Advertisement
E-Paper

নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুন: হাঁসখালিকাণ্ডে তৃণমূল নেতার পুত্র-সহ ৩ জনের আমৃত্যু কারাদণ্ড, নেতার ৫ বছরের জেল

নদিয়ার হাঁসখালি গণধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় সোমবারই ৯ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল রানাঘাট আদালত। মঙ্গলবার তাঁদের শাস্তি ঘোষণা করলেন বিচারক।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৩:০৭
আদালতে হাজির করানো হচ্ছে দোষীদের। মঙ্গলবার রানাঘাট মহকুমা আদালতে।

আদালতে হাজির করানো হচ্ছে দোষীদের। মঙ্গলবার রানাঘাট মহকুমা আদালতে। —নিজস্ব চিত্র।

নদিয়ার হাঁসখালি গণধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় তৃণমূল নেতার পুত্র-সহ ৩ তিন জনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিল আদালত। এক জনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। নদিয়ার হাঁসখালি গণধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় সোমবারই ৯ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল রানাঘাট মহকুমা আদালত। মঙ্গলবার তাঁদের শাস্তি ঘোষণা করলেন বিচারক। রায় শুনেই কান্নায় ভেঙে পড়েন নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যেরা।

তৃণমূল নেতার পুত্র সোহেল ( ব্রজ) গয়ালি ছাড়াও আরও দুই দোষী সাব্যস্ত প্রভাকর পোদ্দার এবং রণজিৎ মল্লিককে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এই তিন জনের বিরুদ্ধেই গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সোহেলের পিতা তথা তৃণমূল নেতা সমরেন্দ্র গয়ালি, দীপ্ত গয়ালি এবং আরও এক জনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কাজে সহযোগিতা এবং প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ ছিল। প্রতিবেশী অংশুমান বাগচীর বিরুদ্ধে নির্যাতিতার পরিবারকে ভয় দেখানো, নাবালিকার দেহ শ্মশানে নিয়ে যেতে বাধ্য করা এবং সম্মিলিত ষড়যন্ত্রে শামিল হওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। সোমবার তাঁকেই দোষী সাব্যস্ত করেছিল আদালত। মঙ্গলবার তাঁকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক। দোষী সাব্যস্ত হওয়া দুই নাবালককে জামিন দিয়েছে আদালত। তবে তারা আগামী এক বছরের মধ্যে কোনও রকম অপরাধমূলক কাজে যুক্ত হলে রায় পুনর্বিবেচনা করবে আদালত।

নদিয়ার রানাঘাট পুলিশ জেলার হাঁসখালি থানা এলাকায় ২০২২ সালের ১০ এপ্রিল গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করা হয়। জানানো হয়, ৫ এপ্রিল স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের পুত্রের জন্মদিনের পার্টিতে নিমন্ত্রিত নাবালিকাকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। পঞ্চায়েত সদস্যের পুত্র এবং তাঁর কয়েক জন বন্ধু মিলে নাবালিকাকে গণধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। শুধু তা-ই নয়, রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যাওয়া হয়েছিল নির্যাতিতাকে। পরে তার মৃত্যু হলে প্রমাণ লোপাটের জন্য তাড়াতাড়ি দেহ সৎকার করা হয়। এই ঘটনা রাজ্য জুড়ে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল। নির্যাতিতার মা-বাবা হাঁসখালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। পরে পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে মামলা করেন হাই কোর্টে। সেখান থেকে ঘটনার তদন্তের ভার দেওয়া হয় সিবিআইকে। নির্যাতিতার পরিবারের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে পুলিশকে নির্দেশ দেয় আদালত। তার পর সিবিআই চার্জশিট জমা দেয়। সেই মামলায় ৯ জনকে দোষী সাবস্ত করেছিল রানাঘাট মহকুমা আদালত।

সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে সোহেল, প্রভাকর এবং রঞ্জিত ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০বি, ৩৪, ২০১, ৫০৬, ৩০৪ (২), ৩৭৬ ধারায় অভিযুক্ত। সেই সঙ্গে পকসো আইনের ৬ ধারায় মামলা হয়েছিল। সুরজিৎ এবং আকাশের বিরুদ্ধে ১২০বি, ৩৪, ৫০৬, ১২০বি এবং ৩৪ ধারায় মামলা রুজু হয়। সমরেন্দ্র, দীপ্ত এবং পীযূষকান্তি ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৬, ২০১, ১২০বি এবং ৩৪ ধারায় অভিযুক্ত। অংশুমানের বিরুদ্ধে ১২০বি, ৩৪ এবং ২০১ ধারায় মামলা দায়ের হয়।

রায় প্রসঙ্গে আসামী পক্ষের আইনজীবী রাজা ধর বলেন, “অভিযুক্তদের সক্ষমতার পরীক্ষা (পোটেন্সি টেস্ট) করানো হয়নি। সিবিআই তদন্তে একাধিক অসঙ্গতি আছে। আমরা উচ্চ আদালতে যাব।”

Hanskhali Rape and Murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy