুর তোলা ছবি।

চলছে মাপজোক। ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে পুরসভার লোকজন। বুধবার রাজীব বসুর তোলা ছবি।

ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে বিজেপি-র সভা করার দাবি নিয়ে বুধবারও দিনভর নাটক চলল পুরসভায়। আগামী ৩০ নভেম্বর সেখানে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সভা করাতে চায় বিজেপি। কিন্তু বিজেপিকে সেখানে সভা করার অনুমতি না দেওয়ার পথেই এগোচ্ছে পুরসভা। এ দিন পুরসভার এক আমলার ইঙ্গিত, আজ, বৃহস্পতিবার বিজেপির দলীয় অফিসে পুর প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ রকমই জবাব পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য ওখানেই সভা করার ব্যাপারে তাঁদের অবস্থান থেকে এক চুল নড়েননি। এ দিন দলের রাজ্য নেতা রীতেশ তিওয়ারি বলেন, “পুরসভা বা দমকল কী বলল, তাতে কিছু যায় আসেনা। আমাদের সভা ঘোষিত স্থানে হবেই।”

ধর্মতলায় বিজেপি-কে সভা করতে না দেওয়ার ব্যাপারে এ দিন তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার কর্তাদের তৎপরতা ছিল তুঙ্গে। দিনের শেষে পুরসভার সূত্রে খবর, অনুমতি না দেওয়ার জন্য যে কারণ দেখানোর দরকার, তা খুঁজতেই সন্ধ্যে পর্যন্ত দফায় দফায় বৈঠক করেন মেয়র, পুর কমিশনার সহ পদস্থ আধিকারিকেরা। যে তথ্য পুরসভা থেকে মিলেছে তা হল, রাস্তার হাল, ফুটপাথ এবং আরও কয়েকটি বিষয়ে অসুবিধার কথা তুলে অনুমতি না দেওয়ার যুক্তি দেখানো হবে। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় অবশ্য এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। তিনি শুধু বলেছেন, “যথা সময়ে বিজেপির কাছে ওঁদের চিঠির জবাব পাঠিয়ে দেওয়া হবে।”

রীতেশ জানান, ২০১০ সালে বামফ্রন্ট সরকার বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সভাকে অজুহাত করে বিজেপি-র মহাকরণ অভিযান কর্মসূচিকে অনুমতি দেয়নি। কিন্তু পুলিশের বাধা সত্ত্বেও তখন সেই অভিযান হয়েছিল। এ বারও তাঁদের সভা হবে। তাঁর কথায়, “মমতার সরকার যদি সিপিএমের পথে চলতে চায়, তবে তাঁদের পরিণতি সিপিএমের মতোই হবে।”

অন্যদিকে, বিজেপি’র সভা নিয়ে জোর বিতর্ক চলছে পুরসভার অন্দরেও। বিরোধী সিপিএম, কংগ্রেস তো আছেই, আলোচনায় বাদ যাননি শাসক দলের মেয়র পারিষদ থেকে কাউন্সিলেরাও। একাধিক কাউন্সিলরের মতে, ওখানে সভা করার অনুমতি না দেওয়ার কী কারণ তা বোঝা যাচ্ছে না। এতে তো বিজেপির পালে হাওয়া দেওয়া হচ্ছে। ওখানে সভা আটকানোর কোনও যৌক্তিকতা নেই বলে মনে করছেন একাধিক মেয়র পারিষদও। তাঁদের কথায়, “সরাসরি না বলে ওঁদের অন্য জায়গায় সভা করতে বলার অনুরোধও জানানো যেত। কেন সেই পথে যাওয়া হল না তা বোঝা যাচ্ছে না।” দলীয় কয়েকজন কাউন্সিলর বলেন, “রবিবার ছুটির দিনে সভা। কতই বা লোক আসত! সংবাদমাধ্যমের সৌজন্যে এখন ব্যাপারটা যে জায়গায় পৌঁছচ্ছে তাতে সাধারণ মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে।”

অনুমতি দেওয়া নিয়ে টালবাহানায় যথেষ্ট অস্বস্তিতে পুরসভার কর্তারাও। এ দিন পুর কমিশনারের নির্দেশে প্রস্তাবিত সভাস্থল ও সংলগ্ন চত্বর ঘুরে দেখার জন্য পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের একটি দল সেখানে যান। ওই দলে ছিলেন সিভিল, রাস্তা এবং কঠিন বর্জ্য দফতরের তিন ডিজি সহ প্রায় ১৫ জনের একটি দল। তাঁরা প্রস্তাবিত জায়গার সামনের রাস্তা থেকে শুরু করে ফুটপাথের মাপজোক করেন। সভাস্থল সংলগ্ন এলাকার ছবিও তোলা হয়। পরে এই বিষয়ে তাঁরা একটি রিপোর্টও তৈরি করেন।

এর আগেই অবশ্য মেয়রের কাছে পুরো পরিস্থিতি জানিয়ে দেওয়া হয়। পুর কমিশনার খলিল আহমেদ ও পুর সচিবকে নিয়ে বৈঠক করেন মেয়র। তখনই ঠিক হয়, অনুমতি না দেওয়ার ব্যাপারে কী ‘যুক্তি’ পুরসভা থেকে চলে যাওয়ার পরে ওই ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে বৈঠক করেন পুর কমিশনার। তারপরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় অনুমতি না দেওয়ার বিষয়টি বিজেপিকে জানিয়ে দেওয়া হবে।

কলকাতা হাইকোর্টে বিজেপি-র দায়ের করা মামলায় বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন, আজকের মধ্যেই পুরসভা, দমকল-সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সভার অনুমতির ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বিজেপিকে জানিয়ে দিতে হবে। কলকাতা পুলিশের উপর একই নির্দেশ রয়েছে। পুরসভা শেষ পর্যন্ত ‘না’ বললে দমকল এবং পুলিশ কী করে, তা এখন দেখার।

convention bjp amit shah dharmatala
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy