কংগ্রেসের অবরোধের ফাঁসে নবদম্পতি। বহরমপুরে। ছবি:গৌতম প্রামাণিক
রাজ্যে তৃণমূল-বিরোধিতার সুর বজায় রাখাতে নারী নির্যাতনের ঘটনাকে অস্ত্র করে পথে নামল প্রদেশ কংগ্রেস। রাজ্যে জুড়ে রাস্তা ও রেল অবরোধ করলেন কংগ্রেস কর্মীরা। আবার বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থীকে নিগৃহীত হতে হল দলের কর্মীদেরই একাংশের হাতে! বিক্ষোভকারীদের প্রশ্ন, তৃণমূলের সুবিধা করে দেওয়ার জন্যই কি বনগাঁয় দুর্বল প্রার্থী দিয়েছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব? এ সবের জেরে কংগ্রেসের অন্দরে বিভ্রান্তি ফের স্পষ্ট!
মহিলা মুখ্যমন্ত্রী থাকা সত্ত্বেও এ রাজ্যে নারী নির্যাতনের লাগাতার ঘটনা বন্ধ করতে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, এই অভিযোগে মঙ্গলবার রাজ্য জুড়ে এক ঘণ্টার পথ অবরোধ কর্মসূচি নিয়েছিল কংগ্রেস। কোথাও কোথাও তারা মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কুশপুতুল দাহ করেছে। জেলায় জেলায় বেলা ১১টা থেকে কর্মসূচি হলেও কলকাতায় নিত্যযাত্রীদের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে কলকাতায় ১০টিরও বেশি জায়গায় অবরোধ শুরু হয় বেলা ১২টার পরে। মানিকতলা মোড়ে পাঁচ মিনিটে অবরোধ তুলে নিতে বিক্ষোভকারীদের পুলিশ চাপ দেয় বলে কংগ্রেসের অভিযোগ। তবে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বচসার পরে সেখানে ঘণ্টাখানেকই পথ অবরোধ চলে। কামদুনি থেকে পাড়ুই একের পর এক নারী নির্যাতনে দোষীদের শাস্তি না হওয়ায় অবরোধ কর্মসূচি থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফা দাবি করেন কংগ্রেস কর্মীরা। প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী আইএনটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি রমেন পাণ্ডেকে সঙ্গে নিয়ে জানিয়েছেন, অবরোধে ওই শ্রমিক সংগঠনের কর্মীরাও অংশগ্রহণ করেছেন।
এক দিকে যখন পথে নেমে প্রতিবাদ করে সংগঠনকে চাঙ্গা রাখার চেষ্টা, সেই সময়েই অন্য রকম ঘটনা ঘটেছে বনগাঁয়। প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় সোমবার বনগাঁয় দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে গোলামাল বাধিয়েছেন কিছু কংগ্রেস কর্মী। প্রার্থী কুন্তল মণ্ডলকে ধাক্কাধাক্কি করে উল্টে ফেলা হয় দফতরের চেয়ার-টেবিল। গোলমাল চলাকালীন চেয়ারের আঘাতে এক কংগ্রেস কর্মীর নাক ফেটে রক্তারক্তি কাণ্ড বাধে! বনগাঁয় কংগ্রেস জিতবে, এমন আশা বিশেষ কারও নেই। তবু বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, তৃণমূলের হাত শক্ত করতে ‘দুর্বল’ প্রার্থী দিয়ে লড়াইয়ের আগেই হার স্বীকার করে নেওয়া হল!
বিক্ষুব্ধ পরিবেশেই অবশ্য এ দিন বনগাঁ বারাসতে জেলাশাসকের দফতরে মনোনয়ন জমা দেন কুন্তল। কৃষ্ণগঞ্জের কংগ্রেস প্রার্থী নিত্যগোপাল মণ্ডলও এ দিন মনোনয়নপত্র জমা দেন।
গোটা উত্তর ২৪ পরগনাতেই কংগ্রেস এখন দুর্বল। তার মধ্যে কাঁটা গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব। জেলা কংগ্রেস সভাপতি (গ্রামীণ) অসিত মজুমদারের সঙ্গে প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরীর সম্পর্ক ভাল না। অধীরবাবু বনগাঁয় প্রার্থী বাছার ক্ষেত্রে অসিতবাবুর মত নেননি বলেই দলীয় সূত্রের খবর। সোমবারের ঘটনায় অসিত-ঘনিষ্ঠদেরই হাত আছে বলে মনে করা হচ্ছে। অসিতবাবুর বক্তব্য, “ঘটনাটি লজ্জাজনক। দল যাকে প্রার্থী করেছে, তাকেই মেনে নেওয়া উচিত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy