Advertisement
E-Paper

নির্যাতিতা আতঙ্কেই, সিবিআই চায় বিজেপি

পাড়ুইয়ের পুলিশি নির্যাতনের ঘটনায় দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি করল একটি মানাধিকার সংগঠন। রবিবার দুপুরে পাড়ুইয়ের সাত্তোরে গিয়ে নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করে সংগঠনের বারো সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। পরে সাংবাদিকদের ওই সংগঠনের বীরভূম জেলা সম্পাদক দয়াল দাস বলেন, “নির্যাতিতা মহিলা এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। গোটা পরিবার আতঙ্কে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নির্যাতিতার বাপের বাড়িতেও আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। আমরা দোষী পুলিশ কর্মী ও অফিসারদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাছি। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রয়োজনীয় সুপারিশও করব।”

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৪৯
পাড়ুইয়ের সাত্তোরে নির্যাতিতার বাড়ির সামনে পুলিশি প্রহরা। রবিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

পাড়ুইয়ের সাত্তোরে নির্যাতিতার বাড়ির সামনে পুলিশি প্রহরা। রবিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

পাড়ুইয়ের পুলিশি নির্যাতনের ঘটনায় দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি করল একটি মানাধিকার সংগঠন। রবিবার দুপুরে পাড়ুইয়ের সাত্তোরে গিয়ে নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করে সংগঠনের বারো সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। পরে সাংবাদিকদের ওই সংগঠনের বীরভূম জেলা সম্পাদক দয়াল দাস বলেন, “নির্যাতিতা মহিলা এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। গোটা পরিবার আতঙ্কে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নির্যাতিতার বাপের বাড়িতেও আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। আমরা দোষী পুলিশ কর্মী ও অফিসারদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাছি। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রয়োজনীয় সুপারিশও করব।” ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসার পরেই প্রয়োজনীয় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়ে ‘অখিল ভারতীয় মানবাধিকার রক্ষা পরিষদ’ নামে ওই সংগঠন জেলার পুলিশ সুপারকে স্মারকলিপি দিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

বীরভূমে বিজেপি-র উত্থান যে অঞ্চল থেকে, সেই পাড়ুই থানারই সাত্তোর এলাকায় শ্বশুরবাড়ি ওই বধূর। দিন কয়েক আগে তিনি বর্ধমানের বুদবুদ থানার কলমডাঙা গ্রামে, নিজের বাপের বাড়িতে গিয়েছিলেন। বোমাবাজির ঘটনায় অভিযুক্ত তাঁর এক ভাসুরপোকে ধরতে গত ১৭ জানুয়ারি রাতে ওই গ্রামেই হানা দেয় বীরভূম জেলা পুলিশের একটি বিশেষ দল। অভিযোগ, অভিযুক্তকে না পেয়ে পুলিশ তাঁর কাকিমাকে (ওই বধূ) তুলে নিয়ে গিয়ে রাতভর শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন চালিয়েছে। ওই বধূর পরিবারের দাবি, বীরভূম জেলা পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের (এসওজি) ওসি কার্তিকমোহন ঘোষের নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী ওই অত্যাচার চালিয়েছে। পুলিশের সঙ্গে পাড়ুইয়ের দাপুটে তৃণমূল নেতা শেখ মুস্তফা, তাঁর দলবলও ছিল বলে নির্যাতিতার দাবি। অভিযুক্তেরা প্রত্যেকেই অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। যদিও ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই চাপের মুখে পড়েছিল জেলা পুলিশ। তোলপাড় শুরু হয়ে যায় রাজ্য-রাজনীতিতে। চাপের মুখে জেলার পুলিশ সুপার ওই ঘটনা নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে একটি রিপোর্ট দিতে বলেন। ওই রিপোর্টের প্রেক্ষিতেই সে দিনের অভিযানে সামিল পুলিশ অফিসার এবং কর্মীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা পুলিশ। সাসপেন্ড করা হয়েছে কার্তিকবাবুকে। ওই এসআই-সহ তিন পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। পাশাপাশি ‘শো-কজ’ করা হয়েছে এসডিপিও (বোলপুর) অম্লানকুসুম ঘোষ-সহ জেলার ৯ পুলিশকর্মী ও আধিকারিককে।

এ দিকে, নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, শনিবার রাতে এলাকায় দুষ্কৃতীরা বোমাবাজি করেছে। যদিও শনিবার বিকেলে থেকেই নির্যাতিতার বাড়ির পাশে পুলিশ পিকেট রয়েছে। নির্যাতিতা এবং তাঁর পরিবারের জন্য দু’জন মহিলা কনস্টেবল সেখানে রয়েছেন। তবে, এ দিনও নির্যাতিতা অভিযোগ করেন, “সারাক্ষণ আতঙ্ক তাড়া করছে। বাপের বাড়ির লোকেদেরও নিস্তার নেই। অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য তৃণমূল সমানে চাপ দিচ্ছে। মারধর, লুঠপাট করছে।” এ দিন নির্যাতিতার স্বামীও দাবি করেন, “শান্তিতে থাকবো কী করে? অভিযুক্তেরা তো প্রকাশ্যে ঘুরে বেরাচ্ছে!” এ নিয়ে যোগাযোগ করা হলে জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে, সে রকমটা হলে সংশ্লিষ্ট থানাকে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে বলব।”

অন্য দিকে, ওই ঘটনার সিবিআই তদন্ত দাবি করে এ দিনই বর্ধমানের বুদবুদে মিছিল করে বিজেপি। বুদবুদের কলমডাঙা গ্রামে বধূটির বাপের বাড়ি। সেখান থেকেই তাঁকে পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করেছিল বলে অভিযোগ। বিজেপি-র আরও দাবি, নির্যাতিতার বাপের বাড়ির লোকজনকে তৃণমূল অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। তাই সেখানে পুলিশ পিকেট বসাতে হবে। পুলিশ অবশ্য জানায়, ওই গ্রামে ইতিমধ্যে নিয়মিত টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বিজেপি-র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা স্থানীয় বাসিন্দা নরেশ কোনার অভিযোগ করেন, এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এক জন। কিন্তু নারীদের কোনও নিরাপত্তা নেই এখানে। এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তভার রয়েছে সিআইডি-র হাতে। ফলে, তদন্তে অস্বচ্ছতা থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, “এর তদন্তভার দেওয়া হোক সিবিআইকে।”

parui cbi bjp budbud
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy