Advertisement
E-Paper

পশ্চিমী ঝঞ্ঝা, জাঁকিয়ে শীতের আশ্বাস

শেষ পর্যন্ত পশ্চিমী ঝঞ্ঝাই কলকাতায় হাজির করাচ্ছে শীতকে। পৌষের একেবারে শুরুতেই। ঘূর্ণাবর্তের জেরে গত তিন দিন সূর্যের দেখাই মেলেনি। মেঘে ঢাকা ছিল আকাশ। তার জেরে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বাড়তে পারেনি। আবার সূর্য না থাকায় ভোরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও নেমে যাচ্ছিল। আবার রাতের তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে অস্বস্তি হচ্ছিল। হাওয়া অফিসের ভাষায়, ওই আবহাওয়া শীতের মতো হলেও তা প্রকৃত শীত ছিল না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:৩৪
ঠান্ডা-লড়াইয়ের প্রস্তুতি। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

ঠান্ডা-লড়াইয়ের প্রস্তুতি। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

শেষ পর্যন্ত পশ্চিমী ঝঞ্ঝাই কলকাতায় হাজির করাচ্ছে শীতকে। পৌষের একেবারে শুরুতেই।

ঘূর্ণাবর্তের জেরে গত তিন দিন সূর্যের দেখাই মেলেনি। মেঘে ঢাকা ছিল আকাশ। তার জেরে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বাড়তে পারেনি। আবার সূর্য না থাকায় ভোরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও নেমে যাচ্ছিল। আবার রাতের তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে অস্বস্তি হচ্ছিল। হাওয়া অফিসের ভাষায়, ওই আবহাওয়া শীতের মতো হলেও তা প্রকৃত শীত ছিল না। উত্তর ভারতে হানা দেওয়া পশ্চিমী ঝঞ্ঝাই শেষ পর্যন্ত শীতকে নিয়ে আসছে কলকাতায়।

রবিবার হাওয়া অফিস জানিয়ে দিয়েছে, আগামীকাল, মঙ্গলবার থেকেই রাতের তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে। বুধবার থেকে কড়া শীত অনুভূত হবে কলকাতা-সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গেই। হাওয়া অফিসের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ জানাচ্ছেন, পশ্চিমী ঝঞ্ঝার জেরে উত্তর ভারতে বৃষ্টি হচ্ছে। তুষারপাত শুরু হয়েছে হিমাচল প্রদেশের পার্বত্য এলাকায়। এর ফলে সেখানে তাপমাত্রা নামছে হু হু করে। শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে উত্তর-পশ্চিম ভারত এবং গুজরাতের কচ্ছে। রবিবার দেশের সমতলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে উত্তরপ্রদেশের শাজাহানপুরে। ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

হাওয়া অফিসের অধিকর্তা জানাচ্ছেন, “উত্তর ভারতের সেই অতিশীতল হাওয়াই বিহার, ঝাড়খণ্ড হয়ে নেমে আসবে কলকাতায়। আর এই পথ পেরোতে উত্তুরে হাওয়া নেবে আরও দু’দিন। মঙ্গলবার রাত থেকেই কলকাতাবাসী বুঝতে পারবেন, শীত পড়ছে। আর বুধবার থেকে পুরোপুরি শীতের মজা পাবেন তাঁরা।” হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, মঙ্গলবার থেকেই মেঘ কেটে গিয়ে সূর্য উঠবে ঝলমলিয়ে। বুধবার থেকে রোদে পিঠ দিয়ে উপভোগ করা যাবে শীত।

গত শুক্রবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল ১৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সূর্য উধাও। সঙ্গে যোগ হয়েছিল উত্তুরে হাওয়া। ঠান্ডায় জবুথবু ছিল মহানগরী। কুয়াশা ঢাকা মহানগরীর তুলনা শুরু হয়ে গিয়েছিল লন্ডনের সঙ্গে। কিন্তু হাওয়া অফিস জানিয়ে দেয়, ওটা শীত নয়।

শীত তা হলে কি?

আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, শীত হল এমন একটা প্রাকৃতিক পরিস্থিতি, যেখানে রাতের তাপমাত্রা ধাপে ধাপে কমে। দিনে আকাশ পরিষ্কার থাকায় দিনের তাপমাত্রা বাড়ে। সূর্যাস্তের পরে মাটি থেকে দ্রুত হারে তাপ বিকিরণ হয়। ফলে ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা কমতে থাকে লাফিয়ে লাফিয়ে। আবহবিদদের ব্যাখ্যা, দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সঙ্গে রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ফারাক বাড়ে, ততই বেশি করে অনুভূত হয় শীত। এটাই প্রকৃত শীত। গত তিন দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সঙ্গে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ফারাক কমে গিয়েই তৈরি হয়েছিল শীত শীত ভাব।

আগামীকাল, বুধবার থেকে সেই পরিস্থিতিটাই বদলে যাবে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বাড়বে। কমবে রাতের তাপমাত্রা। ফলে প্রকৃত শীতের দেখা মিলবে।

বর্ষার মতো শীতও পড়ে দফায় দফায়। এক দফায় জোরদার ঠান্ডা পড়ে। কোথাও কোথাও শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়। দিন সাত-আট পরে ফের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। ফেব্রুয়ারির গোড়া পর্যন্ত এ ভাবেই ওঠানামা করে শীতের রেখচিত্র। বুধবার থেকে শুরু হওয়া শীতের প্রথম দফা কত দিন স্থায়ী হবে?

উপগ্রহ চিত্র দেখে হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, জম্মু-কাশ্মীরে নতুন একটা পশ্চিমী ঝঞ্ঝা ঢুকছে পাকিস্তান থেকে। তার জেরে উত্তর ভারতে বৃষ্টিপাত এখনই কমবে না। ফলে কনকনে ঠান্ডা হাওয়ার জোগান থাকবে আরও কয়েকদিন। পাকিস্তান থেকে আসা পশ্চিমী ঝঞ্ঝার মর্জির উপরেই নির্ভর করছে কলকাতার শীতভাগ্য।

winter depression alipore weather office
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy